বাংলাদেশ ব্যাংকের কারেন্সী মিউজিয়াম ‘টাকা জাদুঘরে’ রূপান্তর

    0
    1131

    আমার সিলেট ডেস্ক,৩১ আগস্ট : বাংলাদেশ ব্যাংকের কারেন্সী মিউজিয়াম বৃহৎ পরিসরে এবং পূর্ণাঙ্গ ‘টাকা জাদুঘরে’ রূপান্তর হতে যাচ্ছ। এ লক্ষ্য রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ ব্যাংক ট্রের্নিং একাডেমীর দ্বিতীয় তলার ৬ হাজার বর্গফুট আয়তনের একটি ফ্লোর ডিজিটালাইজড করে এর প্রস্তুতির কাজ পুরোদমে চলছে। সম্পূর্ণ ডিজিটালাইজড এ ‘টাকা জাদুঘর’ স্থাপনের কাজ আগামী মাসে শেষ হবে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আশা করছে। এর পাশাপাশি টাকা যাদুঘরকে ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে তুলে ধরারও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এতে যে কেউ ঘরে বসে ওয়েবসাইটে ঢুকে টাকা যাদুঘরে রক্ষিত প্রাচীন সব নোট, কয়েন বা বিনিময় দ্রব্যাদি সম্পর্কে জানতে পারবেন।
    কেন্দ্রী সূত্রে জানায়, এ মুদ্রা যাদুঘরে থাকবে অডিও গাইড। ফলে একটি মুদ্রার ছবির পাশাপাশি তার ইতিহাস, ঐতিহ্য, মেটাল সম্পর্কে সহজেই জানা যাবে। শিশুদের জন্য ‘বিশেষ এলাকা’ থাকবে যেখানে ভিডিও, গেমসের মাধ্যমে মুদ্রা সম্পর্কিত জ্ঞান দেয়া হবে। শিশুরা চাইলে নোটের মধ্যে তাদের ছবি যুক্ত করতে পারবে। প্রাচীন উয়ারী বটেশ্বর আমল থেকে শুরু করে বাংলার সুলতানী আমল, মুঘল আমল, বৃটিশ আমল এবং বর্তমান সময় পর্যন্ত সংগৃহীত মুদ্রা হবে টাকা জাদুঘরের প্রাণ। এসব প্রাচীন মুদ্রা সংগ্রহের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কয়েকবার পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে।

    ইতিমধ্যে সুলতানী আমল থেকে শুরু করে বৃটিশ শাসনামল পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মুদ্রা ক্রয় করা হয়েছে এবং সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ আগ্রহী হয়ে বিভিন্ন সময়ের মুদ্রা টাকা জাদুঘরে উপহার হিসেবে প্রদান করেছেন। যাদুঘরকে সমৃদ্ধ করতে বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন দেশ থেকেও দূর্লভ মুদ্রা কিনে আনছে।
    এ প্রসঙ্গে ‘টাকা যাদুঘর’ স্থাপনে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক দাশগুপ্ত অসীম কুমার এবিনিউজকে বলেন, সমৃদ্ধ যাদুঘর গড়তে বিশ্বের প্রায় ১০২টি দেশ থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মুদ্রা আমরা ইতিমধ্যে সংগ্রহ করেছি।

    আরো মুদ্রা সংগ্রহের কাজ অব্যাহতভাবে চলবে। পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কে›ন্দ্রীয় ব্যাংককেও আমরা চিঠি লিখবো তাদের মুদ্রা পাওয়ার জন্য। তবে এ যাদুঘরে মূলত ভারতবর্ষ বিশেষ করে বাংলাদেশের প্রাচীন কাল থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত যে সব নোট, কয়েন বা বিনিময় দ্রব্য ব্যবহৃত হয়েছে সে সব মুদ্রা বা দ্রব্য সংরক্ষণের ওপর বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান।
    অসীম কুমার বলেন, বর্তমান মিউজিয়ামটি বাংলাদেশ ব্যাংকের অভ্যন্তরে হওয়ায় জনসাধারণ এটি দেখার সুযোগ পাচ্ছে না। এজন্য মিউজিয়ামটি সরিয়ে এবং বড় পরিসরে নেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়। বর্তমান যাদুঘরে তিন হাজার বিভিন্ন মুদ্রা আছে। আগামী মাসে যাদুঘর স্থাপনের কাজ শেষ হবে বলে তিনি মনে করছেন। সেক্ষেত্রে সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে এটি চালু করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

    তিনি আরো জানান, জনসাধারণের কাছে প্রাচীন সব মুদ্রা আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করতে যাদুঘরে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। যাতে দূর্লভ এ সব মুদ্রা সম্পর্কে জনসাধারণ স্বচ্ছ ধারণা পেতে পারেন।
    কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ কর্মকর্তা বলেন, বিশ্বের সব মানুষের কাছে ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে টাকা যাদুঘরকে তুলে ধরারও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ফলে যে কেউ ঘরে বসে ওয়েবসাইটে ঢুকে টাকা যাদুঘরে রক্ষিত প্রাচীন সব নোট, কয়েন বা বিনিময় দ্রব্যাদি সম্পর্কে জানতে পারবেন।তিনি বলেন, টাকা জাদুঘরকে আধুনিক প্রযুক্তি সমর্থিত, সমৃদ্ধশালী, দৃষ্টিনন্দন এবং তথ্যসমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে ইতিমধ্যে প্রাচীন মুদ্রা সংগ্রহ, ডিজিটাল সাইনেজ, টাচস্ক্রীন কিয়স্ক, এলসিডি মনিটর ইত্যাদি স্থাপনের প্রক্রিয়া প্রায় শেষের পথে।