২ রানের হতাশা বরণ করতে হয়েছে টাইগাররদের

    1
    564

    আমারসিলেট24ডটকম,১২ফেব্রুয়ারী: টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের সেরা দলের গতিকদের। খেলার শেষ বলে ৩ রান প্রয়োজন থাকলেও আগের দুই বলে বাউন্ডারি হাঁকানো আনামুল কোমর বরাবর ফুলটসটি ব্যাটের মাঝখানে লাগাতে ব্যর্থ হন। ফলে রিটার্ন ক্যাচ লুফে নেবিরুদ্ধে কৃতিত্বপূর্ণ জয়ের দিকেই এগিয়ে যাচ্ছিলো টাইগাররা। কিন্তু খেলার গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে ব্যাট হাতে প্রয়োজনীয় ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হয়ে শেষ পর্যন্ত ২ রানের হতাশা বরণ করতে হয়েছে স্বান বোলার থিসারা পেরেরা।আম্পায়াররা বলটি নো বলের আওতায় ছিল কি না সে বিষয়ে সন্দিহান ছিলেন। কিন্তু টিভি আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত হতাশ করে দেশের ক্রিকেটানুরাগীদেরকে। বলটিকে নো বলের আওতায় ফেলা যেত বলেই অভিমত ক্রিকেট বোদ্ধাদের।

    জয়ের জন্য ১৬৯ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে বেশ চৎকার উদ্বোধনী জুটি উপহার দেন তামিম ও শামসুর জুটি। ৫২ রানের ওপেনিং জুটি উপহার দিয়ে ২২ রানে বিদায় নেন শামসুর। একটু পরেই দলীয় ৬৫ রানে ৩০ রান করে তামিম ইকবাল অনুসরন করেন সঙ্গীকে। এরপর অবশ্য ওয়ান ডাউনে নামা আনামুল ও অল রাউন্ডার সাকিব আল হাসান দলকে লক্ষ্যের দিকেই এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু ২৬ রানের ছোট অথচ কার্যকর ইনিংস খেলে সাকিব ও ১৬ রান করে নাসির বিদায় নিলে শঙ্কায় পরে যায় টাইগাররা। শেষ পর্যন্ত আনামুল উইকেটে থাকলেও কাজের কাজটি করতে পারেননি।্েনিংসের শেষ ৩ বলে ১১ রানের প্রয়োজন এমন অবস্থায় পর পর বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে সমর্থকদের উদ্বেলিত করে তুললেও শেষ বলে তিনি হতাশ করেন। ৪৫ বলে ৭ বাউন্ডারিতে ৫৮ রান করেন এই তরুণ ব্যাটসম্যান।

    সাকিব ১৭ বলে ২ চার ও ১ ছক্কায় ২৬ রান করে নুয়ান কুলাসেকেরার বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন। ১৩.৩ ওভারে দলীয় সংগ্রহ তখন ছিল ১০৭ রান। জয়ের জন্য বাংলাদেশের প্রয়োজন তখনও ৩৭ বলে ৬২ রান।৬৫ রানে লোকাল হিরো তামিম ইকবাল ফিরে গেলেও আনামুল হক বিজয়ের সঙ্গে জুটি বেঁধে ব্যবধান কমাচ্ছিলেন সাকিব। কিন্তু তাদের অগ্রযাত্রা থামান ব্যাট হাতে চমৎকার নৈপূণ্য দেখানো কুলাসেকেরা।

    লোকাল হিরো তামিম ইকবাল ইনিংসের ৮ম ওভারের শেষ বলে থিসারা পেরেরার বলে পুল করতে গিয়ে তামিম ডিপ মিড উইকেটে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজের তালুবন্দী হন। এ সময় তিনি ২৫ বল থেকে ৩০ রান সংগ্রহ করেন ৬ বাউন্ডারির সাহায্যে। দলীয় সংগ্রহ তখন ৮ ওভারে ৬৫ রান দুই উইকেটের বিনিময়ে।আগে মাত্র ৬ ওভারে ৫২ রানের আশা জাগানিয়া উদ্বোধনী জুটি উপহারের পর অজন্থা মেন্ডিসের শিকার হলেন শামসুর রহমান। ৭ম ওভারের প্রথম বলেই মেন্ডিসকে রিটার্ন ক্যাচ নিয়ে সাজঘরে ফেরেন ১৫ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ২২ রান করা শামসুর।

    ম্যাচের শুরু থেকেই চমকপ্রদ বোলিং এবং ফিল্ডিংয়ের অসাধারণ প্রদর্শনীতে টাইগাররা সফরকারী শ্রীলঙ্কাকে চেপে ধরলেও শেষ পর্যন্ত নুয়ান কুলাসেকেরার কার্যকর আক্রমণে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৬৮ রান করতে সক্ষম হয় অতিথিরা। ফলে বাংলাদেশকে এখন জেতার জন্য ১৬৯ রান করতে হবে।

    বুধবার চট্টগ্রামের জহুর আহম্মেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এ প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে এক উপভোগ্য লড়াই দেখার সুযোগ পায় ক্রিকেটপ্রেমীরা। খেলার প্রথম ওভারেই অধিনায়ক মাশরাফি বিপজ্জনক ব্যাটসম্যান তিলকারত্নে দিলশানকে খালি হাতে সাজঘরে ফেরান। তবে শ্রীলঙ্কার ব্যাটসম্যানরাও পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে খেলাটিকে উপভোগ্য করে তোলেন। বিশেষ করে ওপেনার কুশল সিলভা এক প্রান্তে চমৎকার খেলে দলকে খেলায় ধরে রাখেন। শেষ পর্যন্ত তিনি মাত্র ৪৪ বলে ৭ বাউন্ডারি এবং ১ ছক্কায় ৬৪ রানের চমকপ্রদ ইনিংস খেলেন।

    ইনিংসের শেষ প্রান্তে কোনঠাসা লঙ্কানদের লড়িয়ে পুঁজি এনে দেন পেসার নুয়ান কুলাসেকেরা। তিনি মাত্র ২১ বলে ১ চার ও ২ ছক্কায় ৩১ রান করে টাইগার দলপতি মাশরাফির বলে শামসুর রহমানের তালুবন্দী হন। ইনিংসের ১৫তম ওভারে অলরাউন্ডার অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির কারনে রান আউট হয়ে মাত্র ১১ রান করে সাজঘরে ফেরেন ম্যাথুজ। বাংলাদেশের অধিনায়ক মাশরাফি ৪ ওভারে ৪৩ রানে ২ উইকেট নেন। তবে নজর কাড়েন দলের অভিষিক্ত স্পিনার আরাফাত সানি।

    প্রথম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচেই আলো ছড়ান বাংলাদেশের তরুণ বাঁহাতি স্পিনার আরাফাত সানি। নিজের পঞ্চম বলেই উইকেট শিকার করা এ স্পিনার এবার ক্রমশঃ বিপজ্জনক হয়ে ওঠা ওপেনার কুশল পেরেরার গুরুত্বপূর্ণ উইকেটও শিকার করেন। শেষ পর্যন্ত তিনি ৩ ওভারে মাত্র ১৭ রানের খরচায় দুটি উইকেট নেন।

    এর আগে পর পর ওভারে জোড়া সাফল্য তুলে নেন সাকিব আল হাসান। প্রথমে লঙ্কান অধিনায়ক দিনেশ চান্দিমালকে ব্যক্তিগত ১৮ রানে ফরহাদ রেজার হাতে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন তিনি। এরপর টেস্ট সিরিজের সেরা ব্যাটসম্যান কুমার সাঙ্গাকারাকে মাত্র ১১ রানে মিড উইকেটে নাসির হোসেনের অসাধারণ ক্যাচের মাধ্যমে ফেরান তিনি। ৪ ওভার বোলিং করে মাত্র ২৭ রানে ২ উইকেট শিকার করেন বিশ্বসেরা এ অলরাউন্ডার।

    এর আগে বুধবার চট্টগ্রাম জহুর আহেম্মেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠেয় দিবা-রাত্রীর প্রথম টি-টোয়েন্টিতে টসে জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন  অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। বন্দর নগরী চট্টগ্রামের জহুর আহম্মেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শুরু হওয়া প্রথম টি-টোয়েন্টিতে টাইগার দলে অভিষেক হয়েছে  মোঃ মিথুন ও আরাফাত সানীর।

    সংক্ষিপ্ত স্কোর: শ্রীলঙ্কা ২০ ওভার ১৬৮/৭ (পেরেরা ৬৪, কুলাসেকেরা ৩১, খিসারা পেরেরা অপরাজিত ১৯, চান্দিমাল ১৮, সাঙ্গাকারা ১১, ম্যাথুজ ১১, সানি ২/১৭, সাকিব ২/২৭, মাশরাফি ২/৪৩)

    বাংলাদেশ টি-20 একাদশ: তামিম ইকবাল,আনামুল হক,শামসুর রহমান,সাকিব আল হাসান, নাসির হোসেন, মো:মিথুন, ফরহাদ রেজা, সোহাগ গাজী,আরাফাত সানী, মাশরাফি বিন মুর্তজা (অধিনায়ক) রুবেল হোসেন।

    শ্রীলঙ্কা টি-20 একাদশ: তিলকারত্নে দিলশান, কুশল পেরেরা, কুমার সাঙ্গাকারা, দিনেশ চান্দিমাল(অধিনায়ক),অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ, থিসারা পেরেরা, নুয়ান কুলাসেকেরা,সচিত্র সেনানায়েক, সেকুজি প্রসন্ন, অজন্থা মেন্ডিস, লাসিথ মালিঙ্গা।