হবিগঞ্জে দুর্ঘটনায় পিতার মৃত্যুতে এক শিশুর অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ

0
276
হবিগঞ্জে দুর্ঘটনায় পিতার মৃত্যুতে এক শিশুর অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ
হবিগঞ্জে দুর্ঘটনায় পিতার মৃত্যুতে এক শিশুর অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ

নূরুজ্জামান ফারুকী, বিশেষ প্রতিনিধিঃ হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ মহাসড়কে সড়ক দুর্ঘটনায় সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম পিতার মৃত্যু হওয়ায় কৃষ্ণ চন্দ্র দেব নামের এক কোমল শিশুর হৃদয়ে কঠিন বাস্তবতার পাথর চেপে বসেছে। শৈশবের চঞ্চলতা, চপলতা ও স্বপ্নময় জীবনে হঠাৎ নেমে এসেছে নিকস কালো অন্ধকার।

জানা যায়, পরিতোষ কসমেটিকস এর মালামাল ফেরি করে বিক্রি করতেন । গত ১১ই মার্চ রাত সাড়ে ১০টায় ঢাকা সিলেট মহাসড়কের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার উলুকান্দি এলাকায় ঢাকাগামী পাথরবোঝাই ট্রাক ও দুটি যাত্রীবাহী বাসের সাথে ত্রিমুখী সংঘর্ষে মারা যান কৃষ্ণ দেবের পিতা পরিতোষ চন্দ্র দেব। তিনি জেলার বাহুবল উপজেলার মিরপুর ইউনিয়নের স্বর্নরেখ গ্রামের পরেশ চন্দ্র দেব এর পুত্র। পরিতোষ চন্দ্র দেব এর স্ত্রী ও ছেলে নিয়ে সংসারে অভাব অনটন থাকলেও পরিতোষ এর একার উপার্জনে কষ্টে দিন চলে যেত। পরিতোষের ছেলে কৃষ্ণ চন্দ্র দেব (৯) স্থানীয় লামাতাশি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৪র্থ শ্রেনীতে পড়তো। দারিদ্রের কষাঘাতেও পরিতোষ ছেলেকে মানুষ করার স্বপ্ন দেখতেন।

কিন্তু বাস্তব খুবই নিষ্ঠুর-নির্মম। গত ১১মার্চ পরিতোষ মাধবপুরে কাজ শেষে রাতে মিরপুরের উদ্দেশ্যে শায়েস্তাগঞ্জে আসার পথে উলুকান্দি হাইওয়ে থানার সামনে – মহাসড়কের দুর্ঘটনায় নিহত হন । পরিতোষ এর মৃত্যু যেন তার দারিদ্র ক্লিষ্ট সংসারে সারা জীবনের কান্না নিয়ে এসেছে। স্বামীকে হারিয়ে পরিতোষের স্ত্রী লিপি রানী ধর দিশেহারা হয়ে পড়েন। একমাত্র ছেলেকে নিয়ে তিনি যেন অকূল পাথারে হারিয়ে যাচ্ছেন। বাবাকে হারিয়ে এ করুণ অবস্থায় স্ত্রী লিপি ও ছেলে কৃষ্ণ । লিপি রানী বলেন, অভাবের সংসার কাম-কাজ করার উপায় নাই। ছেলের লেখাপড়া অন্যদিকে সংসারের খরচ, জানি না সৃষ্টিকর্তা আমার ছেলের জীবনে কি রাখছেন । পিতা হারা সন্তানের ভবিষ্যত এখন অনিশ্চিত। স্বর্ণরেখ গ্রামের বাসিন্দা গোলাম মোস্তফা শইবাল বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় পরিতোষ চন্দ্র দেব মারা যাওয়ায় সংসারটি ভেসে যাওয়ার অবস্থা হয়েছে। তার ছেলে লেখাপড়া ছেড়ে দেয়ার উপক্রম, খুবই কষ্টে দিনাতিপাত করছে নিহতের নাবালক সন্তান সহ বিধবা স্ত্রী লিপি। হাইওয়ে থানার ওসি বলেন, সড়ক দুর্ঘটনাগুলো বহু লোকের জীবন সংসার ধ্বংস করে দেয়। এ জন্য সবারই সাবধান হয়ে চলা উচিত। এদিকে দুর্ঘটানায় নিহতর পরিবারের পাশে কেউ এগিয়ে আসেনি, মেলেনি কোন সাহায্যের প্রতিশ্রুতিও। বিত্তবানদেরকে সহযোগিতার পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকার ও বাংলাদেশ পরিবহন সমিতি কর্তৃক বিশেষ সহযোগিতা চায় নিহতের স্ত্রী ও সন্তান।