সৈকতে আটক সন্দেহভাজন কোরআন অবমাননাকারী ইকবাল কুমিল্লায়

0
551
সৈকতে আটক সন্দেহভাজন কোরআন অবমাননাকারী ইকবাল কুমিল্লায়

নূরুজ্জামান ফারুকী,বিশেষ প্রতিনিধিঃ কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্ট থেকে আটক যুবককে কুমিল্লায় নিয়ে এসেছে পুলিশ।শুক্রবার (২২ অক্টোবর ২০২১) দুপুরের দিকে কড়া নিরাপত্তায় তাকে কুমিল্লায় নিয়ে আসা হয়।

কুমিল্লার পুলিশ সুপার (এসপি) ফারুক আহমেদ গণমাধ্যমকে জানান, কক্সবাজারে আটক হওয়া ওই যুবকই কুমিল্লার ইকবাল হোসেন।

জেলা পুলিশ সূত্র জানায়, ইকবালকে দুপুরে জেলা পুলিশ লাইন্সে নিয়ে আসা হয়েছে। সেখানে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

এর আগে কক্সবাজার জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, কুমিল্লার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) রাতে সৈকত এলাকা থেকে ইকবাল হোসেনকে আটকের পর জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে রাখা হয়। ভোরে কুমিল্লা জেলা পুলিশের একটি দল কক্সবাজার পৌঁছালে তাকে তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সকাল সাড়ে ৬টার দিকে ইকবালকে নিয়ে কুমিল্লার উদ্দেশে রওয়ানা হয় পুলিশ।

এর আগে বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে সৈকতের সুগন্ধা এলাকা থেকে পুলিশ ইকবালকে আটক করে।

পুলিশের ধারণা, এই তরুণ কুমিল্লায় পবিত্র কোরআন শরীফ অবমাননাকারী সেই ইকবাল। তবে কুমিল্লা জেলা পুলিশ তার পরিচয় যাচাই-বাছাই করে বিষয়টি নিশ্চিত করবেন বলে জানান কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম।

প্রসঙ্গত, ১৩ অক্টোবর ভোরে দুর্গাপূজার মহা অষ্টমীর দিন কুমিল্লা শহরের নানুয়া দীঘির উত্তর পাড়ে একটি অস্থায়ী পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরীফ দেখা যায়। এরপর কোরআন শরীফ অবমাননার অভিযোগ তুলে ওই মণ্ডপে হামলা চালায় একদল দুর্বৃত্ত। এ সময় সেখানে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়।

এ ঘটনার জের ধরে ওই দিন চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে হিন্দুদের ওপর হামলা করতে যাওয়া একদল ব্যক্তির সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। সেখানে নিহত হন চারজন। পরের দিন নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে হিন্দুদের মন্দির, মণ্ডপ ও দোকানপাটে হামলা-ভাঙচুর চালানো হয়। সেখানে হামলায় দু’জন নিহত হন। এরপর রংপুরের পীরগঞ্জে পৃথক ধর্ম অবমাননার অভিযোগে হিন্দু বসতিতে হামলা করে ভাঙচুর, লুটপাট ও ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয় এতে ৪০ টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। দেশের আরও অনেক এলাকায় হিন্দুদের মন্দির, মণ্ডপসহ বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা চালানোর সংবাদ পাওয়া যায়।

এ সকল সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনায় এখন (২২ অক্টোবর ২০২১) পর্যন্ত সরকারি হিসেব অনুযায়ী হিন্দু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সহিংসতার অভিযোগে ২০,৬১৯ জনকে অভিযুক্ত করে মোট ১০২ টি মামলা দায়ের হয়েছে। এদের মধ্যে ৫৮৪ জনকে এ পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়েছে এবং অন্যদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।