আমার সিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২৯মার্চঃ সিলেটের শিববাড়ির আতিয়া মহলে শেষ হয়েছে সেনাবাহিনীর অভিযান।মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’-এর সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। একই সঙ্গে আতিয়া মহল হস্তান্তর করা হয়েছে পুলিশের কাছে।
২৮ মার্চ মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় সিলেটের জালালাবাদ সেনানিবাসে আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান সামরিক গোয়েন্দা পরিদপ্তরের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফখরুল আহসান।
এখন অভিযান শেষ হলেও ভবনটিতে আরো বিস্ফোরক থাকার সম্ভাবনা আছে বলে জানিয়েছেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফখরুল আহসান। এ কারণে ভবনটি এবং এর আশপাশের এলাকা এখনো ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানিয়েছেন তিনি।
অভিযানের শেষ দিনেও আতিয়া মহল থেকে ১০টির মতো বোমা ধ্বংস করা হয়েছে। যেহেতু এখন ভবনটির দায়িত্ব পুলিশের, এ কারণে এখন থেকে ভবনটিতে বোমা থাকলে তা উদ্ধার করা এবং নিষ্ক্রিয় করার দায়িত্ব পুলিশের বলে জানিয়েছেন তিনি।
অভিযানের ব্যাপারে ফখরুল আহসান বলেন- “অপারেশনের প্রথম পর্বটি ছিল সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ।” তিনি জানান- গত ২৫ মার্চ দুপুর ১টার মধ্যে ভবন থেকে ৩০ জন পুরুষ, ২৭ জন নারী ও ২১ জন শিশুসহ মোট ৭৮ জনকে নিরাপদে উদ্ধার করা হয়। তিনি বলেন- “নিচতলার উদ্ধার অভিযান ছিল সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। কমান্ডো সদস্যরা অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অভিনব পন্থা অবলম্বন করে সব বাসিন্দাকে নিরাপদে সরিয়ে আনে।”
ফখরুল আহসান আরো বলেন- ‘এরপর অভিযান দল তাদের দ্বিতীয় পর্বের তথা জঙ্গিদের নির্মূলের কার্যক্রম শুরু করে। এ পর্বে সেনাবহিনীর কমান্ডোদের পাশাপাশি স্লাইপার দল এপিসিসহ বিশেষায়িত অনেক সদস্য নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করেন। তিন দিন একটানা বিভিন্ন কৌশল প্রয়োগের মাধ্যমে সোমবার বিকেলের মধ্যে চারজন জঙ্গিকে নির্মূল করা হয়। মূলত গতকালই (সোমবার) অভিযান শেষ হয়।
তবে আরো বিশদ তল্লাশি ও নিশ্চিত হওয়ার জন্য মঙ্গলবার দিনটি ব্যবহার করা হয়। সোমবার দুটি মৃতদেহ বের করে পুলিশ প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। বাকি যে দুটি মৃতদেহ ছিল সেগুলো সুইসাইডাল ভেস্টসহ থাকায় অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ছিল।
নিরাপত্তা বিবেচনায় এবং পুলিশ প্রশাসনের পরামর্শে ঘটনাস্থলেই এগুলোর বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। বিস্ফোরণের আগে প্রয়োজনীয় ছবি ও ভিডিও সংগ্রহ করা হয়। সব কার্যক্রম শেষে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ভবনটি ক্রাইমসিন হিসেবে পুলিশ প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করা হয়।’
অভিযান পরিচালনায় পুলিশ, র্যাব, সোয়াট, ফায়ার সার্ভিস, বিভিন্ন সেবা প্রদানকারী সংস্থাসহ স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফখরুল আহসান।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন র্যাব ৯-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আলী হায়দার আজাদ আহমেদ, আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রাশেদুল হাসান ও সিলেট মহানগর পুলিশের কমিশনার গোলাম কিবরিয়া।