সিলেটের ১২টিতে আ’লীগ-৬ বিএনপি-৪ জামাত-২

    0
    212

    আমারসিলেট24ডটকম,২০ফেব্রুয়ারী,আব্দুল মজিদঃ দেশের চতুর্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম দফায় গতকাল বুধবার উৎসবমুখর পরিবেশে বৃহত্তর  সিলেট বিভাগের ১২টি উপজেলায় ভোটগ্রহণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বেসরকারি ফলাফল অনুযায়ী ১২ উপজেলার চেয়ারম্যান পদের ছয়টিতে আওয়ামী লীগ, চারটিতে বিএনপি ও দুটিতে জামায়াত সমর্থিত প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন।বুধবার রাতে সংশ্লিষ্ট উপজেলাগুলোর রিটার্নিং অফিসাররা বেসরকারিভাবে এই ফলাফল ঘোষণা করেন।সিলেট বিভাগের ১২ উপজেলায় মোট ভোটারসংখ্যা ১৭ লাখ ৫৮ হাজার চারশ’ জন। গতকাল অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কিছুটা কম ছিল।

    নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, সারা দেশে প্রথম দফায়  ৯৭ উপজেলার মধ্যে গতকাল সিলেট বিভাগে সিলেট জেলার ছয়টি, সুনামগঞ্জ জেলার তিনটি, মৌলভীবাজার জেলার একটি ও হবিগঞ্জ জেলার দুটি উপজেলাসহ মোট ১২টিতে উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

    বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বেসরকারি ফলাফল অনুযায়ী চেয়ারম্যান পদে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী সোহেল আহমদ চৌধুরী কাপ পিরিচ প্রতীকে ৩৩ হাজার ৩৪৪টি, ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী আহমেদ নূর উদ্দিন তালা প্রতীকে ২০ হাজার ২৩৫টি এবং মহিলা ভাইস চেয়রম্যান পদে স্বপ্না শাহিন প্রজাপতি প্রতীক নিয়ে ৩৪ হাজার ১৮টি ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। এই উপজেলায় ভোট পড়েছে ৫৯ শতাংশ।

    গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনে উপজেলা জামায়াতের আমীর ও নাগরিক কমিটি মনোনীত প্রার্থী হাফিজ নজমুল ইসলাম মাত্র ৭৬৭টি ভোটের ব্যবধানে চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করেছেন। তিনি ভোট পেয়েছেন মোটর সাইকেল প্রতীকে ২৪ হাজার ৩৬৯টি। ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান উদ্দিন মুরাদ বই প্রতীকে ২৭ হাজার ৯১১টি এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী অ্যাডভোকেট শাহানা হোসাইন কলস প্রতীকে ৬০ হাজার ৬৬৮টি ভোট পেয়ে ভোট পেয়ে জয়লাভ করেছেন। এই উপজেলায় ভোটের হার ছিল ৫০.৪৪ শতাংশ।

    জৈন্তাপুর উপজেলায় বিপুল ভোটের ব্যবধানে জামায়াতনেতা ১৯ দলীয় জোট সমর্থিত প্রার্থী ও উপজেলাটির সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ জয়নাল আবেদীন আবারও চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি দোয়াত-কলম প্রতীকে ২৩ হাজার ৬১টি ভোট পেয়েছেন। এছাড়া উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান পদে বশির উদ্দিন মাইক প্রতীকে ১৪ হাজার ৪৩১টি এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে জয়মতি রানী সেলাই মেশিন প্রতীকে ১৬ হাজার ৯৩২টি ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। জৈন্তাপুর উপজেলার ৩২টি কেন্দ্রের ফলাফল বুধবার রাত ১২টায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী রিটানিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম বেসরকারিভাবে ঘোষণা করেন।

    গোয়াইনঘাটে বর্তমান চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা আব্দুল হাকিম চৌধুরী আনারস প্রতীকে ৪৮ হাজার ২৪৬টি, ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিএনপিনেতা শাহ আলম স্বপন তালা প্রতীকে ২৪ হাজার ৮৮৯টি এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আফিয়া বেগম ফুটবল প্রতীকে ৫৭ হাজার ৭৮২টি ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন।

    কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আব্দুল বাছির আনারস প্রতীকে ২৫ হাজার ৩২০টি, ভাইস চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী শামছুল হক উড়োজাহাজ প্রতীকে ১৩ হাজার ৬৫৯টি এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী নাছরিন জাহান ফাতিমা ফুটবল মার্কায় ৩০ হাজার ৫০৫ টি ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে জয়ী হয়েছেন। শতকরা ৫৫ ভাগ ভোটার এই উপজেলা নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন।

    জকিগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী ইকবাল আহমদ মোটর সাইকেল প্রতীকে ২৭ হাজার ২৯৪টি, ভাইস চেয়ারম্যান পদে জামায়াতে ইসলামী সমর্থিত প্রার্থী গোলাম রব্বানী চৌধুরী ১৭ হাজার ৮৪১টি এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে হাঁস প্রতীক নিয়ে ৩৭ হাজার একশ’ ভোট পেয়ে ইয়াহিয়া বেগম বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।

    কুলাউড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আ স ম কামরুল ইসলাম চেয়ারম্যান কাপ-পিরিচ প্রতীকে ৪৬ হাজার একশটি’, ভাইস চেয়ারম্যান পদে তালামীয সমর্থিত প্রাথী ফজলুল হক খান বই প্রতীকে ৩০ হাজার ২৬৯টি এবং জাসদ নেত্রী নেহার বেগম ফুটবল প্রতীকে ৬৭ হাজার ৫৩১টি ভোট পেয়ে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন।দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আবুল কালাম আনারস প্রতীকে ২৮ হাজার ২০৬টি, ভাইস চেয়ারম্যান পদে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম সমর্থিত প্রার্থী মাওলানা তৈয়্যিবুর রহমান চশমা প্রতীকে ১৮ হাজার ৯৭৬টি এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে রুবিনা বেগম ফুটবল প্রতীকে ২০ হাজার ৯১৬টি ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। গতকাল বুধবার রাত সোয়া ১০টায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুর্শেদা জামান বেসরকারিভাবে তাদের বিজয়ী ঘোষণা করেন।

    ছাতকে আওয়ামী লীগ সমর্থিত অলিউর রহমান চৌধুরী বকুল কাপ-পিরিচ প্রতীকে ৩০ হাজার ৮২৩টি, ভাইস চেয়ারম্যান) পদে আবু সাদাত লাহিন টিউবওয়েল প্রতীকে ৩০ হাজার ৬৭০টি এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে নাসিমা আক্তার ছানা কলস প্রতীকে ৮৭ হাজার ৫৮১টি ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন।

    দোয়ারাবাজারে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী ইদ্রিস আলী মোটর সাইকেল প্রতীকে ২৭ হাজার ১০৫টি, ভাইস চেয়ারম্যান পদে রেণু মিয়া চশমা প্রতীকে ১০ হাজার ৯৫৪টি এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে সালেহা বেগম মিনা ফুটবল প্রতীকে ২৯ হাজার ৭৯০টি ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। এই উপজেলায় ভোট পড়েছে ৬১ শতাংশ।

    মাধবপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে উপজেলার তিন পদেই ১৯ দলের প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। উপজেলার ৯৩টি কেন্দ্রে ভোটের ফলাফল অনুযায়ী চেয়ারম্যান পদে উপজেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ মো. শাহজাহান আনারস প্রতীকে ৭৪ হাজার ৪৮১টি ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া উপজেলাটির ভাইস চেয়ারম্যান পদে পৌর বিএনপির সভাপতি আব্দুল আজিজ এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপজেলা বিএনপি নেত্রী অ্যাডভোকেট সুফিয়া আক্তার হেলেন জয়ী হয়েছেন।

    বাহুবল উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মোঃ আব্দুল হাই আনারস প্রতীকে ৬৩ হাজার ২৬৮টি, ভাইস চেয়ারম্যান পদে খেলাফত মজলিসের মাওলানা শিহাব উদ্দিন সাকিব উড়োজাহাজ প্রতীকে ১৩ হাজার ১৫৪টি এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিএনপির নাদিরা বেগম কলস প্রতীকে ৪১ হাজার ৫১২টি ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। এই উপজেলায় ভোট পড়েছে ৫৬ শতাংশ।