সিলেটের হাসপাতাল গুলোতে শয্যার অভাব,প্রাইভেটে অক্সিজেন সংকট

0
590
করোনায় আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসায় অক্সিজেন একটি গুরুত্ব পুর্ন বিষয়। সিলেটে প্রতিদিনই করোনায় শনাক্তের রেকর্ড ভাঙছে চাহিদা বাড়ছে অক্সিজেনের।
ফাইল ছবি

নুরুজ্জামান ফারুকী,বিশেষ প্রতিনিধিঃ করোনায় আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসায় অক্সিজেন একটি গুরুত্ব পুর্ন বিষয়। সিলেটে প্রতিদিনই করোনায় শনাক্তের রেকর্ড ভাঙছে চাহিদা বাড়ছে অক্সিজেনের। করোনার সংক্রমণ বাড়ায় হাসপাতালে বাড়ছে রোগীর সংখ্যাও। হাসপাতালের আইসিইউ শয্যা ফাঁকা নেই কয়েক সপ্তাহ ধরে, এবার সাধারণ শয্যায়ও সঙ্কট দেখা দিয়েছে। অনেক হাসপাতালে আগে থেকেই বুকিং দিয়ে রাখতে হচ্ছে আসন। ফাঁকা হওয়া মাত্রই তাতে উঠছেন রোগী।
না পাওয়ার সন্দেহে এবং সংক্রমণ বাড়ার কারণে চাহিদা বেড়েছে অক্সিজেনের। হাসপাতালগুলোর পাশাপাশি অনেকেই নিজের বাসায় অক্সিজেন নিয়ে রাখছেন। যে কারণে চাহিদা অনুসারে অক্সিজেন সরবরাহ সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন অক্সিজেন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টরা।
অপরদিকে ভুক্তভোগিরা অভিযোগ করছে প্রাইভেট হাসপাতালে অক্সিজেনের অভাব দেখিয়ে সিন্ডিকেট গুণছে মোটা অংকের টাকা।
সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে অক্সিজেনের সেন্ট্রাল লাইন রয়েছে। এ দুটি হাসপাতালে অক্সিজেনের সরবরাহও স্বাভাবিক রয়েছে। তবে বেসরকারি অনেক হাসপাতালই সিলিন্ডারের উপর নির্ভরশীল। এসব হাসপাতালে স্বাভাবিক সময়ের থেকে কয়েকগুণ বেড়েছে অক্সিজেনের চাহিদা। কিন্তু চাহিদার অর্ধেকও অক্সিজেন যথাসময়ে তারা পাচ্ছেন না। নগরের আম্বরখানার ফ্রিডম জেনারেল হাসপাতালের এমডি ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘গত শুক্রবার থেকে তারা কোন অক্সিজেন সিলিন্ডার পাচ্ছিলেন না। তাদের হাসপাতালে স্টকে থাকা অক্সিজেন শেষ হয়ে আসছিল, এজন্য তারা নতুন রোগীও ভর্তি নিচ্ছিলেন না। সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান লিন্ডের এজেন্টের কাছে খালি সিলিন্ডার পাঠানো ছিল, এর মধ্যে শনিবার (৩১ জুলাই ২০২১) দিবাগত রাত ১২টার দিকে তারা মাত্র দুটি সিলিন্ডার পেয়েছেন বলে জানালেন তিনি।’
হাসপাতাল ও ক্লিনিক ওনার্স এসোসিয়েশন সিলেটের সভাপতি ডা. নাসির হোসাইন জানান, ‘করোনা আক্রান্ত রোগীদের জন্য অক্সিজেন সাপোর্ট জরুরী। সংক্রমণ বাড়ার কারণে হাসপাতালে রোগী ভর্তি হচ্ছেন বেশি। এ কারণে অক্সিজেনের চাহিদা বেড়ে গেছে। তবে চাহিদার তুলনায় অর্ধেক অক্সিজেনও যথাসময়ে সরবরাহ পাচ্ছেন না তারা।’ অক্সিজেন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান লিন্ডের সিলেটের এজেন্ট আলী হোসেন জানান, ‘সিলেট থেকে যে চাহিদা পাঠানো হচ্ছে এর অর্ধেক সিলিন্ডার তারা পাচ্ছেন প্রতিদিন। প্রতিদিন ৫/৬ গাড়ী সিলিন্ডারের চাহিদা থাকলেও তারা পাচ্ছেন মাত্র দুই গাড়ি। এ কারণে সবার চাহিদা অর্ধেক সিলিন্ডার সরবরাহ করা হচ্ছে। তবে কেউ যাতে অক্সিজেন সংকটে না ভুগে সেদিকে তারা নজর দিচ্ছেন বলেও জানিয়েছেন।’ সিলেট বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. হিমাংশু লাল রায় ও পরিসংখ্যানবিদ মতিউর রহমান স্বাক্ষরিত কোভিট-১৯ কোয়ারেন্টিন ও আইসোলেশনের দৈনিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ৫০ জন করোনা পজিটিভ রোগী ভর্তি হয়েছেন। সবমিলিয়ে ভর্তি আছেন ৪০৫ জন। এর মধ্যে সিলেট জেলায় ২৮৬ জন, সুনামগঞ্জে ৬৭ জন, হবিগঞ্জে ৩০ জন ও মৌলভীবাজারে ২২ জন হাসপাতালে ভর্তি আছেন।’ প্রতিবেদন অনুসারে রোববার (১ আগস্ট ২০২১) সিলেট বিভাগের চার ল্যাবে ২৫৬৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে ৯৯৬ জনের করোনা পজিটিভ আসে। শনাক্তের হার ৩৮ দশমিক ৮২ শতাংশ। এ সময়ে মৃত্যু হয়েছে ৯ জনের, সুস্থ হয়েছেন ৩০৫ জন।
স্বাস্থ্য বিভাগ সিলেটের সহকারী পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ডা. নুরে আলম শামীম জানান, সিলেটে প্রতিদিন শনাক্তের সংখ্যা বাড়ছে। এ কারণে হাসপাতাল গুলোতেও রোগীর চাপ রয়েছে। অক্সিজেনের চাহিদাও বেশি, তবে সরকারি হাসপাতালে কোন অক্সিজেন সঙ্কট নেই।