সামাজিক সংস্কৃতি অর্থনৈতি ও রাজনৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয় পরিশোদ্ধ হউক

0
334

চৌধুরী নীহারেন্দু হোম সজলঃ আমাদের জাতীয় জীবনে সর্বক্ষেত্রে পরিশুদ্ধ রাজনৈতিক সংস্কৃতির অভাবে মানবিক মূল্যবোধের অবক্ষয়ে নেতৃত্ব শূন্যতা সহ নানা মহাসঙ্কট দেখা দিয়েছে।
এ সকল সমস্যা উত্তোরনে প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল গুলোর ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্ঠায় তরুণদের সহায়তায় তার একটা গুণগত পরিবর্তন আনয়ন করা সম্ভব হতে পারে।

আমরা এখন অনেকেই সৎ পথে চলি না, সোজা কথা বলি না, কথা দিয়ে কথা রাখি না, কারো ভালো কথা শুনতেও রাজি না।
গুরু বাকা শুনেনা শিষ্য, পুত্র প্রতিপালন করে না, পিতা মাতাকে, ভ্রম বশত শ্বাশুরী বউ এর হয় দ্বন্ধ, যার জন্য সমাজের প্রতিটি পরিবারের মূল্যবোধের চরম অবক্ষয় চলমান,এসব থেকে উত্তোরনের একান্ত প্রয়োজন।
রাজনীতি এখন কিছু সংখ্যক অ-সাধু ব্যবসায়ীদের হাতে। উন্নত তথ্য প্রযুক্তির যুগেও “রাজনীতি” দুই ভাগে বিভক্ত। এক দিকে শোষক, ওপর দিকে শোষিত। এ বৈষম্য হীনতার পরিবর্তন আজও হয়নি। এই রাজনীতি আমাদের দেশ সহ গোঠা দুনিয়ায় এখনও চলমান।
সবকিছু মিলে রাজনীতি রাজনীতিবিদদের হাতে নেই। রাজনীতির এখন ভয়াবহ ক্রান্তিকাল চলছে। এমনতর কথা গুলো এখন অনেকেই বলতে চায় না।
এই অবস্থার পরিবর্তন অপরিহার্য্য হয়ে পড়েছে। আমরা এও বিশ্বাস করি যুগে যুগে তার পরিবর্তন হয়ে আসছে এখন ও তার পরিবর্তন হবেই হবে।
মুক্তিযুদ্ধের নিয়ামক শক্তি ক্ষমতায় থাকা কালিন সময়েও থেমে নেই অশুভ শক্তির অপ-তৎপরতা।
সুযোগ বুঝেই তারা দেশের সাধারন মানুষের মধ্যে বিরাজমান সম্প্রীতির বিভাজন সৃষ্টি করে ব্যক্তি স্বার্থ হাসিল করছে।
এদের অপতৎপরতা চীরতরে নির্মূল করতে হবে।
অসাম্প্রদায়িক, বৈষম্যহীন, গণতান্ত্রিক পথ ধরে আজকের সামাজিক, সংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও মূল্যবোধের অবক্ষয় বিপর্জয় থেকে দেশ ও জাতিকে রক্ষা করতে হবে।
এ বিষয়ে প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল গুলোকে এক সাথে এদের মোকাবিলা করার বিকল্প নাই।
গণতন্ত্র ও অসাম্প্রদায়িকতার বিরুধীরা ঘাপটি মেরে বসে আছে। যখনই সুযোগ পাবে তারা তখনই ছোবল মারবে। তার জন্য আমাদেরকে সতর্কতা অবলম্বন করে জনমনে মহাজাগরন সৃষ্টি করতে হবে। আমাদের আর্থ-সামাজিক মুক্তির জন্য বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদ, সকল ধর্ম-বর্ণের নারী পুরুষের সমঅধিকার ও গণতন্ত্র, ন্যায় বিচার, আইনের শাষন,মানবাধিকার, সততা, জবাবদিহীতা, আইন, বিচার ও নির্বাহী বিভাগের পৃথগায়ন, মানবিক মূল্যবোধের অবক্ষয়, অপ-ব্যবহার রোধ কল্পে জাতীয় জীবনে শুদ্ধাচার প্রচলনের কোন বিকল্প হতে পারে না।
স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতৃত্ব দানকারি দল এক নাগারে দীর্ঘ দিন ক্ষমতায় থাকা কালেও প্রগতিশীল যে কোন রাজনৈতিক দল বা জোটকে প্রধান বিরুধীদলে রুপান্তর করার আবশ্যকতা আজও অনুধাবন করে ওঠতে পারেনি ।
যার ফলে, হতাশা, অবিশ্বাস আর নিরাপত্তার অশনি সংকেত জনমনে ছায়া ফেলেছে। আমরা যারা “প্রগতিশীল” সুস্থ্য ধারার রাজনীতি করার চেষ্টা করি তারা সকলেই এ সকল বিষয় নিয়ে উদ্বেগে থাকতে হয়। দীর্ঘদিন যাবৎ দুনিয়া জুরে ভয়াবহ বৈশ্বয়িক মহামারী করোনা সংক্রমণের কারনে, রাজনীতি পুরোপুরি স্থবির হয়ে পড়েছিল।
এ স্থবিরতা কাঠিয়ে ওঠার আগেই নতুন করে সাম্রাজ্যবাদিরা দেশে দেশে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলায় মেতে উঠায় মহাবিপর্যয়ের আশংঙ্খা করছেন বিশ্ববাসী।
আমাদের দেশীয় জাতীয় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রতিটি রাজনৈতিক দল সাংগঠনিক কাজের মধ্যদিয়ে “রাজনৈতিক মাঠ” আংশিক ভাবে হলেও সরব করে তুলার পূর্বাভাস লক্ষণীয়, যা নির্বাচন উপলক্ষে তার পূর্ণাঙ্গতা লাভ করতে পারে। তবে এ নির্বাচন পদ্ধতির একটা গুনগত পরিবর্তন ছাড়া, নির্বাচনটি আদৌ সুষ্ঠ হবে কি না বা হলেও গ্রহনযোগ্যতা নিয়ে যথেষ্ঠ সংশয় থেকে যায় না ?
জাতীয় শোদ্ধাচার কৌশল পত্র থাকলেও তা বার বার বাধাগ্রস্থ হচ্ছে, দেশের যতই উন্নয়ন হোক না কেন দেশপ্রেমের উন্নয়নে তার প্রতিফলন দৃশ্যমান নয়। “রাজনীতিবিদরা” রাজনীতির সঠিক পথের সন্ধান জনসমক্ষে উপস্থাপন না করে, মেকি পদ্ধতির সস্তা মূলা ঝুলিয়ে এ জনগোষ্ঠিকে দৈত-ভাবে শাসন ও শোষন করছেন।
ওপর দিকে যারা আপামর জনসাধারনে সঠিক রাজনৈতিক পথের সন্ধান দিয়ে আলোর পথ দেখাতে চায়, তাদের বিরুদ্বে ঐ সব সুযোগসন্ধানী-সুবিধাবাদিরা বিভ্রান্তি ছরিয়ে দেশবাসীকে মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন গুনাবলির রাজনীতিকে সমাদরে গ্রহণ করতে দিচ্ছে না।
যার জন্যে আজও দেশে বিদেশে, দিক স্রষ্ঠ-অপ-রাজনৈতির কু-প্রভাব পরেছে।

জাতীয় আন্তর্জাতিক সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষন অনুধাবন বিচার বিশ্লেষন ও পর্যালোচানায় দেখতে পাওয়া যায়, ঘোষ, দুর্নীতি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস পত্রের দাম দফায় দফায় বাড়ানোর কারনে, সাধারন মানুষের চরম দূর্ভোগ দেখা দিয়েছে, এখানে শাসক গোষ্ঠি নির্বিকার।
সাধারণ মানুষ মনে করেন,শুধুমাত্র মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্যদিয়ে তারা রাজনৈতিক স্বাধীনতা লাভ করেছেন মাত্র।
সুদীর্ঘ একান্ন বছরেও তারা তাদের আর্থ-সামাজিক মুক্তিসহ-পূঞ্জিভূত নানা সমস্যার সমাধান আজও পাননি।
এ সকল কারণে তারা আশাবাদি, একটা প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক জোট (বিরোধীদল) গঠনের আবশ্যকতার কথা ব্যক্ত করছেন।
সে জন্য আমাদের জ্ঞানের বাতি জ্বালাতে হবে। নিজেদের দোষ স্বীকার করে সততার সাথে স্বক্ষমতার শক্তিকে সুদৃঢ় করতে পারলে সকল অসম্ভবকে সম্ভব করা সময়ের ব্যাপার মাত্র।

আপনারা আমরা সকলেই আশাবাদি মানুষ। এ সুদূর প্রসারী স্বপ্ন সফলতার মুখ দেখাতে ও পুঞ্জিভূত মহাসংকট থেকে মুক্তি দিতে পারে আজকের তরুণ প্রজন্মের মেধাবী তরুণ তরুণীরা।
রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক সামাজিক সংস্কৃতির অবক্ষয় রোধে, নেতৃত্ব শূন্যতা পুরনে, শুধুমাত্র অর্থকে প্রাধান্য দিয়ে নয়, বরং নীতি নৈতিকতা ও অটল আদর্শে বলীয়ান হয়ে চলমান অসুস্থ অপ-রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে পরাভূত করে পরিশোদ্ধ রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে পুনরুদ্ধার করতে পারে।
আমরা বিশ্বাস করি তরুণদের এ ব্যাপারে সার্বিক ভাবে কাজে লাগালে তা প্রজন্মের পর প্রজন্ম এ অগ্রযাত্রায় অপ্রতিরোধ্য ও অপরাজেয় হয়ে থাকবে। আমাদের প্রত্যাশ, অপ রাজনৈতিক সংস্কৃতি নিপাত যাক, পরিশোদ্ধ রাজনৈতি সংস্কৃতি মুক্তি পাক। সূত্র দৈনিক খোলা চিঠি।

লেখকঃ চৌধুরী নীহারেন্দু হোম সজল
সিনিয়র সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদ।

শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি,দৈনিক জনকন্ঠ পত্রিকা।