শ্রীমঙ্গলে মেম্বার দয়াল বুনার্জি ও ছেলে কর্তৃক অনুদানের কার্ড ৩শ টাকায় বিক্রির অভিযোগ

0
378

নূর মোহাম্মদ সাগর, শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধিঃ সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় চা-শ্রমিকের জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচি’র অন্তর্গত এককালিন নগদ অর্থ সহায়তার কার্ড বিতরণে শ্রমিকদের কাছ থেকে প্রতি কার্ডেরবিপরীতে ৩০০ শত টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি সদস্য ও তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৭ টার দিকে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার কালীঘাট ইউপির খাইছড়া চা বাগানের নাট মন্দিরে ভুক্তভোগী চা শ্রমিকরা জড়ো হয়ে ইউপি সদস্য দয়াল বুনার্জী ও তার ছেলে মনি শংকর বুনার্জীর বিরুদ্ধে বাড়তি টাকা নেওয়ার অভিযোগ এনে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন।
অভিযুক্ত দয়াল বুনার্জী উপজেলার কালীঘাট ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য।
সমাবেশে কয়েকজন চা শ্রমিক বলেন, “দয়াল মেম্বারের ছেলে আমাদেরকে বলে আইডি কার্ড যে দিছো টাকার জন্য,সরকার থেকে তোমাদের টাকা আইছে জন প্রতি ৫ হাজার টাকা। এখন ৩০০ টাকা দেও, আমি কার্ড দিচ্ছি। তখন আমরা বলি যে, ৩০০ টাকা কই পামু ? তখন মেম্বারের ছেলে (মনি শংকর) বলে, টাকা না দিলে তোমরা মেম্বারের কাছে যাইবা। আর ৩০০ টাকা নিয়ে যাইবা। পরে ৩০০ টাকা দেওয়ার পর আমাদেরকে কার্ড দিছে। টাকা না দিলে কার্ড দেবে না তাই বাধ্য হয়ে ৩০০ টাকা দিয়ে কার্ড নিয়েছি।”
সমাবেশে খাইছড়া চা বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি পুস্প দাশ পানিকা বলেন, ‘দুইদিন আগে সমাজসেবা থেকে কার্ড আসার পর চেয়ারম্যান কার্ড পাঠাইছে মেম্বারের কাছে। চেয়ারম্যান মেম্বারকে বলছে পঞ্চায়েত সভাপতি ও সর্দারকে দিয়ে তুমি কার্ড বিতরণ করবে। কিন্তু মেম্বার দয়াল বুনার্জী আমাদেরকে বলে নাই। সন্ধ্যার পর মেম্বার আমাকে রাস্তায় পেয়ে জানায় যে, সরকার থেকে শ্রমিকদের এককালিন ৫ হাজার টাকার কার্ড আসছে, আমি বিতরণ করছি। কিন্তু বিতরণের পর জানতে পেরেছি, যে কার্ড দিয়ে শ্রমিকদের কাছ থেকে ৩০০ টাকা করে বাড়তি টাকা নিচ্ছে দয়াল মেম্বারের ছেলে মনিশংকর বুনার্জী। কার্ড নেও টাকা দেও, টাকা না দিলে কার্ড দেব না। ৫ হাজার টাকা পাওয়ার আগে যে সে ৩০০ টাকা করে নিচ্ছে এর কারণটা বুঝতে চাই?”
তবে টাকা নেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য দয়াল বুনার্জী বলেন, “আমি সব ছেলেদেরকে ডেকে জানতে চেয়েছি তারা কেনো টাকা নিছে, তখন তারা বলছে মন্দিরের জন্য নিছে। কার্ড দিয়ে টাকা নেওয়ার কোন যুক্তি নেই। আমি বাগানের মুরুব্বি ও পঞ্চায়েত কমিটিকে নিয়ে বসবো, ছেলেগুলা যে টাকা উত্তোলন করেছে তার একটা সঠিক সমাধান করবো।”
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলী রাজিব মাহমুদ মিঠুন বলেন, “চা শ্রমিকের জীবনমান উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে উপহারসরুপ এই টাকা দেওয়া হচ্ছে। এই ৫ হাজার টাকা চা শ্রমিকদের জন্য বিশাল টাকা। এই টাকা বিতরণের ক্ষেত্রে যদি কার্ডের জন্য টাকা নেওয়া হয় তাহলে এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোরতম আইনানু ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।”
উল্লেখ্য সরকারি বিভিন্ন সহায়তার বিপরীতে মধ্যস্বত্বভোগীরা এরকম অসহায় লোকদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি করে যাচ্ছে বলে আরো অভিযোগ রয়েছে।স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি সচেতন নাগরিকদের কামনা, সরকারের যে কোন প্রকার সহায়তায় যদি মধ্যস্বত্বভোগীরা অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে এবং অনৈতিক সুবিধা নেই তাহলে সুনাম এর জায়গায় বদনাম হয়। বিষয়টির দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।