মিনহাজ তানভীরঃ করোনা ভাইরাস মহামারির মধ্যে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলে এবারও ভিন্ন এক পরিবেশে উদযাপিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল আদ্বহা। করোনা মহামারী মোকাবিলায় ও সংক্রমণ বিস্তার রোধে ঈদুল ফিতরের মতো এই ঈদেও সরকারের নির্দেশনায় স্বাস্থ্য বিধি মেনে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শ্রীমাঙ্গল জামে মসজিদে ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল পৌনে ৭টায়। এরপর সকাল পৌনে ৮টায়। এই মসজিদে মোট ২টি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। করোনা মহামারির কারণে এবারও শহরের শাহী ঈদগাহে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়নি। তবে উপজেলার অন্যান্য মসজিদে ও স্বাস্থ্য বিধি মেনে ঈদের জামাত বড় কোন অঘটন ছাড়া-ই নির্বিগ্নে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
করোনা মহামারির মধ্যে এবারের ঈদের নামাজ শেষে মুসল্লিরা মোনাজাতে অংশ নেন। বিশ্বের ও মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনার পাশাপাশি এবার মোনাজাতে করোনা থেকে মুক্তির জন্য আল্লাহর দরবারে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
মোনাজাতে করোনা মহামারি থেকে মুক্ত করে বাংলাদেশসহ পুরো বিশ্বে স্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য মহান আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। এ সময় ‘আমিন আমিন’ ধ্বনিতে মুখরিত হয় মসজিদ গুলো।
জামাতে স্থানীয় মুসুল্লিদের সাথে অংশ নেন স্থানীয় সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্জ উপাধ্যক্ষ ড. মোঃ আব্দুস শহীদ, এ সময় জামাতে আরও উপস্থিত ছিলেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম, মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ সৈয়দ মনসুরুল হক, শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ মো.আব্দুছ ছালেক দুলালসহ শহরের বিভিন্ন রাজনৈতিক ও ধর্মিয় নেতৃবৃন্দ ও সাংবাদিক বৃন্দ। এ ছাড়াও উপজেলার অন্যান্য গুরুত্ব পুর্ন নেতৃবৃন্দ নিজ নিজ এলাকার মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করেন।
এদিকে, সকাল থেকে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলসহ সারা দেশের মসজিদে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ঈদুল আদ্বহার জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। এরপর শুরু হয়েছে পশু কোরবানি। আল্লাহকে খুশি করতে পশু কোরবানি দেওয়া হচ্ছে গ্রামে শহরের বিভিন্ন বাসা বাড়িতে ও নির্জন স্থানে।
এবারও সরকারের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদের জামাতে অংশ নেওয়া ও উদ্যাপনের জন্য বলা হয়েছে। মসজিদে মসজিদে দূরত্ব মেনেই নামাজে অংশ নিয়েছেন মানুষ। অনেকের মুখেই মাস্ক ছিল। আবার মাস্ক পরেননি-এমন মানুষের সংখ্যাও নেহাত কম নয়। তবে নামাজের পর কোলাকুলি করতে তেমন দেখা যায়নি। কেউ কেউ হাত মিলিয়ে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন।
প্রসঙ্গত প্রায় চার হাজার বছর আগে আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টি লাভের জন্য হযরত ইব্রাহিম (আ.) নিজ পুত্র হজরত ইসমাইল (আ.)কে কোরবানি করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু পরম করুণাময়ের অপার কুদরতে হজরত ইসমাইল (আ.)এর পরিবর্তে একটি দুম্বা কোরবানি হয়ে যায়। হযরত ইব্রাহিম (আ.)-এর ত্যাগের মহিমার কথা স্মরণ করে বিশ্বব্যাপী মুসলমানরা জিলহজ মাসের ১০ তারিখে আল্লাহ্ পাকের অনুগ্রহ লাভের আশায় পশু কোরবানি করে থাকেন।