লাউয়াছড়া উদ্যানে আগুন,তদন্ত কমিটি গঠন

0
726
লাউয়াছড়া উদ্যানে আগুন,তদন্ত কমিটি গঠন
লাউয়াছড়া উদ্যানে আগুন,তদন্ত কমিটি গঠন

কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান সংলগ্ন বনে হঠাৎ করে সৃষ্ট অগ্নিকান্ডে প্রায় দেড় একর বন পুড়েছে। জানা গেছে এই ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে। অগ্নি কাণ্ডে বন এলাকার ছোট-বড় লতা-গুল্ম ও গাছ ও নানা প্রকারের বন্য পোকা মাকড় পুড়ে যাওয়ায় জীববৈচিত্র্যের জন্য হুমকির দেখা দিয়েছে। শনিবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের বেসকারী উন্নয়ন সংস্থা হীড বাংলাদেশ সংলগ্ন বাঘমারা বন ক্যাম্পের পাশে এ অগ্নি কাণ্ডের ঘটনা ঘটে । গুরুত্বপূর্ণ এই বনে কমপক্ষে প্রায় পৌনে ৪ ঘণ্টা ধরে আগুন জ্বললেও দুপুর পৌনে ৪টায় তা নিয়ন্ত্রণে আনে বলে জানান ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। তবে সরেজমিনে ফায়ার সার্ভিসের অভিযানের পরেও ভিন্ন ভিন্ন স্থানে আগুন জলতে দেখা যায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রখর রোদে লাউয়াছড়ার স্টুডেন্ট ডরমেটরি অংশে গাছ রোপনের জন্য কাজ করছিলেন বন বিভাগের কিছু শ্রমিক। সেখানে হঠাৎ আগুন জ্বলে উঠে। খবর পেয়ে বন বিভাগ ও কমলগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের লোকজন ঘটনাস্থলে এসে প্রায় পৌনে তিন ঘন্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে পানি স্বল্পতা ও বনের ভেতরে রাস্তা না থাকায় ভেতরে ঢুকতে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনতে সময় লাগছিল। আগুনে বড় কোন গাছ পুড়তে দেখা না গেলেও বনের লতা-গুল্ম, ছোট ছোট গাছ গাছালি পুড়ে গেছে। এতে বন্যপ্রাণীর ব্যাপক আবাসস্থল বিনষ্ট হয়ে গেছে এবং জীববৈচিত্র্যের মারাক্তক ক্ষতি বয়ে এনেছে। তবে আগুন লাগার সুনির্দিষ্ট কোন কারন জানা না গেলেও ধারণা করা হচ্ছে, কর্মরত শ্রমিকদের সিগারেট থেকে কিংবা স্থানীয়ভাবে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে কিন্তু এই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে ভিন্ন ভিন্ন স্থানে আলাদা আলাদা ভাবে আগুনের সূত্রপাত রহস্যজনক। বন্যপ্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ সুত্রে আগুন লাগার বিষয়ে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান।

সরেজমিনে ফায়ার সার্ভিসের অভিযানের পরেও ভিন্ন ভিন্ন স্থানে আগুন জলতে দেখা যায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, আগুন দ্রুত সময়ের মধ্যে নিয়ন্ত্রণে না এলে তা লাউয়াছড়ার জীববৈচিত্র্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হবে। স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, এখানে কিছু অবৈধ দখলদার আছেন। ধারণা করা হচ্ছে, প্রচণ্ড খরতাপের সুযোগ কাজে লাগিয়ে এসব অবৈধ দখলদারেরাই আগুন লাগাতে পারেন। দেড় বছর আগেও এই বনে আগুন লেগেছিল জানান স্থানীয়রা।

ফায়ার সার্ভিস কমলগঞ্জের ইনচার্জ ফারুকুল ইসলাম জানান, গাছগাছালি পুড়ে প্রায় লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হবে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার কারণে প্রায় ৩০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা পায়।   লাউয়াছড়ার রেঞ্জ কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, তদন্ত করা হচ্ছে কী কারণে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। তবে আগুন নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে।

এ বিষয়ে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ফায়ার সার্ভিস ও বনকর্মীরা যৌথভাবে বনের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। তবে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে কেউ ইচ্ছাকৃতভাবেও আগুন লাগাতে পারে অথবা কর্মরত শ্রমিকদের সিগারেটের আগুন থেকেও আগুনের সূত্রপাত হতে পারে। প্রায় দেড় একর জায়গার লতা-পাতা ও ছোট ছোট গাছগাছালি পুড়ে গেলেও বড় কোন গাছ পুড়েনি। তবে অগ্নিকান্ডের সঠিক কারণ উদঘাটন করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।