রোহিঙ্গা সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের ১২ সিনেটর কর্তৃক পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি

0
1154
রোহিঙ্গা সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের ১২ সিনেটর কর্তৃক পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি

আমার সিলেট ডেস্কঃ বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা প্রদান ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ১২ সিনেটর। সম্প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনকে লেখা এক চিঠিতে তারা এ আহ্বান জানান। গত ৯ নভেম্বর সিনেটর মার্ক রুবিওর ওয়েবসাইটে এই চিঠি পাঠানোর তথ্য প্রকাশ করা হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত ৫ নভেম্বর এই ১২ জন সিনেটর চিঠিটি লেখেন। তারা হলেন- ডেমোক্র্যাট দলের মার্কো রুবিও, বেন কার্ডিন, ডিক ডারবিন, ক্রিস কুন্স, রন ওয়াইডেন, ক্রিস ভ্যান হলেন, এড মার্কি, করি বুকার ও এলিজাবেথ ওয়ারেন এবং রিপাবলিকান দলের জেফ মার্কলে, সুজান কলিন্স ও রজার উইকার।

চিঠিতে বলা হয়, মিয়ানমারের রাখাইনে নিজেদের আদি ভূমিতে প্রত্যাবাসনের পূর্ব পর্যন্ত দশ লাখের বেশি রোহিঙ্গার সুরক্ষার বোঝা দুভার্গ্যজনকভাবে বাংলাদেশকে বহন করতে হচ্ছে। ২০১৭ সালের পর থেকে এ রোহিঙ্গাদের প্রতি দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনে বাংলাদেশের ভূমিকা প্রশংসনীয়। এ ছাড়া কভিড-১৯ মহামারির সময়ে রোহিঙ্গাদের সুরক্ষায় বাংলাদেশ সরকারের পদক্ষেপও প্রশংসার দাবি রাখে।

তবে চিঠিতে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরের বিষয়ে কিছু পর্যবেক্ষণ ও বক্তব্য তুলে ধরে বলা হয়েছে, কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তা কার্যক্রম, শিক্ষা কার্যক্রম, জীবিকার সুযোগ সীমিত হওয়া ও ভাসানচরে স্থানান্তরের ক্ষেত্রে বল প্রয়োগের মতো বিষয়গুলোতে সিনেটররা উদ্বিগ্ন। বিশেষ করে ভাসানচর থেকে রোহিঙ্গাদের পালিয়ে যাওয়া এবং পরে তাদের আবার সেখানে ফিরিয়ে আনার খবর অত্যন্ত উদ্বেগজনক।

রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরের বিষয়টি তাদের সম্মতিতে করার আহ্বান জানিয়ে ১২ সিনেটর ভাসানচর বসবাসের উপযোগী কি না, তা নিয়ে একটি সমন্বিত কারিগরি সমীক্ষার সুযোগ দেওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, কভিড-১৯ পরিস্থিতির উন্নতির পরও কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মানবিক সহায়তা কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকদের ওপর আরোপিত বিধিনিষেধ চলমান থাকার বিষয়টিও উদ্বেগের সৃষ্টি করে।

এ ছাড়া রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য ক্যাম্পে মানবিক সহায়তা কর্মীদের আরও অনুকূল প্রবেশের সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে চিঠিতে। একই সঙ্গে নিরাপত্তার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে চিঠিতে বলা হয়েছে, কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পাশাপাশি একটি জঙ্গিগোষ্ঠীর তৎপরতার কারণে নারীসহ রোহিঙ্গারা যথেষ্ট নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। বিশেষ করে রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা গভীর উদ্বেগজনক উল্লেখ করে তারা এই হত্যার ঘটনার বিষয়ে স্বচ্ছ তদন্ত দাবি করেছেন।

চিঠিতে মার্কিন সিনেটররা আরও লিখেছেন, রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে বাংলাদেশের জন্য পর্যাপ্ত আন্তর্জাতিক সহায়তা এবং কক্সবাজারের আশ্রিত রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে সহায়তায় সমর্থন আদায়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা। এ ছাড়া রোহিঙ্গাদের তৃতীয় দেশে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা, রাখাইন রাজ্যে সংকটের মূল কারণ ও নৃশংসতার জন্য মিয়ানমারকে জবাবদিহির আওতায় আনা এবং মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের বিষয়ে জোরালো ব্যবস্থা নিতেও যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানাতে উদ্যোগী হওয়ার কথা উল্লেখ করেছেন তারা।