যথাসময়েই নির্বাচনঃওয়ার্কিং কমিটির সিদ্ধান্ত

    0
    228

    আমারসিলেট24ডটকম,০ডিসেম্বরঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নির্বাচনকালীন সরকারে প্রধান রেখে যথা সময়েই আসন্ন দশম জাতীয় সংসদ ২০০১৪ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছে আওয়ামী লীগ। আজ বুধবার বিকেলে গণভবনে দলটির কেন্দ্রীয় ওয়ার্কিং কমিটির এক জরুরি বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। নির্দলীয় সরকার প্রতিষ্ঠা এবং প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে বিরোধী দলীয় জোটের অবরোধের মধ্যে আজ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছে দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। তিনি বলেন, আজকের বৈঠকে মূল রেজুলেশন নির্বাচন হবে এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুসারে ঘোষিত নির্বাচনের তারিখের হেরফের হলে আওয়ামী লীগ মেনে নেবে না বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

    এদিকে বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্দোলনের নামে বিরোধীদলের দেশব্যাপী হত্যা, সন্ত্রাস ও অরাজকতার বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বিএনপি প্রধান বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি রক্তের খেলা বন্ধ করার আহবান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, বেগম জিয়া জনগণের রক্ত নিয়ে হোলিখেলায় মেতে উঠেছেন। কেননা, জনগণের রক্ত দেখে তিনি আনন্দিত হন। তিনি জনগণকে হত্যা করতে চান। কারণ, লাশ নিয়ে খেলায় তিনি অভ্যস্ত। দেশ ও জনগণের প্রতি তার কোনো দরদ নেই। রেললাইনের ফিসপ্লেট খুলে এবং পেট্রোল ছিটিয়ে মানুষ হত্যা প্রসঙ্গে তিনি প্রশ্ন করেন, খালেদা জিয়া আর কত লাশ চান? আর কত লাশ পেলে তার মন ভরবে?।
    জনগণের প্রতি খুনীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহবান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা জনগণের রক্ত এবং লাশ দেখতে চাই না। তিনি বলেন, বিএনপি নেত্রী জনগণের লাশ দিয়ে বা তাদের হত্যা করে কিছুই পাবেন না। বরং এ হত্যাকান্ডের জন্য তাকে একদিন জবাবদিহি করতে হবে। কাজেই জনগণকে হত্যা এবং তাদের রক্ত নিয়ে খেলা বন্ধ করার জন্য বিএনপি নেত্রীকে অনুরোধ করছি। তিনি বলেন, বিরোধী দলীয় নেতা নিরীহ জনগণকে হত্যার জন্য বিচারের সম্মুখীন হবেন। তিনি আরো বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হয়েছে এবং একইভাবে নিরীহ জনগণকে হত্যার জন্য বেগম জিয়াকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হবে।
    প্রধানমন্ত্রী বলেন, বেগম জিয়া ক্ষমতায় যেতে না পারার দুঃখে মানুষ হত্যা শুরু করেছেন। তিনি (খালেদা জিয়া) জনগণের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিচ্ছেন। কেননা, জনগণ তার দলকে ভোট দেয়নি। তিনি বলেন, বিরোধী দল ওসামা বিন লাদেনের মতো মিডিয়ায় ভিডিও ম্যাসেজ পাঠিয়ে ধ্বংসাত্মক কর্মসূচি দিচ্ছে। প্রকৃত রাজনীতিবিদ হলে তারা এ ধরনের ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ডে লিপ্ত হতে পারতেন না। তিনি বলেন, তারা রাজনীতিবিদ নয়, তারা খুনী এবং রাজনীতির কলঙ্ক।
    প্রধানমন্ত্রী বলেন, বেগম জিয়া মানুষ হত্যার মিশনে নেমেছেন এবং শীততাপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে বসে চিকেন স্যুপ ও রোস্ট খাচ্ছেন। তিনি বলেন, বেগম জিয়া হরতাল ও অবরোধের সময় নিরীহ মানুষ মরতে দেখে পুলকিত হন এবং তাদের ‘সফল আন্দোলন’র জন্য সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি প্রশ্ন করেন, এ দুষ্ট চক্র থেকে দেশের রাজনীতি কবে মুক্ত হবে। তিনি বলেন, জেনারেল জিয়াউর রহমান ক্ষমতা কুক্ষিগত করার পর হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতির সূচনা হয়। তিনি আরো বলেন, তার (জিয়া) শাসন আমলে উনিশবার ক্যু হয়েছিলো এবং আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীসহ শত শত আর্মি অফিসার নিহত হয়েছিলো।
    এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী জেনারেল জিয়ার একটি উক্তির উদ্ধৃতি দেন। ওই উক্তিতে জিয়া বলেছিলেন- ‘আমি রাজনীতিবিদদের জন্য রাজনীতিকে কঠিন করে দেবো’। তিনি বলেন, জিয়ার এ উক্তি অনুসরণ করে বিএনপি-জামায়াত আন্দোলনের নামে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড শুরু করে রাজনীবিদদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করায় লিপ্ত রয়েছে। তিনি বলেন, তাদের একমাত্র লক্ষ্য হচ্ছে রাজনীতিবিদদের প্রতি জনগণকে বিতশ্রদ্ধ করে তোলা।
    প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াত ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ডে তাদের সন্ত্রাসীদের যুক্ত করে দেশ ও জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। তিনি বলেন, নিরীহ মানুষ হত্যা, রেললাইনের ফিসপ্লেট খোলা এবং যাত্রিবাহী বাসে আগুন দেয়া ছাড়া তাদের আন্দোলন বলতে আর কিছুই নেই।