মৌলভীবাজারে অবৈধ বালু উত্তোলনে নদীর বাঁধ ধ্বসে পড়ার আতঙ্কে তীরবর্তীরা

0
289

বিশেষ প্রতিবেদকঃ একদিকে চলছে নদী রক্ষায় ব্লক তৈরির কাজ,অন্য দিকে নদী ভাঙ্গনে ব্যাস্ত সময় পার করছে অবৈধ বালু উত্তোলনকারীরা। সেই সাথে আতঙ্কে আছে নদী তীরবর্তী মানুষ,আর প্রশাসন দেখেও যেন না দেখার অযুহাত ।
আবার সময় সময়ে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধের দাবীতে,মানববন্দন,মিছিল, প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তর বরাবর স্বারকলীপি প্রধান।
মৌলভীবাজার সদর উপজেলার কাজির বাজার, পালপুর, বেকামুড়া,সোমারাই সহ বিভিন্ন স্থানে অবাধে চলছে মনাই মিয়া গংয়ের অবৈধ বালু উত্তোলন। দিন দুপুরে দেদারছে চলছে এই অবৈধ কর্মযজ্ঞ। ড্রেজার মিশিন বসিয়ে অবৈধভাবে চলছে বালু উত্তোলন ।
অপরিকল্পিত ভাবে বালু উত্তোলনে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে নদী, ঝুঁকিতে পড়ছে পরিবেশ ও নষ্ট হচ্ছে জীববৈচিত্র। আর নদী ভাঙ্গনের হুমকিতে রয়েছেন তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দারা।
মনু নদের তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দারা জানায়, মনাই মিয়া শক্তিশালী বোমা মেশিন, বাল্কহেড মেশিন দিয়ে নদের তলদেশ ও তীরের পাশ থেকে বালু তুলছে। এলাকার কেউ বাদা দিলে। সে মামলা হামলার ভয় ভিতি দেখায়। মনাই মিয়ার ভয়ে এলাকার কেউ কথা বলে না।
সোমারাই এলাকারসহ নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, বালু উত্তোলনে তারা নদীপাড়ে ঝুঁকির মধ্যে আছেন। এ ব্যাপারে কথা বললে মামলা-হামলার হুমকি দেয় মনাই মিয়া । বালু উত্তোলনে আপত্তি করায় অনেকে মিথ্যা মামলার আসামিও হয়েছেন। মনাই মিযা প্রভাবশালী প্রশাসন ও রাজনীতিবিদদের ‘ম্যানেজ’ করে এই ‘বালুর রাজত্ব’ কায়েম করেছে। লোক দেখানো অভিযান পরিচালনা করে অপরাধীদের ছাড় দেওয়া হয়। মাঝখানে কথা বলে এলাকাবাসী নির্যাতনের শিকার হয়।
অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করে মনু নদীকে ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য সিলেট বিভাগীয় কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার শতাধিক ভুক্তভোগী। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ও অবগতির জন্য (ডকেট নং- ৪৬৪৮,তারিখ ঃ ০৬/১০/২০২২ইং) মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার, পানি উন্নয়ন বোর্ড, মৌলভীবাজার, জেলা বালু মহাল ব্যবস্থাপনা কমিঠি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারী কমিশনার ( ভূমি) ও পরিবেশ অধিদপ্তর, মৌলভীবাজার বরাবর অনুলিপি প্রেরণ করা হয়েছে।
এবিষয়ে পরিবেশবাদী সংগঠন বাপার মৌলভীবাজার জেলা স্বমন্বয়ক আ.স.ম ছালেহ সোহেল বলেন জেলার নদী ও ছড়া থেকে অবৈধ ও অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের ফলে হুমকির মুখে এ অঞ্চলের জলজপ্রাণী ও জীববৈচিত্র। এ অবৈধ কর্মকান্ড বন্ধে প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ নেবে এমনটি প্রত্যাশা আমাদের।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মনাই মিয়া বলেন, “আমি এখানে একা না আমার আরো পাঠনার আছে, বালু উত্তোলনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমার লিজ আছে।”
পানি উন্নয়ন এর নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ আক্তারুজ্জামান বলেন “বাঁধ রক্ষায় আমরা কাজ করছি,কেউ যদি অবৈধ ভাবে বালু তুলে সেটা আমরা সরেজমিনে দেখে আইনি ব্যাবস্থা নিবো।”
প্রতিদিন ড্রেজার মেশিন দিয়ে ৪০থেকে ৫০টি বড় নৌকা দিয়ে বালু নিয়ে যাচ্ছে। বালুর প্রতিটি নৌকায় প্রায় ১০হাজার টাকা বালু থাকে। প্রতি মাসে প্রায় ১ কোটি ৫০ লক্ষ টাকার বালু উত্তোলন করা হচ্ছে বলে মনাই মিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে।