মাধবপুরে প্রাচীন কবরস্থান রক্ষার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ

0
221

হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ হবিগঞ্জের মাধবপুরে প্রায় ১০০ বছরের একটি পারিবারিক কবরস্থান দখল করে নার্সারী নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া গেছে প্রভাবশালী অবঃ প্রাপ্ত পুলিশ সদস্য আবুল হোসেন বিরুদ্ধে। এদিকে, শত বছরের কবরস্থানটি রক্ষায় একজোট হয়েছে এলাকাবাসী। দিচ্ছে মানববন্ধনসহ একাধিক প্রতিবাদ সমাবেশ।
এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগীরা জানান, উপজেলার ২নং চৌমুহনী ইউনিয়নের কমলপুর গ্রামের জাঙ্গাল নামক কবরস্থানের বেশ কিছু জায়গায় আবুল হোসেন ও তার বাহিনী নিয়ে রাতের আধারে কবরস্থানের উপর এক্সিবেটর মেশিন (ভেকু গাড়ী) দ্বারা মাটি খনন শুরু করে। পরে এলাকাবাসী দেখতে পেয়ে তা বাঁধা প্রদান করেন। এলাকাবাসীর বাঁধা তোয়াক্কা না করে তারা কাজ চালিয়ে যান। পরে এলাকার সচেতন মহলের ব্যক্তিরা প্রশাসনের ও সোসাল মিডিয়ার নজরে নিয়ে আসেন বিষয়টি।

এরই মধ্যে করবস্থান রক্ষায় সংবাদ সম্মেলন, মানববন্ধন, বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে এলাকাবাসী। এসব কর্মসূচি নেতৃত্বে দিচ্ছেন চৌমুহনী ইউনিয়নবাসী

ইউনিয়নের কমলপুর গ্রামের কমলপুরের কবরস্থান ভাঙ্গা, কঙ্কাল চুরির প্রতিবাদে গ্রামবাসী ঘটনার শুরু থেকে দিন রাত সীমাহীন প্রতিবাদে নিজ উদ্যোগে কাজ করে যাচ্ছে। ঘটনাটি গত ১২ই আগস্ট ভোর রাতে ঘটেছে। অন্তঃকরণ বিষয় টি বুকে ধারণ করে এলাকার মুসলিম উম্মাহ প্রতিবাদ করেই চলেছে।

সর্ব প্রথম বিষয়টি উপজেলার প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের মৌখিক ভাবে অবগত করার পর, গত ১৩ই আগস্ট সরজমিনে সততা জানতে কমলাপুর কবরস্থানে যান, মাধবপুর-চুনারুঘাট সার্কেল, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভূমি কমিশনার এবং মাধবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ। হতভম্ব কর্মকান্ড দেখে উপজেলা প্রশাসনিক কর্মকর্তাগন কবরস্থান ভাংচুরের কার্যক্রম বন্ধ করে দেন। এবং এক্সিবেটর মেশিন (ভেকু ) দ্বারা মাটি খননের গাড়ীটি জব্দ করেন।

কঙ্কাল চুরের বিরুদ্ধে জনগণ আজ ও মাঠে। কবরস্থান ভেঙে নার্সারী করার উদ্দেশ্যে প্রনিতকারী আবুল হোসেন জনগণ এর নামে মিথ্যা মামলাসহ প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চলেছে।

হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার ২ নং চৌমুহনী ইউনিয়নের ৮ নং কমলপুর গ্রামের সাম্প্রতিক সময় কবরস্থান ভাঙ্গা কেন্দ্রিক যে আন্দোলন করা হয়েছিলো, আন্দোলনকারী বেশির ভাগ মানুষ গুলোই আজ বিভিন্ন মামলার আসামী !

কবরস্থান হেফাজতের জন্য শুধু মাত্র প্রতিবাদ করাই( ফেইজবুকে লাইভ ও প্রথম ভিডিও আপলোড যারা দিয়েছেন) তাদের পরিবারগুলোকে মিথ্যা মামলায় দেয়া হয়েছে ।

এলাকাতে যাদের বাবা, মা, দাদা, দাদী,ভাই বোনসহ আত্মীয় স্বজনদের কবর ঐ কবরস্থানেই। প্রতিটি মুসলমানের ঈমানি দায়িত্ব হচ্ছে কবরস্থান হেফাজত করা। তাই ঐ এলাকার সচেতন মহলের ব্যক্তিরা আজ জীবন বাজি রেখে কবরস্থান হেফাজতের জন্য একত্র হয়ে প্রতিবাদে নেমেছে।

ঐ এলাকার প্রবীণ মুরুব্বিরা জানান, দেশ স্বাধীনের পূর্ব থেকে এখানে কবরস্থান ছিল, আমরা ছোট বেলা থেকেই দেখে আসছি ঐখানে হাজার হাজার মানুষের দাফন হচ্ছে, এমন কি কবরস্থানের মালিক দাবী করা লোকের ( অবঃ প্রাপ্ত পুলিশ আবুল হোসেন) বাবার দাফনও করা হয়েছে এই কবরস্থানে।

এছাড়াও এলাকার লক্ষ লক্ষ মৃত ব্যক্তির যাদের
দাফন এই কবরস্থানে হয়েছে।

যখন এলাকা জুড়ে প্রতিবাদের ঝড় বইছে ঠিক তখনই সেই অবঃ প্রাপ্ত পুলিশ সদস্য আবুল হোসেন বাদী হয়ে এলাকার সচেতন মহলের প্রতিবাদীদের বিরুদ্ধে পর পর দুটি মিথ্যা মামলায় ১৩ জনকে আসামি করেন বলে ভুক্তভোগীসহ অধিকাংশ লোকই জানিয়েছেন।

একটি মামলায় আবুল হোসেন মামলায় উল্লেখ করেন, আমি বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর এ.এস.আই, হিসাবে অবসরপ্রাপ্ত হইয়া গ্রামের বাড়িতে বসবাস করিতেছি। আমি আমার জীবনে গ্রামের বাড়িতে থাকিয়া পৈত্রিক ও খরিদা ভূমিতে চাষাবা ভূমিতে দীর্ঘদিন যাবৎ বিভিন্ন জাতের গাছ লাগাইয়া ও পূর্বের গাছ পরিচর করিয়া আসিতেছি। বর্তমানে পুকুরের তিনবাজের অধিকাংশ গাছ পরিপক্ক হওয়ায় আমি বিক্রি করার জন্য এলাকায় প্রচার করিলে,তাহা জানিতে পারিয়া অন্যায়ভাবে লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে কুড়াল, করাত ও ট্রাকসহ আরজির তপশীল বর্ণিত ভূমিতে অন্যায় অনধিকারে করিয়া ঘটনার তারিখ ও সময়ে আমার সম্বন্ধীয় ভূমিতে ফলানো বিভিন্ন জাতের কাঠের গাছ কাটিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, আমি দেখিতে পাইয়া ১/২ স্বাক্ষীদেরকে সঙ্গে নিয়া প্রতিবাদ করামাত্র-১নং আসামী রুবেল মিয়া তাহার হাতে থাকা দা আমার গলায়, ২নং আসামী মতিন মিয়ার হাতে থাকা ফিফা, আসামী শাহীন মিয়া তাহার হাতে থাকা দা ২নং আত্মীয় ভয়ভীতি দেখাইয়া আমাদেরকে পুকুরের পশ্চিমপাড়ে আটক করিয়া
আসামীগণ পুকুরের পশ্চিমপাড় ও উত্তরপাড়ের ৩০০ আকাশি গাছ ও ১০০ বেলজিয়াম গাছ
কাটিয়া টুকরা করিয়া একে অপরের সহযোগিতায় ট্রাকে উঠাইয়া অন্যায় লাভের আশায় ছিনাইয়া নিয়া যায়। যাহার মূল্য অনুমান ৬,০০,০০০/- (ছয় লক্ষ) টাকা।

এছাড়া আসামীগণ আমাদেরকে
ভয়ভীতি দেখাইয়া আমার স্বত্ব দখলীয় পুকুরপাড় রকম ভূমি হইতে আকাশি ও বেলজিয়ারে ৪০০ গাছ জোরপূর্বক কাটিয়া ট্রাক দিয়া নিয়া যাওয়ার সময় আসামীগণ বলেন এ ব্যাপারে মামলা-মোকদ্দমা করিলে আমাকে সময় সুযোগে খুন করিয়া লাশ গুম করিয়া ফেলিবে বলিয়া হুমকি প্রদান করেন। বলে আবুল হোসেন মামলায় উল্লেখ করেন।

এবিষয়ে এলাকায় গিয়ে অনুসন্ধানে কোন প্রকার সততা পাওয়া যায় নি। বরং আবুল হোসেন তাদের উপ মিথ্যা বানোয়াট ও ভিত্তিহীন এবং হয়রানি করার উদ্দেশ্যে এই মামলাটি দায়ের করেছেন বলে বেশ কিছু লোকের কাছ থেকে তথ্য পাওয়া যায়। 

তাছাড়া এই কবরস্থানে যে, অগনিত মৃত্যু ব্যক্তির দাফন করা হয়েছে যাহা সরকার রেজিস্ট্রারে লিপিবদ্ধ করা রয়েছে এই মর্মে
অত্র ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান একটি প্রত্যয়ন পত্র প্রদান করেন। প্রত্যয়ন পত্রে উল্লেখ করেন।
এই মর্মে প্রত্যয়ন করা যাচ্ছে যে, পূর্ব দক্ষিণ কমলপুর হযরত আবু ছালেক বাগদাদী (রঃ)
মাজার সংগ্রন্ন প্রাচীন কবরস্থানে (১) মোঃ কালন মিয়া, পিতাঃ মৃত মতি মিয়া, গ্রামঃ নয়নপুর, (২) আশ্রব আলী, পিতাঃ মৃত বারাম আলী, গ্রামঃ নয়নপুর, (৩) কালাম মিয়া, পিতাঃ মৃত আসকর আলী,গ্রামঃ নয়নপুর, (৪) মালেক মিয়া, পিতাঃ মৃত আসকর আলী, গ্রামঃ নয়নপুর, (৫) আনছনা বেগম,স্বামীঃ মৃত আব্দুল মতালিব, গ্রামঃ কমলপুর, (৬) আবু তালেব, পিতাঃ মৃত আঃ রহিম, গ্রামঃ কমলপুর,
(৭) মাজেদা খাতুন স্বামীঃ মৃত হাছন আলী, গ্রামঃ কমলপুর, (৮) আমেনা খাতুন, স্বামীঃ মৃত ওসমান গনি, গ্রামঃ কমলপুর, (৯) জয়দর আলী, পিতাঃ মৃত রাশেদ উল্লাহ, গ্রামঃ নয়নপুর, (১০) করফুল নেছা, স্বামীঃ মৃত ওয়াহেদ আলী, গ্রামঃ কমলপুর, (১১) সফর বানু, স্বামীঃ সফর আলী, গ্রামঃ কমলপুর,(১২) সুফিয়া বেগম, স্বামীঃ মৃত আনজব আলী গ্রামঃ নয়নপুর, (১৩) ছিদ্দিকা বানু, স্বামীঃ মৃত উইনুছ
মিয়া, গ্রামঃ নয়নপুর, (১৪) উইছুব আলী,পিতাঃ মৃত বারাম আলী, গ্রামঃ নয়নপুর, (১৫) তৈয়বুন
নেছা, স্বামীঃ রুফ মিয়া, গ্রামঃ নয়নপুর, (১৬) আঃ হাই পিতাঃ মৃত আঃ লতিফ, গ্রামঃ কমলপুর, (১৭)ইব্রাহিম মিয়া, পিতাঃ মৃত মতি মিয়া, গ্রামঃ নয়নপুর, সর্ব ইউনিয়ন ২নং চৌমুহনী, উপজেলাঃ মাধবপুর,
জেলাঃ হবিগঞ্জ। আমার জানা মতে এই কবরস্থানে উপরোক্ত মৃত মূদাগনসহ আরো অগনিত মূর্দাগনের দাফন করা হয়েছে। উল্লেখিত মূদাগন ইউনিয়ন পরিষদে মৃত রেজিস্ট্রার তালিকায় অর্ন্তভূক্ত আছে।

অত্র ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তাও এই কবরস্থানের বিষয় উপজেলা ভূমি কমিশনার বরাবর লিখিত আকারে বিষয়টি তুলে ধরেন। ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তার মোঃ কুতুব উদ্দিন,ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা, ইউনিয়ন ভূমি অফিস মনতলা,মাধবপুর লিখিত সরেজমিনে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন,

স্মারক নং ১৭৫
বরাবর,
সহকারী কমিশনার (ভূমি)
মাধবপুর, হবিগঞ্জ।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
ইউনিয়ন ভূমি অফিস মনতলা
মাধবপুর, হবিগঞ্জ।
তারিখঃ ২১.০৮.২০২২ ইং

বিষয় : মাধবপুর উপজেলাধীন ১২৭নং জে.এল স্থিত কমলপুর মৌজার এস.এ. ২৬৪০, ২৬৪২ ও ২৬৩৮, আর,এস ৩৯২১, ৩৯২৮ ও ৩৯১৭ দাগের ভূমির বিষয়ে সরেজমিনে তদন্ত প্রতিবেদন।

সূত্র মহোদয়ের মৌখিক নির্দেশ।

উপর্যুক্ত বিষয় ও সূত্রের প্রেক্ষিতে মহোদয়ের সদয় অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলাধীন ২নং চৌমুহনী ইউনিয়নের অন্তর্গত ১২৭নং জে.এল হিত কমলপুর মৌজার এস.এ ২৮৫নং খতিয়ানে, এস.এ দাগ নং যথাক্রমে ২৬৩৮, ২৬৪০ ও ২৬৪২, পরিমাণ যথাক্রমে ৪৯+১০+১৬=৭৫ একর ভূমি সাদত আলী, পিতাঃ সৈয়দ আলী মুন্সী এর নামে পুকুরপাড় হিসেবে রেকর্ড বিদ্যামন ছিল এবং ঐ মৌজার
এ.এস ৩৩৬ খতিয়ানে, এস.এ ২৬৩৮নং দাগে, ৪৯ একর চারা, ২৬৪০নং দাগে ১৩ একর পুকুরপাড় ও ২৬৪২নং দাগে ১০ একর পুকুরপাড় রকম ভূমি সোনা মিয়া, পিতাঃ আঃ ছোমদ এর নামে রেকর্ড বিদ্যমান ছিল পরবর্তীতে আর.এস/বি.এস চূড়ান্ত রেকর্ডে আর.এস ৬৬৬নং খতিয়ানে ৩৯১৭নং দাগে ১৩ একর পুকুরপাড় রকম ভূমি বাচ্চু মিয়া গং পিতা: আব্দুল কদ্দুছ হাজী, সাং নিজ এর নামে, আর.এস ৩৪৪নং খতিয়ানে ৩৯১৭নং
দাগে ৪৯ একর পুকুরপাড়, ৩৯২১নং দাগে ১৩ একর পুকুরপাড় ও ৩৯২৮নং দাগে ১৬ একর পুকুরপাড় রকম ভূমি আবুল হোসেন, পিতাঃ হানিফ মিয়া, সাং নিজ এর নামে এবং আর.এস ৩৯৯নং খতিয়ানে ৩৯১৭নং দাগে ২৪ একর পুকুরপাড়, ৩৯২১নং দাগে ১০ একর পুকুর পাড়, ৩৯২৮নং দাগে ১২ একর পুকুরপাড় রকম ভূমি ওয়াহেদ আলী, পিতাঃ সাদত আলী, সাং নিজ এর নামে ও আর.এস ৪৩৯নং খতিয়ানে ৩৯২৮নং দাগে ০.০৪ একর পুকুরপাড় রকম ভূমি খুসবানু গং, স্বামী: ইউনুছ মিয়া, সাং নয়নপুর এর নামে রেকর্ডভূক্ত হয় (সকল কপি
সংযুক্ত)। আর.এস ৩৯২১নং দাগে.২৬ একর, আর.এস ৩৯২৮নং দাগে .৩২ একর, আর.এস ৩৯১৭নং দাগে ৯৮ একর পুকুর পাড় অর্থাৎ উল্লেখিত দাগ সমূহের মোট ১.৫৬ একর পুকুর পাড় রকম ভূমি হলেও বাস্তবে কবরস্থান হিসেবে বিদ্যমান আছে যা সরেজমিনে তদন্তে দেখা যায়। সংগ্রহকৃত দলিল ও কাগজাত দৃষ্টে দেখা যায়।
সে. ২২/০৩/২০২২ইং তারিখে ২৩৯২নং রেজিষ্ট্রী দলিল মূলে মোঃ আবুল হোসেন, পিতাঃ মৃত হানিফ সর্দার দীতা হিসেবে মোছাঃ সাফিয়া খাতুন, স্বামী মোঃ জমির আলী, সাং নয়নপুর দাতা হিসেবে আর.এস ৩৯২১ ও ৩৯২৮নং দাগে মোট ০.০০২ একর পুকুরপাড় রকম ভূমি হস্থান্তর করেন। ১৫/০২/২০২২ইং তারিখের ১১৯৩ নং রেডিয়ী দলিল মূলে মোঃ আবুল হোসেন, পিতাঃ মৃত হানিফ সর্দার গ্রহীতা হিসেবে ১নং বাচ্চু মিয়া, ২। গেদু মিয়া, উভয় পিতা মৃত আব্দুল কুদ্দুস্থ হাজী, সাং কমলপুর দাতা হিসেবে আর.এস ৩৯১৭নং দাগে ০.০৬৫ একর পুকুরপাড় রকম ভূমি হস্তান্তর করা হয় এবং ২৩/০১/২০২২ইং তারিখের ৬৩০নং রেজিষ্ট্রী দলিল মূলে মোঃ আবুল হোসেন, পিতাঃ মৃত হানিফ সর্দার, সাং কদলপুর গ্রহীতা হিসেবে ১। বাচ্চু মিয়া, ২। মোঃ গেদু মিয়া, উভয়
পিতা: মৃত আব্দুল কদ্দুছ হাতী, সাং কমলপুর দাতা হিসেবে ৩৯১৭নং ০.০৬৫০ একর পুকুরপাড় রকম ভূমি হস্হান্তর করা হয় (সকল দলিলের কপি সংযুক্ত)। সরেজমিন তদন্তকালীন সময়ে স্থানীয় কমলপুর ও নয়নপুর গ্রামের হাজারের ও বেশি লোকজন উপস্থিত ছিলেন। আর.এস ৩৯১৭, ৩৯২১ ও ৩৯২৮নং দাগে মোট ১.৫৬ একর ভূমির সম্পূর্ণ ভূমিতেই কবরস্থানের চিহ্ন পাওয়া যায়। স্থানীয় লোকজনদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, শত
বছরের ঊর্ধ্বকাল থেকেই কমলপুর ও নয়নপুর গ্রামবাসীর লোকজন বিরোধীয় ভূমি কবরস্থান হিসেবে ব্যবহার করে আসছেন যা এখনও অব্যাহত আছে। সম্প্রতি ২/৩ জন মুসলিমকে বিরোধীয় ভূমিতে দাফন করা হয় তাও
সরেজমিনে দৃশ্য হয়। ইদানিং জনাব মোঃ আবুল হোসেন, পিতা: মৃত হানিফ সর্দার, সাং কালপুর, উপজেলাঃ মাধবপুর, জেলাঃ হবিগঞ্জ বিরোধীয় ভূমি রেজিষ্ট্রী দলিল মূলে খরিদ করে এক্সিবেটর মেশিন দ্বারা মাটি খনন কালে
মৃত মানুষের (মুসলিম) মাথার খুলি, কাফনের কাপড় ও বাঁশের খাটিয়া পাওয়া যায়। বিষয়টি প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে হাজার হাজার মানুষ সমবেত হয় এবং প্রতিবাদ মুখর হয়ে উঠে। বিক্ষুদ্ধ জনতা বিক্ষোভ সহকারে মিছিল পর্যন্ত
করেন। বিষয়টি স্থানীয় দৈনিক পত্রিকা ও জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় গুরুত্ব সহকারে প্রকাশ করা হয়। বিষয়টি স্পর্শকাতর ও যে কোন সময় মারামারি, দাঙ্গা হাঙ্গামা, রক্তপাত, খুন খারাপী সহ আইন শৃঙ্খলা ভঙ্গের প্রবল আশংকা বিদ্যমান রয়েছে।

বিরোধীয় ভূমি Public easement rights of graveyard হিসেবে ১নং সরকারি খাস
খতিয়ানভুক্ত করার নিমিত্তে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য অত্র প্রতিবেদন প্রেরণ করা হলো।

তপশীলঃ জেলা: হবিগঞ্জ, উপজেলা: মাধবপুর, মৌজা কমলপুর, জে.এল নং ১২৭, খতিয়ান নং ৩৪৪, ৩৯৯, ৪৩৯, ৬৬৬, দাগ নং ৩৯১৭, ৩৯২১, ৩৯২৮, পরিমাণ: ১৮+.২৬+.৩২=১.৫৬ একর পুকুরপাড় রকম ভূমি বাস্তবে কবরস্থান।

গত ২৩ অগাস্ট ২০২২ ইং তারিখে
সহকারী পুলিশ সুপার (মাধবপুর চুনারঘটি-সার্কেল) হবিগঞ্জ এর দপ্তরে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

বাদীঃ এলাকাবাসী পক্ষেঃ (১) মুজাহিদ মসি (৩৩)পিং আজিজুর রহমান (২) আব্দুল মতিন (২৮) পিং আব্দুল গনি (৩) আব্দুল্লাহ আল মামুন (সাংবাদিক ও ইউটিউবার) পিং বাবুল মিয়া(৪)সাজিদ পিং মৃত আব্দুল হাই, সর্বসাং কমলপুর, ২ নং চৌমুহনী ইউপি, মাধবপুর হবিগঞ্জ।

বিবাদীঃ (১) আবুল হোসেন পিং হানিফ মিয়া সাং কমলপুর, ২ নং চৌমুহনী ইউপি, মাধবপুর হবিগঞ্জ।(২) সাদাম পিতা অজ্ঞাত, ভেকুচালক, সাং হালুয়াপাড়া,আদাউর ইউপি, মাধবপুর হবিগঞ্জ |
(৩)শাহিন মিয়া(২৫) পিং মৃত মোঃআলী সাং নয়নপুর, ২ নং চৌমুহনী ইউপি, মাধবপুর হবিগঞ্জ |
(8) খলিল মিয়া (৬০) পিং মৃত বরকত আলী সাং নয়নপুর, ২ নং চৌমুহনী ইউপি,মাধবপুর হবিগঞ্জ |

ঘটনার সময় ও স্থানঃ ১২ অগাস্ট ২০২২/ সময় অনুমান ভোর রাত হতে সারা দিন। মাধবপুরের চৌমুহনী ইউপির পূর্ব কমলপুরে আবু সালেক বাগদাদী (রহ)এর মাজার যেয়া প্রাচীন
বিনীত নিবেদন এই যে আমারা নিম্ন সাক্ষরকারী কমলপুর গ্রামের সচেতন বাসিন্দা।
মাধবপুত্রের চৌমুহনী ইউপির পূর্ব কমলপুরে আবু সালেক বাগদাদী (রহ)এর মাজার ঘেষা প্রাচীন কবরস্থানে মালিকানার জোর দেখিয়ে পুরানা কবরস্থান দখল করে ১নং বিবাদীর নেতৃত্বে ২, ৩ ও ৪ নং বিবাদীগন | তারা সকলে ভেকু মেশিন দিয়ে উল্লেখিত সময় ও তারিখে অগনিত নতুন পুরান লাশের দেহ কংকাল উত্তোলন করেছেন। লাশের হাত পা মাথার খুলি কেঠে ফেলা হয়েছে। মুর্দাগন আমাদের জ্ঞাতি গোষ্ঠী ও স্বজন। তাদেরএই অমানবিক অসৎ কর্মে আমাদের মুসলিক সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনূভুতিতে আঘাত এসেছে চরমভাবে। এরা এই কংকাল হাড় হাড়ি পাচার ও পায়েব করে নিয়েছে। আমাদের উল্টা হুমকি দিচ্ছে। ১ নং বিবাদী পুলিশের অবঃ প্রাপ্ত এ এস আই, সে ডিপার্টমেন্টে নাম ব্যবহার করেও অনেককে
ভয় দেখাচ্ছেন | ওই করবস্থানের ১নং বিবাদীর যে মালিকানার দাবী তাও জ্বাল দলিলের মাধ্যমে। এই কররস্থান যে কবরস্থান শ্রেনী তাও ভূমি অফিসের প্রতিবেদনে ফুটে উঠেছে।
আমরা কবরস্থানের লাশের জাতি-গোষ্ঠী। ১২ অগাস্ট ২০২২ থেকে ন্যায় বিচারের জন্যে হাজারো জনতা নিয়ে মানববন্ধন, সভা, পত্রিকায় লেখালেখি করে আসলেও কোন বিচার পাচ্ছি না বরং মামলার হুমকি খাচ্ছি।
এমতাবস্থায়, আইনের সঠিক প্রয়োগ করে অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহনের জন্যে আকুতি জানাচ্ছি।

তাছাড়া একই তারিখে মাধবপুর উপজেলার নির্বাহীকর্মকর্তা বরাবর আবুল হোসেন গং দের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর পক্ষে বাদী হয়ে ব্যক্তিদ্বয় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযোগকারীগন হলেন,১. আব্দুল মতিন (২৮) পিতাঃ আব্দুল গনি, ২. আব্দুল্লাহ আল মামুন পিতাঃ বাবুল মিয়া।

উক্ত অভিযোগে বিবাদী হিসেবে উল্লেখ করা হয়, ১. আবুল হোসেন পিতাঃ হানিফ মিয়া, ২.সাদ্দাম পিতা অজ্ঞাত, ভেকুচালক, সাং হালুয়াপাড়া, আদাউর ইউপি, মাধবপুর হবিগঞ্জ। ৩.শাহিন মিয়া (২৫) পিতাঃ মৃত মোঃ আলী সাং নয়নপুর, ২ নং চৌমুহনী ইউপি, মাধবপুর হবিগঞ্জ। ৪. খলিল মিয়া(৬০) পিতাঃ মৃত বরকত আলী সাং নয়নপুর, ২ নং চৌমুহনী ইউপি, মাধবপুর হবিগঞ্জ।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, আমারা নিম্ন সাক্ষরকারী কমলপুর গ্রামের সচেতন বাসিন্দা।
মাধবপুরের চৌমুহনী ইউপির পূর্ব কমলপুরে আবু সালেক বাগদাদী (রহ)এর মাজার ঘেষা প্রাচীন কবরস্থানে মালিকানার জোর
দেখিয়ে পুরানা কবরস্থান দখল করে ১নং বিবাদীর নেতৃত্বে ২, ৩ ও ৪ নং বিবাদীগন। তারা সকলে ভেকু মেশিন দিয়ে উল্লেখিত সময় ও তারিখে অগনিত নতুন পুরান লাশের দেহ কংকাল উত্তোলন করেছেন। লাশের হাত পা মাথার খুলি কেঠে ফেলা হয়েছে। মুদাৰ্গন আমাদের জ্ঞাতি গোষ্ঠী ও স্বজন। তাদের এই অমানবিক অসৎ কর্মে আমাদের মুসলিক সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত এসেছে চরমভাবে। এরা এই কংকাল হাড় হাড্ডি পাচার ও গায়েব করে দিয়েছে। আমাদের উল্টা
হুমকি দিচ্ছে। ১ নং বিবাদী পুলিশের অবঃ প্রাপ্ত পুলিশ সদস্য  এ এস আই সে ডিপার্টমেন্টে নাম ব্যবহার করেও অনেককে ভয় দেখাচ্ছেন। ওই করবস্থানের ১নং বিবাদীর যে মালিকানার দাবী তাও জ্বাল দলিলের মাধ্যমে। এই কররস্থান যে কবরস্থান শ্রেনী তাও ভূমি অফিসের প্রতিবেদনে ফুটে উঠেছে। আমরা কররস্থানের লাশের জ্ঞাতি-গোষ্ঠী।
১২ অগাস্ট ২০২২ থেকে ন্যায় বিচারের জন্যে হাজারো জনতা নিয়ে। মানববন্ধন,সভা, পত্রিকায় লেখালেখি করে আসলেও কোন বিচার পাচ্ছি না বরং মামলার হুমকি খাচ্ছি।
এমতাবস্থায়, আইনের সঠিক প্রয়োগ করে অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহনের জন্যে আকুতি জানাচ্ছি।

গত ২৬শে আগস্ট শুক্রবার বিকালে অবঃ প্রাপ্ত পুলিশ সদস্য আবুল হোসেনের মিথ্যে মামলা ও কবরস্থান রক্ষা এবং কঙ্কাল চুরির প্রতিবাদে গ্রামবাসী বিক্ষোভ ও মিছিল বের করেন।
মিছিল শেষে এলাকার শত শত মানুষ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ন্যায়রবিচার কামনা করে তারা বলেন, আমাদের প্রাচীন আমলের পূর্ব পুরুষদের এই কবরস্থান যেন অতি বিলম্বে আগের ন্যায় পরিনত হয় এটাই আমাদের চাওয়া ও দাবি করছি। এবং এলাকার প্রতিবাদী ব্যক্তিদের’কে পর পর দুটি মামলায় আসামি করা হয়েছে তা থেকে সুষ্ঠ নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে মামলা থেকে অব্যাহতির দাবিদার অত্র এলাকাবাসী।
তারা আরো বলেন, আমরা সঠিক বিচার না পাই তাহলে আমরা আরো কঠিন ভূমিকা পালন করতে প্রস্তুত রয়েছি। যদি আমাদের জীবনও চলে যায় তাতে কোন দুঃখ নেই। তবুও আমাদের কবরস্থানের আর এক বিন্দু ক্ষতি সাধিত হতে দেব না।

প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিলের পক্ষে, মাধবপুর উপজেলার সজীব ওয়াজেদ জয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক, মোঃ আব্দুল আল মামুন বলেন, আমাদের পূর্ব পুরুষরা যেই মাঠিতে শুয়ে আছেন সেই মাঠির ( কবরস্থানের) আর এক বিন্দু ক্ষতি হতে দিবনা। প্রয়োজনে আমাদের জীবন দিয়ে দিব। এই কর্মকান্ড আদি যুগের বর্বরতা কেও হার মানিয়েছে। এক অবঃ প্রাপ্ত পুলিশ সদস্য গোটা পুলিশ জাতিকে এক কলঙ্কিত অধ্যায় দাঁড় করিয়েছে। আমার ভাবতে অবাক লাগে সেই অবঃ প্রাপ্ত পুলিশ সদস্য আবুল হোসেন আমাদের মত মুসলমান। তবে আমার দৃড় বিশ্বাস দেশে এখনো সত ন্যায় পরায়ন পুলিশসহ আইন প্রয়োগকারী ব্যক্তিরা রয়েছেন। তারা অবশ্যই আবুল হোসেনের ( অবঃ প্রাপ্ত পুলিশ সদস্য) মত নয়। এলাকার আহাজারি কান্নার শব্দ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী’র কানে পৌঁছাতে গণমাধ্যম কর্মী সাংবাদিক বন্ধুরা সদায় স্ব-চেষ্ট থাকবে।

এবিষয়ে ইউ’পি সদস্য অত্র ওয়ার্ড মেম্বার মোঃ শহিদ মিয়া’র সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, কবরস্থানের বিষয়টি আর কি বলব ! এই কাজটি সম্পূর্ণ অন্যায় করছে বলে আমি মনে করি। কারন এই কবরস্থান বৃটিশ আমলের কবরস্থান। আমাদের বাপ-দাদার চৌদ্দ গোষ্ঠীসহ এলাকাবাসীর নির্ধারিত কবরস্থান।
দেশ স্বাধীনের পূর্ব থেকে এলাকার মৃত ব্যক্তিদের দাফন করে আসছেন গ্রামবাসী। আজ হঠাৎ করে কিভাবে মালিক বনে গেছে তা আমার বা এলাকার প্রায় ৯৯% লোকের জানা নেই। প্রশাসনের কাছে আমার অনুরোধ রইল যেন বিষয়টি খুব দ্রুতার সাথে নিষ্পত্তি করার ব্যবস্হা করেন।

এই ব্যাপারে আবুল হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, এই ঘটনা কে বা কাহারা করেছে তা আমার জানা নেই। যে ব্যক্তিই এই ঘটনার সাথে জড়িত তার বিচার হোক আমি তার সাথে একমত পোষণ করছি।