মহান মুক্তিযোদ্ধের অনন্য ভূমিকায় চুনারুঘাটের আজাদ

    0
    267

    আমার সিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২৭মার্চ,এম এস জিলানী আখনজী, চুনারুঘাট (হবিগঞ্জ) থেকেঃ সকল দেশেই বিশেষ কিছু দিন থাকে আনন্দ উৎসবের। বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস সেই দিন।

    ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ যখন, মুক্তিযোদ্ধের ঘোষনা দেওয়া হয়। সেই থেকে বাংলাদেশীদের মধ্যে নিজেদের দেশ রক্ষার তারনা বৃদ্ধি পায়। বিশ্ব জনমত ঘটতে, বাংলাদেশ তথা হবিগঞ্জ জেলার বিভিন্ন অ লে নানান কর্মসূচির মাধ্যমে বাঙ্গালীরা গ্রাম-গঞ্জ ও শহর থেকে মুক্তি সংগ্রাম পরিষদ কমিটির মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধে অংশ গ্রহন করেছিলেন। বাংলাদেশের হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাটের মধ্যে এই অবদানকারীদের একজন হলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজ্বী আব্দুর রহমান আজাদ।

    ১৯৭১ সালের ২৫’ই মার্চ দিবাগত মধ্যরাতে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ঝাঁপিয়ে পড়ে নিরস্ত্র জনগনের উপর। ২৬ মার্চের সূচনা লগ্নে পূর্ব ব্যবস্থা অনুযায়ী এক বিশ্বস্ত ব্যক্তির কাছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণার বার্তা প্রেরণ করেন বাঙ্গালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ইতিহাসের পাতায় স্থান নেয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস। সে ঘোষনা পৌঁছে যায় চট্রগ্রামে ও প্রচারিত হয় জনগণের মধ্যে। এ থেকে শুরু হয়ে যায় স্বাধীনতা যুদ্ধ। সৈনিক, তরুন, যুবক, শ্রমিক জীবনের স্বত:স্ফুতভাবে যোগ দেয় মুক্তিযোদ্ধে। রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের নয় মাস পর চুড়ান্ত বিজয় আসে।

    পাকিস্থান সেনাবাহিনী পরাজয় মেনে আত্মসমর্পণ করতে রাজি হয়। ১৬ই ডিসেম্বর বিকেলে রেসকোর্স ময়দানে আয়োজিত এক সাদামাটা অনুষ্ঠানে ভারত-বাংলাদেশ যৌথ কমান্ডের প্রধান লে. জে. জগজিত সিং অরোরার কাছে আত্মসমর্পণ করেন, পাকিস্থান সেনাবাহিনীর পূর্বা লীয় শাখার প্রধান লে. জে. এ এ কে  নিয়াজি। ঠিক সেই মুহূর্তে থেকে বিশ্বের বুকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ ঘটে। দেশ ও দেশের মানুষের জন্য শুরু হয় এক নতুন যুগ।

    ৭১ এর উত্তাল মার্চ মাসে ছাত্র, শ্রমিক জনতা সমাবেশে বিক্ষোভে উত্তাল ছিল যেমন, তথকালীন সারা পূর্ব পাকিস্থান, ঠিক তেমনি এক অজানা আশংকার আতঙ্কিত হয়ে উঠেছিল হবিগঞ্জের বাঙ্গালীরা।

    অন্যান্য এলাকার তুলনায় চুনারুঘাটেও পাকিস্থানীদের হাতে নির্যাতিত ও শহীদ হয়েছিলেন অনেক বাঙ্গালীরা। উল্লেখযোগ্য একজন শহীদের নাম…বীর বিক্রম শহীদ আবদুল খালেক, তিনি জন্মগ্রহন করেন ১৯৪৬ইং সনে। তিনি জীবন ও জীবিকার তাগিদে ১৯৬৬ সালে মুজাহিদ বাহিনীতে যোগদেন। এই বীর মুক্তিযোদ্ধা ভারত থেকে অস্ত্র ও বিস্ফোরকের উপর প্রশিক্ষন গ্রহন করেন এবং ভৈরব বাজার, শেরপুর, রামগঙ্গার মুক্তিযোদ্ধে তিনি বীরত্বের পরিচয় দেন। ১৯৭১ সালের মে মাসের ১৪ তারিখে এ স্থানে (নালুয়া চা বাগানে) মুক্তিবাহিনী ও পাকবাহিনীর মধ্যে প্রচন্ড যুদ্ধ সংঘটিত কালে ১০২জন পাকসেনা নিহত হয়। উল্লেখিত যুদ্ধে অসীম সাহসী এ যোদ্ধা পাকসেনাদের হত্যার নেশায়-নিরাপদ অবস্থান ছেড়ে নি:শঙ্কচিত্তে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে থাকেন। এরই মদ্যে হঠাৎ করে শত্রুদের এক ঝাঁক গুলি দিয়ে ঝাঝরা করে দেয় তাঁর বুক। সাথে সাথে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন এবং শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। এই মুক্তিযোদ্ধার বীরত্ব ও অবদানের কথা চির অম্লান হয়ে থাকবে। স্বাধীনতা যুদ্ধে আব্দুল খালেকের আত্মোৎসর্গের জন্য রাস্ট্র তাঁকে “বীর বিক্রম ” খেতাব ভূষিত করে। তারই নামে আমুরোড বাজারের সরকারী খাদ্য গোদামের কাছে সরকারি জমিতে “বীর বিক্রম শহীদ আবদুল খালেক” স্মৃতি ম । এছাড়াও আরও অশংক শহীদগনের ঘন-কবর রয়েছে।

    পাকিস্থান হানাদার বাহিনীর গনহত্যার সংবাদ শুনে সরাসরি চলে যান যুদ্ধে।

    যুদ্ধে অবদান রাখা হাজারও বাংলাদেশী সংগঠকদের মর্যাদা এবং সুযোগ দিতে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রনালয় যে অবদান রেখেছে তাতে করে-আগামী নতুন প্রজন্মও ধারন করবে। বাংঙ্গালীথ্যের গৌরবের সংস্কৃতি আর সংবাদের ইতিহাস।

    বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের পরই বাঙ্গালীরা বুজেগিয়েছিল যুদ্ধ অনিবার্জ। সেই থেকে তারা বুকে বেধেছিলেন স্বাধীনতার স্বপ্ন।

    আজকের এই আব্দুর রহমান আজাদ সেই সমকার তরুন মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৭১ সালে যখন যুদ্ধের প্রস্তুতির জন্য ভারত যাই, কোম্পানী নগর ট্রেরিং সেন্টারে এবং সেখানে ট্রেনিং দেই। সাথী সঙ্গীরা যারা যুদ্ধে ছিল তাদের সখলের সর্ব কনিষ্ঠ ছিলেন আব্দুর রহমান আজাদ। তিনি বলেন দেশে ৯ মাস যুদ্ধ করেছি গেরিলা যুদ্ধ। আমি আমার ভাই-বোনদের মাঝে ৩য় ছিলাম।

    মুক্তিযোদ্ধারা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধাদের নিয়ে তথকালীন বাঙ্গালীদের মধ্যে ঐক্যবদ্ধতার সৃষ্টির লক্ষে শহরে-শহরে গ্রামে-গঞ্জে ছিল, মিছিল, মিটিং ছিল মাতৃভূমির জন্য অঘাত ভালোবাসা। দলবদ্ধভাবে হয়ে এবং অর্থকরি দিয়ে আমরা যুদ্ধ চালিয়েছি।

    সাবেক উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড হাজ্বী আব্দুর রহমন আজাদ,, জানান, ১৯৭১ সালে বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর নির্দেশে বাংলার ছাত্র জনতা, ঐক্যবদ্ধভাবে স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহন করে, আমরা দেশ স্বাধীন করেছি। লাল সবুজের পতাকা ছিনিয়ে এনেছি। এটাই আমার গর্ব, এঁটাই আমার অহংকার। বর্তমান সরকার দেশও নেত্রী শেখ হাসিনা সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের যে মূল্যায়ন করেছেন। তাই দেশও নেত্রীকে জানাই সংগ্রামী অভিনন্দন।