ভারত থেকে আমদানিকৃত শত কোটি টাকার গাড়ি বেনাপোল

    1
    282

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,১৩মার্চ,এম ওসমান, বেনাপোল : যশোরের বেনাপোল বন্দরে পড়ে আছে ভারত থেকে আমদানিকৃত শত কোটির টাকার ২ হাজার ১শ’ ৬৯টি গাড়ি। গাড়িগুলো দুই থেকে ছয় মাসের বেশি সময় বন্দরের শেডে পড়ে আছে। এতে সরকারের রাজস্ব পাওনা রয়েছে কমপক্ষে ৫০ কোটি টাকা। আমদানিকারকদের বারবার তাগিদ দেয়া সত্ত্বেও তারা ছাড় না করানোর কারণে শোকজ নোটিশও পাঠানো হয়েছে। বলা হয়েছে, দ্রুততম সময়ের মধ্যে ছাড় না করালে এসব গাড়ি নিলামে তোলা হবে।  আমদানিকারকরা বলছেন, দেশের এখন চলছে রাজনৈতিক অস্থিরতা। যার প্রভাব পড়েছে ব্যবসায়। এতে গাড়ির ব্যবসায় মন্দাভাব বিরাজ করছে। আবার টানা অবরোধ-হরতালে গাড়ি নিয়ে আসাও যাচ্ছে না। তাই গাড়ি ধীরে ছাড় করানো হচ্ছে।
    কাস্টমস সূত্র জানায়, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে বেনাপোল দিয়ে গাড়ি আমদানি করা হয়েছে ২৩ হাজার ৮শ’ ৯৭টি। যার মধ্যে খালাস হয়েছে ২৩ হাজার ২শ’ ৬৭টি। আর চলতি ২০১৪-১৫ অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসে আমদানি হয়েছে ১৫ হাজার ১শ’ ৬৭টি। খালাস হয়েছে ১৪ হাজার ৭শ’ ৯৭টি। এই দুই অর্থ বছরের মোট ১ হাজার গাড়িসহ আগের থাকা ১হাজার ১শ’ ৬৯টি মিলে মোট ২ হাজার ১শ’ ৬৯টি গাড়ি বর্তমানে বন্দরের শেডে পড়ে রয়েছে। বন্দরে পড়ে থাকা গাড়ির আমদানিকারক হলো নিটল গ্রুপ, র‌্যাংগস মোটরস, উত্তরা মোটরসসহ চট্টগ্রামের কয়েক প্রতিষ্ঠান। এসব গাড়ির মধ্যে রয়েছে ট্রাক, পিকআপ ও ছোট প্রাইভেটকার।
    বেনাপোল কাস্টমসের সহকারী কমিশনার অনুপ কুমার জানান, নিয়ম আছে আমদানির ৩০ দিন পার হলে চিঠি দিয়ে ছাড় করানোর তাগিদ দেয়া। এতে সাড়া না পেলে নিলামে উঠানোর। গাড়িগুলো দেশের বড় ব্যবসায়ীরা আমদানি করায় দুই মাস ছাড় দেয়া হয়। কিন্তু বারবার চিঠি দিলেও তারা জবাব দিচ্ছেন না। তাই বাধ্য হয়ে শোকজ করা হয়েছে। এতেও খালাস না করলে নিলাম হবে।
    র‌্যাংগস মোটরসের জেনারেল ম্যানেজার সত্যজিৎ সাহা জানান, যেদিন ছাড় করাবো সেদিন থেকে আমাদের ব্যাংক সুদ দিতে হয়। ছাড় করানোর পরে যদি গাড়ি বিক্রি না হয় তাহলে লোকসান গুনতে হবে। তাই তিনি আরও সময় চান।
    নিটল গ্রুপের ডিজিএম গোলাম রব্বানি জানান, দেশে যে অস্থিতিশীল পরিবেশ চলছে তাতে গাড়ি বেনাপোল থেকে নিয়ে আসা যাচ্ছে না। আবার নিয়ে এলেও বিক্রি হচ্ছে না। তাই ধীরে ধীরে গাড়ি ছাড় করাচ্ছি।
    সিএন্ডএফ এজেন্টের যুগ্ম-সম্পাদক জামাল হোসেন জানান, শেডে অনেকদিন ধরে গাড়িগুলো পড়ে রয়েছে। এতে সিএন্ডএফ এজেন্টরাও কমিশন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
    বেনাপোল কাস্টমের যুগ্ম-কমিশনার আতিকুর রহমান জানান, ২০১৩ সালের ১৮ মে বেনাপোলে নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাহাজাহান খানের সঙ্গে বন্দর কর্তৃপক্ষ ও কাস্টমসের বৈঠক হয়। বৈঠকে মন্ত্রী নির্দেশ দেন পড়ে থাকা গাড়ি নিলামের জন্য। আমরা আমদানিকারকদের চিঠি দিয়েছি। যদি চলতি মাসের মধ্যে ছাড় না করে তাহলে আগামী মাসের প্রথমদিকে নিলাম ডাকা হবে।
    এ ব্যাপারে যশোর চেম্বার অব কর্মাসের সাবেক সহ-সভাপতি সাজ্জাদুর রহমান সুজা বলেন, বেনাপোল বন্দর থেকে আমদানি করা গাড়ি ছাড় না হওয়ার কারণ হলো ব্যবসায়িক মন্দা। ব্যাংকের উচ্চ সুদ নিয়ে ব্যবসা করা বর্তমান সময়ে খুবই কঠিন। কেউ টাকা দিয়ে গাড়ি কিনে নিলামে দিতে চায় না। হয়তোবা বাধ্য হয়ে তারা গাড়ি ছাড় করাচ্ছে না।