ব্রিটিশ নাগরিক ইউনা হত্যার দ্বায় স্বীকার করলেন সোহেল

    0
    257

    আমারসিলেট 24ডটকম,০৫অক্টোবর,সাব্বির এলাহি:মৌলভীবাজার জেলার ব্রিটিশ নাগরিক সেহলিনা ইলাত ইউনা হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার কথা আদালতে স্বীকার করেছে গ্রেপ্তারকৃত সোহেল। সোহেল গতকাল দুপুরে ইউনা হত্যাকান্ডের দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়ার মাধ্যমে আলোচিত এ হত্যাকান্ডের কারণ উদঘাটিত হয়েছে বলে জানা যায় । গত বৃহস্পতিবার রাতে মৌলভীবাজার মডেল থানা পুলিশ হবিগঞ্জের চুনারুঘাট থেকে সোহেলকে গ্রেপ্তার করে।
    জানা যায়, গত ২৯ জুন রাতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের গুমড়া নামক এলাকায় নিজ প্রাইভেট কার থেকে বাংলাদেশী বংশোদ্ভোত ব্রিটিশ নাগরিক সেহলিনা ইলাত ইউনার মৃত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত ইউনার  ভাই বাদি হয়ে মৌলভীবাজার মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন ।এই ঘটনার সাথে জড়িত মূল হোতাকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ দীর্ঘদিন থেকে অনুসন্ধান করে আসছিল।
    ইউনা হত্যাকান্ড মামলার  তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই দেলোয়ার হোসেন গত বৃহস্পতিবার রাতে হবিগঞ্জ জেলার  চুনারুঘাট উপজেলার আমুরোডবাজার থেকে লুৎফুর রহমানের ছেলে সোহেল আহমদকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃত সোহেল মৌলভীবাজারের বড়কাপন এলাকায় বসবাস করলেও তার দাদার বাড়ি চুনারুঘাটের ডোরারোক গ্রামে। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকান্ডের দায় স্বীকার করে সোহেল । এরপর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় সোহেল । জবানবন্দি দেয়ার পরে আদালত তাকে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
    আদালতে সোহেলের স্বীকারোক্তি মুলক জবানবন্দি থেকে জানা যায়, মৌলভীবাজার সদর উপজেলার উত্তর মোলাইম গ্রামের জয়নূর রহমানের মেয়ে ইউনা,২০১০ সালে প্রায় ৪ বছর পূর্বে সিলেটের গোলাপগঞ্জের নগর গ্রামের জামিলুর রশীদের সাথে বিয়ে হয়। গত ২৭ মে যুক্তরাজ্যে স্বামীকে রেখে বাবার বাড়ি মৌলভীবাজারে আসেন ইউনা,দেশে আসার পর মৌলভীবাজার শহরের টিবি হাসপাতাল সড়কের নানীর বাসায় প্রায়ই অবস্থান করতো  এবং বন্ধুদের নিয়ে প্রায়ই নিজের প্রাইভেট কার নিয়ে ঘুরে বেড়াতো। এ সুবাদে সোহেলের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় সোহেলের সাথে যোগাযোগ করে ইউনা। ইউনা প্রাইভেট কার নিয়ে শ্রীমঙ্গল রোডের নিতেশ্বর এলাকায় নীল আকাশ বার্গার হাউজে গিয়ে কিছু সময় কাটান। তখন বারবার সোহেলের ফোনে কল আসায় ইউনা বিরক্ত হয়। রাগ করে বার্গার হাউজের বিল পরিশোধ করে শহরের দিকে রওয়ানা দেয়। তখন আবার ফোনে কল আসলে ইউনা ও সোহেলের মধ্যে তীব্র কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে সোহেল গাড়ি থামিয়ে গুমড়া নামক স্থানে নেমে যায় এবং ড্রাইভিংয়ে থাকা ইউনাকে ইটের টুকরো দিয়ে মাথায় আঘাত করলে সে মারা যায়। এরপর সে পালিয়ে যায়। ২৯ জুন রাত সাড়ে ১০টার দিকে ইউনাঢ় লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। দীর্ঘ  তিন মাস অনুসন্ধান শেষে পুলিশ সোহেলকে গ্রেপ্তার করায় ব্রিটিশ নাগরিক হত্যাকান্ডের রহস্যে উন্মোচিন হলো।
    মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন ইউনার হত্যাকারীকে শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের সত্যতা স্বীকার করে জানান গ্রেপ্তারকৃত সোহেল হত্যাকান্ডের দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।