ব্রাহ্মনবাড়িয়ায় শিলাবৃষ্টি, টর্ণেডোয় নিহত ১০, আহত আহত ৫ শতাধিক, ২০ গ্রাম লন্ডভন্ড

    0
    483

    ব্রাহ্মনবাড়িয়ায় শিলাবৃষ্টি, টর্ণেডোয় নিহত ১০, আহত আহত ৫ শতাধিক, ২০ গ্রাম লন্ডভন্ড।

    ভয়াবহ টর্নেডোর আঘাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিনটি উপজেলার ২০টি গ্রাম লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। শিশুসহ নিহত হয়েছেন ১০ জন। আহত হয়েছেন কমপক্ষে পাঁচ শতাধিক ব্যক্তি। tornedo at B baria
    নিহতদের মধ্যে সদর উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের উরশিউড়া গ্রামের ডলি রানী দে (৩০), একই ইউনিয়নের পাতিরহাতা গ্রামের লাভলী বেগম (৩০), সুমা আক্তার ও জয়নাল মিয়ার পরিচয় পাওয়া গেছে। বাকিদের পরিচয় জানা যায়নি। গুরুতর আহত অন্তত পাঁচ শতাধিক মানুষকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের সদর হাসপাতালসহ শহরের বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।
    জেলা সদর হাসপাতালে আবাসিক চিকিত্সা কর্মকর্তা আবু সাঈদ ও আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিত্সা কর্মকর্তা মো. শাহ আলম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
    স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক শিলাবৃষ্টি শুরু হয়। এক পর্যায়ে সদর উপজেলা, বিজয়নগর ও আখাউড়া উপজেলায় টর্নেডো আঘাত হানে।
    এতে সদর উপজেলার রামরাইল, সুলতানপুর, মাছিহাতা ও বাসুদেব ইউনিয়নের সোহাতা, মোহাম্মদপুর, উড়শীউড়া, পাতিরহাতা, চান্দপুর, চিনাইর, চাপুইর, পাইকপাড়া, বাসুদেব, ভাতশালা, জারুলতলা ও খেয়াই গ্রাম ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ছাড়া বিজয়নগর উপজেলার সিঙ্গারবিল, পত্তন ও আলীনগর এবং আখাউড়ার আমোদাবাদসহ প্রায় ২০টি গ্রাম টর্নোডোতে লন্ডভন্ড হয়ে যায়।
    টর্নেডোতে গ্রামগুলোর কয়েক শত কাঁচা বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বোরো ফসলি জমির ধান ব্যাপকভাবে নষ্ট হয়েছে।
    জানা গেছে, টর্নেডোর আঘাতে সদর উপজেলার উড়শিউড়ায় অবস্থিত জেলা কারাগারের পূর্ব পাশের দেয়াল ধসে পড়েছে। এ ঘটনায় এক কারারক্ষী নিখোঁজ রয়েছে।
    টর্নেডোর সময় কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কে একটি যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পার্শ্ববর্তী খাদে পড়ে যায়। গ্যাস-চালিত অটোরিকসাসহ বেশ কিছু গাড়ির উপর গাছ ভেঙে পড়ে। এতে যাত্রীরা গুরুতর আহত হন। গাছ ভেঙ্গে পড়ে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। ঘটনার পরপরই সংশ্লিষ্ট এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ হয়ে যায়।
    আখাউড়া উপজেলায় টর্নেডোর আঘাতে অর্ধশত লোক আহত হয়েছেন। বিধ্বস্ত হয়েছে দুই শতাধিক বাড়িঘর।
    ঘটনার পরপরই গ্রামবাসী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আহত ও নিহতদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে।
    সদর হাসপাতালে আবাসিক চিকিত্সা কর্মকর্তা আবু সাঈদ পাঁচ জন নিহত হওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
    আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিত্সা কর্মকর্তা মো. শাহ আলম পাঁচ জন নিহত হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
    ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিপন চাকমা টর্নেডোতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির কথা স্বীকার করে বলেন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করছি।

    ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক নূর মোহাম্মদ মজুমদার প্রত্যেক নিহতের পরিবারকে ২০ হাজার এবং আহতের পরিবারকে পাঁচ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এ ছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেক পরিবারকে ২০ কেজি চাল ও দুই বান্ডিল টিন দেওয়ার ঘোষণা দেন।

    ব্রাহ্মনবাড়িয়ার সরাইল উপজেলায় বিভিন্ন এলাকায় প্রচন্ড শিলাবৃষ্টি হচ্ছে বলে জানা গেছে। সরাইলের কৃষক জিএম ছাইফুল জানিয়েছেন, এতে আগাম বোরো ফসলের ব্যাপক তির সম্ভাবনা রয়েছে।
    ব্রাহ্মনবাড়িয়া সদও ও বিজয়নগরে টর্ণেডোয় নিহত ৫ আহত শতাধিক বহু বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে জানা গেছে।