বুধ ও বৃহস্পতিবার ১৮ দলীয় জোটের হরতাল এবং রবিবার হেফাজতের হরতাল

    0
    380

    ঢাকা, ০৭ মে : হেফাজতের নেতাকর্মীদের হতাহতের প্রতিবাদে প্রতিদিন ১২ ঘণ্টা করে দুই দিনে মোট ২৪ ঘণ্টার হরতাল দিয়েছে বিএনপি ১৮ দলীয় জোট। আগামীকাল ৮ মে বুধবার এবং পরদিন ৯ মে বৃহস্পতিবার সারাদেশে সকাল সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে তারা। আজ মঙ্গলবার বাদ আছর নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনেসহ ও সারাদেশে গায়েবানা জানাজা। সোমবার রাতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে তার গুলশান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দল ও জোটের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে আলাদা আলাদা বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বৈঠক শেষে রাত সাড়ে ১০টার দিকে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, বুধ ও বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সারাদেশে হরতাল পালন করা হবে।

    বুধ ও বৃহস্পতিবার হরতাল দিয়েছে ১৮ দলীয় জোট
    বুধ ও বৃহস্পতিবার হরতাল দিয়েছে ১৮ দলীয় জোট

    সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, হেফাজতের বিরুদ্ধে পরিচালিত সরকারি বাহিনীর গণহত্যা ও নিরস্ত্র আলেমদের ওপর গুলি চালানোর প্রতিবাদে এ হরতালের কর্মসূচির ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি জানান, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে নেয়ার ব্যাপারে সরকারকে দেয়া ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় শেষ হয়েছে। এখন পরবর্তী কর্মসূচি আগামীকাল মঙ্গলবার ঘোষণা করা হবে।
    ড. মোশাররফ বলেন, হেফাজতের শাপলা চত্বরের অবস্থানের সিদ্ধান্ত গণতান্ত্রিক ছিল। সন্ধ্যার পর বাতি নিভিয়ে দিয়ে এক বিভীষিকাময় পরিবেশের সৃষ্টি করা হয়। সেখানে হাজার হাজার আলেমকে হত্যা করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ ঘটনায় লজ্জায় বিশ্বে বাংলাদেশের মাথা নত হয়ে গেছে। তিনি আরো বলেন, রবিবার রাতে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবির যৌথ অভিযানে শাপলা চত্বরে বিদ্যুৎ বন্ধ করে দিয়ে নির্বিচারে গুলিবর্ষণে হাজার হাজার আলেম উলামাকে হত্যা করা হয়েছে।
    বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আর এ গণি, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, এম কে আনোয়ার, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, ড. আবদুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী ইবনে কামাল ইউসুফ, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, সাদেক হোসেন খোকা, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ব্যারিস্টার শাজাহান ওমর, ড. এম ওসমান ফারুক, এম এ মান্নান, মীর নাসির হোসেন, এনাম আহমেদ চৌধুরী, আব্দুল কাইয়ুম, এডভোকেট আহমেদ আযম খান, যুগ্মমহাসচিব বরকত উল্লাহ বুলু, মিজানুর রহমান মিনু, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, এডভোকেট মজিবর রহমান সরোয়ার, মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন আহমেদ, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল কবির খোকন, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এনি, রাজশাহী বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক হারুন আর রশিদ সহমহিলা বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা প্রমুখ।
    ১৮ দলীয় জোটের শরিকদের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসার কথা থাকলেও দল ও জোট নেতাদের সঙ্গে আলাদা বৈঠক করেন খালেদা জিয়া। সোমবার রাত ৯টায় শুরু হয়ে সোয়া ১০টা পর্যন্ত এ দুটো বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ১৮ দলীয় জোটের নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মুস্তাফিজুর রহমান, ইসলামিক পার্টির চেয়ারম্যান আবদুল মবিন, পিপলস লীগের সভাপতি গরীবে নেওয়াজ।

    রবিবার হেফাজতের হরতাল

    ঢাকা, ০৭ মে : আগামী ১২ মে রবিবার সারাদেশে সকাল সন্ধ্যা হরতালের ডাক দিয়েছে হেফাজত। গত ৫ মে রবিবার রাজধানী ঢাকায় কথিত প্রাণহাণীর প্রতিবাদে এ হরতাল ডাকা হয়েছে বলে জানানো হয়। একইসঙ্গে আগামীকাল বুধবার এবং পরশু বৃহস্পতিবার ১৮ দলীয় জোটের ডাকা হরতালেও সমর্থন জানিয়েছে তারা। আজ মঙ্গলবার বন্দরনগরী চট্রগ্রামের হাটহাজারীর দারুল উলুম মইনুল ইসলাম মাদ্রাসায় হেফাজতের পক্ষ থেকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচী ঘোষণা করা হয়। সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সাহিত্য সম্পাদক আশরাফ আলী নিজামপুরী এ কর্মসূচীর ঘোষণা করেন।
    আগামী ১২ তারিখ সকাল সন্ধ্যা হরতাল ও ১৮ দলীয় জোটের হরতালে সমর্থন এছাড়াও শুক্রবার জুমার নামাজের পরে নিহতদের আত্মার শান্তি ও আহতদের জন্য মসজিদে মসজিদে দোয়ার কর্মসূচী ঘোষণা করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, ১২ তারিখের হরতালের পর ১৩ দফা দাবি আদায়ের জন্য পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবে হেফাজত।
    হাটহাজারী মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও হেফাজতের আমির শাহ আহমদ শফী সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও তিনি ছিলেন না। তবে তার আগে হেফাজতের অন্য নেতারা জানিয়েছিলেন, আহমদ শফী সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ওই সংবাদ সম্মেলনে আহমদ শফীসহ হেফাজতের তেমন কোনো শীর্ষ নেতাই উপস্থিতি ছিল না। এসময় শফী মাদ্রাসার ভেতরেই ছিলেন।

    হেফাজতীদের তাণ্ডবে যে ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে তার দায়ভার বিএনপি ও তার নেত্রী খালেদা জিয়াকেই নিতে হবে : রাশেদ খান মেনন

    ঢাকা, ০৬ মে : ঢাকায় হেফাজতের অবরোধ শেষে শাপলা চত্বরে সমাবেশের নামে পল্টন-মতিঝিল-বিজয় নগর, বায়তুল মোকাররম, স্টেডিয়াম, বঙ্গবন্ধু এভিনিউ, নয়া পল্টন, ফকিরাপুলসহ বিভিন্ন স্থানে তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও স্থানীয় সংসদ সদস্য কমরেড রাশেদ খান মেনন পরিদর্শন করেছেন। এ সময় তার সাথে ছিলেন আওয়ামী লীগের নেতা কিসমত জাহান আকন লাভলু, কামাল চৌধুরি, ডা. দিলীপ রায়, এনামুল হক আবুল, ফারজানা ডলি, ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা কামরূল আহসান, কিশোর রায়, আবুল হোসাইন, মোস্তফা আলমগীর রতন, রফিকুল ইসলাম সুজন প্রমুখ।

    হেফাজতীদের তাণ্ডবে যে ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে তার দায়ভার বিএনপি ও তার নেত্রী খালেদা জিয়াকেই নিতে হবে : রাশেদ খান মেনন
    হেফাজতীদের তাণ্ডবে যে ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে তার দায়ভার বিএনপি ও তার নেত্রী খালেদা জিয়াকেই নিতে হবে : রাশেদ খান মেনন

    মেনন এ সময় বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলেন। তিনি এ সময় ধর্মের নামে অরাজকতা, নৈরাজ্য ও তাণ্ডবের সাথে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধের আহ্বান জানান। তিনি জান-মালের নিরাপত্তার জন্য ব্যবসায়ীদের সজাগ থাকারও অনুরোধ করেন।  

    ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি কমরেড রাশেদ খান মেনন এমপি হেফাজতের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন শেষে ৬ মে বিকেল ৪.৩০ মিনিট শহীদ আসাদ মিলনায়তনে জরুরি প্রেস ব্রিফিং-এ বলেন,  আজকে অত্যন্ত দুঃখভরাক্রান্ত হৃদয়ে আপনাদের সামনে আমি হাজির হয়েছি। আপনারা গতকাল মতিঝিল শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের অবারোধ কর্মসূচির অংশ হিসেবে সমাবেশকে কেন্দ্র করে পল্টন মোড় থেকে শুরু করে মতিঝিল হয়ে ইত্তেফাক মোড় ও অন্যদিকে বিজয় নগর থেকে নয়াপল্টন হয়ে ফকিরাপুল পর্যন্ত হেফাজতীদের তাণ্ডব প্রত্যক্ষ করেছেন। আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর যৌথ অভিযানের আগে রাত ২.৩০ মিনিট পর্যন্ত তারা তাদের তাণ্ডব অব্যাহত রেখেছে এবং তারা যখন শাপলা চত্বর ছেড়ে চলে যায় তখনও মতিঝিল শাপলা চত্বরের দু’পাশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও রাস্তার পাশে রাখা গাড়ি তাদের তাণ্ডব থেকে রক্ষা পায়নি। আপনারা জানেন এ অঞ্চল আমার নির্বাচনী এলাকা। ঢাকার প্রাণকেন্দ্র এই মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকায় যেমন বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের অফিস ও স্থাপনা রয়েছে, তেমনি এই অঞ্চলের রাস্তার দুপাশের বিপুল সংখ্যক হকার ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা তাদের ছোট ছোট দোকান দিয়ে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে থাকেন। এখানেই জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম বিপনী বিতান রয়েছে। আজ সকালে সমস্ত অঞ্চল পরিদর্শন করে আমি যে দৃশ্য দেখেছি তা ’৭১-এর ঘটনাবলীকেও হার মানায়। এক প্রচণ্ড দানবীয় নৃশংসতা নিয়ে বেলা ১১টায় থেকে হেফাজতে ইসলাম এবং তাদের ছদ্মবরণে জামাত শিবির কর্মীরা প্রথমে পল্টন মোড় ও বায়তুল মোকাররম উত্তর গেট পরে বায়তুল মোকাররম দক্ষিণ গেট ও গুলিস্তান এলাকায় এক চরম সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সৃষ্টি করে। তাদের এই আক্রমণ ছিল পরিপূর্ণভাবে পরিকল্পিত। আজকের সমস্ত ঘটনাবলী দেখে আমার প্রত্যয় জন্মেছে যে, এই তাণ্ডবলীলায় প্রশিক্ষিত বাহিনীই কাজ করেছে। পল্টন মোড় থেকে বিজয় নগর হয়ে কাকরাইল পর্যন্ত রাস্তার উপর যে গাছগুলো ছিল তা কড়াত দিয়ে কাটা হয়েছে এবং একটা দুটো নয় বেশ কিছু করাতই ছিল। অন্যদিকে পল্টন থেকে শাপলা চত্বর হয়ে ইত্তেফাক মোড় পর্যন্ত যে রাস্তার মধ্যেকার আইল্যান্ডে নির্মিত লোহার বেস্টনিগুলোকে একইভাবে প্রশিক্ষিত বাহিনী দ্বারা কেটে ফেলা হয়েছে। কমিউনিস্ট পার্টি অফিস, মুক্তিভবনের লোহার ক্যাচি গেটটি গ্রোড়ালো বিস্ফোরক দিয়ে এমনভাবে উপড়ানো হয়েছে যে, গেটটি অন্যপারে গিয়ে পড়েছে এবং মুক্তি ভবনের অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও কমিউনিস্ট পার্টির অন্য কক্ষগুলোতে গান পাউডার দিয়ে আগুন দেয়া হয়। ঐ ভবনের বিপরীতে র‌্যাংগস ভবনেও একইভাবে আক্রমণ চালানো হয়। ঐ বিল্ডিং-এ অবস্থানরত দৈনিক সকালের খবরের ও পাশে অবস্থিত বাসসের সাংবাদিকরাও আটকা পড়েন। হাউস বিল্ডিং ফিন্যান্স কর্পোরেটিং ভবনের নিচ তলায় রাখা সমস্ত গাড়ী ভস্মিভূত করা হয়েছে। তার পাশের ভবন আইডিয়াল প্রডাক্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের আক্রমণের আর একটি লক্ষ্য ছিল সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের অফিস কর্মচারিদের বহনকারী বাসসমূহ। কয়েকশত লোক গেট ভেঙ্গে দেয়াল টপকিয়ে ১৮টি বাস ভস্মিভূত করে এবং ২৮টি বাস ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এর মধ্যে ৬টি নতুন বাস ছিল। হেফাজত জামাতের এই বাহিনী ব্রাক ব্যাংকের এটিএম বুথ ভেঙ্গে টাকা লুট করে নিয়ে যায়। এরকম বেশ কয়েকটি ব্যাংকে হামলা চালায়। তাদের আর একটি লক্ষ্য ছিল বায়তুল মোকাররমের সোনার দোকানগুলো লুট করা। তারা বিভিন্ন সোনার দোকানে আক্রমণ চালায়।

    কমরেড রাশেদ খান মেনন আরও বলেন, হেফাজতী জামাত-শিবিরের এই তাণ্ডবের মূল শিকার হয়েছে রাস্তার দু’পাশে থাকা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। তারা কার্যত সর্বশান্ত হয়ে গেছেন। এদেরকে কেন আক্রমণ করা হলো সেটা বোধগোম্য নয়। রাস্তার দু’পাশে কাপড়ের দোকান, বইয়ের দোকান, চশমার দোকান, মনিহারী দোকান, ক্যাসেটের দোকানসহ নানাপ্রকার পশরা সম্পূর্ণ ভস্মিভূত হয়েছে। মুক্তিভবনের নিচে ও বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে বইয়ের দোকানগুলো বিশেষ করে ইসলামী বইয়ের দোকান থেকে কোরআর শরীফ, হাসিদ ও অন্যান্য ধর্মীয় বই নিয়ে এসে আগুনে নিক্ষেপ করে। পল্টন মোড় ও বায়তুল মোকাররম দক্ষিণ গেটে গেলে আপনারা এর নিদর্শন দেখতে পাবেন। যে ইসলামের হেফাজতের জন্য তারা এই তাণ্ডব করেছে সেই ইসলামই তাদের হাতে নিগৃহীত হলো। এসব ঘটনাবলীই তার প্রমাণ। বায়তুল মোকাররমের মুসল্লিরাও এসময় নামাজ পড়তে যেতে পারেনি। আসলে ইসলাম নয়, হেফাজত ইসলাম জামাতের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করার জন্যই তারা এই তাণ্ডব অনুষ্ঠিত করে।

    কমরেড রাশেদ খান মেনন এমপি বলেন, সবচেয়ে দুর্ভাগ্যজনক যে, হেফাজত ও জামাতের এই তাণ্ডবে বিরোধী দল সরাসরি সহযোগিতা করেছেন। হেফাজতী জামাতীদের সাথে তাদের কর্মীদের ঘোষণা দিয়ে অংশগ্রহণ ছিল। বিশেষ করে হেফাজতীদের পাশে দাড়ানোর জন্য বিরোধী দলীয় নেত্রী খালেদা জিয়ার আহ্বানের পরেই এই তাণ্ডব চূড়ান্ত রূপ গ্রহণ করে। এই তাণ্ডবের ফলে যে ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে তার দায়ভার বিএনপি ও তার নেত্রী খালেদা জিয়াকেও গ্রহণ করতে হবে।

    ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি কমরেড রাশেদ খান মেনন এমপি বলেন, আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি। হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা পরিপূর্ণভাবেই রাজনৈতিক দাবি। তাদের এই দাবি মেনে নিলে দেশকে মধ্যযুগীয় পর্যায় নিয়ে যাওয়া হবে। হেফাজতকে কোন প্রকার ছাড় না দেয়ার জন্য আমরা আহ্বান জানিয়েছিলাম। তারপরও গণতন্ত্রের স্বার্থে সরকার তাদেরকে তাদের কর্মসূচির পালনের সকল প্রকার সহযোগিতা করেছে। এই মোনাফেকরা কত ভয়ংকর হতে পারে গতকালের ঘটনাবলী তার প্রমাণ। বস্তুতঃ জামাতের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্যই তারা এই দাবি নিয়ে মাঠে নেমেছে। বিরোধী দল বিএনপি তাদের সাথে যুক্ত হয়ে আল্টিমেটাম দিয়ে তাকেই আরও এগিয়ে নিয়েছে। গতকালের ঘটনায় হেফাজত-জামাত-বিএনপি ষড়যন্ত্রের চেহারা এতই স্পষ্ট যে, এখন আর মানুষকে বলে প্রমাণ করতে হবে না। আমরা এই ঘটনাবলীর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের কর্মকাণ্ড যেন আর পরিচালনা করতে না পারে তার জন্য কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দাবি জানাচ্ছি।

    রাশেদ খান মেনন এমপি বলেন, হেফাজত-জামাতের এই তাণ্ডবে যে সকল হকার ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সর্বশান্ত হয়েছে তাদের পাশে দাড়ানো প্রয়োজন। এবং সেই লক্ষ্যে তাদেরকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের দায়িত্ব বিরোধী দল নেত্রীকেই নিতে হবে। আমি একই সঙ্গে সরকারকেও এই দুঃস্থ মানুষগুলোকে সহযোগিতার জন্য ত্রাণ নিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি। এই বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। আমি আশা করি দেশের মানুষও এইসব মানুষের পাশে দাড়াবে। সবাইকে ধন্যবাদ।

    সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দলের পলিটব্যুরোর সদস্য কামরুল আহসান ও হর্কার্স ফেডারেশনের সভাপতি এম এ কাশেম।