বস্তাভর্তি সিল মারা ব্যালট উদ্ধার ! শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

    0
    461

    ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলে ভোটের আগেই বস্তাভর্তি সিল মারা ব্যালট উদ্ধারের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক শবনম জাহানকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। নতুন প্রভোস্টের দায়িত্ব পেয়েছেন অধ্যাপক মাহবুবা নাসরীন।

    বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি মো. আখতারুজ্জামান বলেছেন, “বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলের প্রাধ্যক্ষ ড. শবনম জাহানকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক মাহবুবা নাসরিনকে নতুন প্রাধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।”

    আজ (সোমবার) সকাল ৮টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি হলে একসঙ্গে ভোট শুরু হওয়ার কথা থাকলেও কুয়েত মৈত্রী হলে ভোটের চিহ্ন দেওয়া বস্তাভর্তি ব্যালট পেপার পাওয়া গেলে সকাল সাড়ে ৭টা থেকেই বিক্ষোভ শুরু হয়। খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর গোলাম রব্বানী এবং উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ সেখানে গেলে হলের গেইটে তাদের ঘিরে ধরে ভোট বাতিলের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকে শিক্ষার্থীরা।

    প্রভোস্ট অধ্যাপক শবনম জাহান 

    পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এক পর্যায়ে হলে পুলিশ ঢোকার চেষ্টা করলেও শিক্ষার্থীদের বাধায় তারা ফিরে যায়। হল সংসদ নির্বাচনের বিপুল পরিমাণ ব্যালট দেখিয়ে শিক্ষার্থীরা সাংবাদিকদের বলেন, আগের রাতেই এসব ব্যালটে ‘ক্রস চিহ্ন’ দিয়ে ভোটের চিহ্ন দিয়ে রাখা হয়েছে। যেসব নামে ভোটের চিহ্ন দেওয়া হয়েছে সেগুলো ছাত্রলীগের হল প্যানেলের প্রার্থীদের। তাদের অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কুয়েত মৈত্রী হলে ভোটগ্রহণ স্থগিত করে দেন।

    সকাল ১০টার দিকে কুয়েত মৈত্রী হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানী গণমাধ্যমের কাছে বলেছেন, ‘শিক্ষার্থীদের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। ব্যালটে ভোট দেওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাই এই হলের প্রভোস্ট ড. শবনম জাহানকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। নতুন প্রভোস্টের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ড. মাহবুবা নাসরিনকে।’

    এরপর সবার সহযোগিতায় আবার ভোট শুরু করার আশ্বাস দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানী। এরপর বেলা ১১টা ১০ মিনিটে ভোট শুরু হয়েছে।

    ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হলে দীর্ঘ লাইন

    হলে হলে ডামি লাইন তৈরির অভিযোগ

    ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসংসদ নির্বাচনে হলে হলে ভোটারের ডামি লাইন তৈরি করে রাখার অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষার্থীদের ভোট দেয়া ঠেকাতে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগ এই পরিস্থিতির সৃষ্টি করে রেখেছে বলে অভিযোগ করেছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা।

    ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কোটা সংস্কার আন্দোলনের নূরুল হক নূর শহীদুল্লাহ হলে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে গিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, একটি ছাত্র সংগঠন যারা হলে প্রভাব বিস্তার করে রেখেছে, তাদের নেতৃত্বে ভোটার ছাড়াও অন্যদের দিয়ে দীর্ঘ জটলা তৈরি করে রেখেছে। তাদের কর্মীদের লাইনে দাঁড়িয়ে জটলা সৃষ্টির জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ভোটকেন্দ্রে প্রবেশের একটি লাইন থাকা সত্ত্বেও বিপুল সংখ্যক বাড়তি মানুষ প্রশাসনের আশ-পাশে ঘোরাফেরা করছে।

    ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান এ সম্পর্কে বলেন, কয়েকটি হলে কৃত্রিম জ্যাম তৈরি করে রাখা হয়েছে। ছাত্রলীগই এই জ্যাম তৈরি করেছে। এছাড়া বহিরাগতরাও এই ভোটদানে অংশ নিচ্ছে।

    তবে, এ ব্যাপারে বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান হলের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও প্রভোস্ট এসএম মফিজুর রহমান বলেন, বাকি সময়ের মধ্যে ভোট সম্পন্ন করতে পারব। আমরা লাইনের র‌্যান্ডম চেক করছি, কাউকে এমন পায়নি।পার্সটুডে