নড়াইলে ৩ শতাধিক দরিদ্র কার্ডধারীকে অপমানের অভিযোগ এক চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে

0
294
নড়াইলে ৩ শতাধিক দরিদ্র কার্ডধারীকে অপমানের অভিযোগ এক চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে
নড়াইলে ৩ শতাধিক দরিদ্র কার্ডধারীকে অপমানের অভিযোগ এক চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে

সুজয় বকসী, নড়াইল প্রতিনিধি: ৩ শতাধিক হতদরিদ্র কার্ডধারীকে অপমান করে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে নড়াইল সদরের বিছালী ইউপি চেয়ারম্যান হিমায়েত হুসাইন ফকির বিরুদ্ধে । রবিবার ২৮ আগস্ট সকাল ১০টার দিকে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় বিছালী ইউনিয়নের এসব কার্ডধারীকে অনলাইন করে দেওয়ার কথা বলে ইউনিয়ন পরিষদ কাউন্সিল অফিসের সামনে নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান অপমান করে তাড়িয়ে দেন। এসব ভূক্তভোগিরা প্রতিবাদ করলে চেয়ারম্যান ও তার লোকজন কার্ডধারীদের অপমান-অপদস্থ ও হুমকি-ধমকি দেয়।

এ সময় উপস্থিত দু’মেম্বার এর প্রতিবাদ করলে তাদেরও দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয় বলে জানা গেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে ভূক্তভোগিরা নড়াইল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসে এসে তার সাথে দেখা করে ঘটনার তদন্ত করে সুষ্ঠ সমাধান চেয়েছেন।
জানা গেছে, খাদ্য মন্ত্রনালয়ের অধীন খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় সদর উপজেলার বিছালী ইউনিয়নে মোট কার্ডধারী রয়েছে ৭শ ৪০জন। এসব কার্ডধারী এতোদিন নিয়োমিত কার্ড এর মাধ্যমে চাল পেয়ে আসছিল। কিন্তু বর্তমান চেয়ারম্যান হিমায়েত হুসাইন ফকির ক্ষমতা গ্রহনের পর ইউনিয়নে প্রায় অর্ধেক কার্ডধারীকে বাদ দিয়ে তার পছন্দের ব্যক্তিদের কার্ড দেবার চেষ্টা করছেন।
এ বাপারে বিছালী ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের কার্ডধারী হাসলি বেগম ও বিধবা হোসনে আরা বেগম বলেন, রবিবার সকালে চেয়ারম্যান ইউনিয়নে মাইকে প্রচার করে যাদের কার্ড নবায়ন করতে বাকি রয়েছে তাদের ইউনিয়ন পরিষদ অফিসে এসে নবায়ন করতে। আমরা সকাল ৯টার মধ্যে ইউনিয়ন পরিষদে আসার পর আমাদের সবাইকে অনলাইন না করিয়ে বলা হয় তোমাদের কার্ড নবায়ন করা হবে না। কারণ জানতে চাইলে কোনো উত্তর দেয়নি। আমরা এর প্রতিবাদ করলে আমাদের চেয়ারম্যানের লোক হিসেবে পরিচিত ইসমাইল ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেছে। চেয়ারম্যান বলেছেন, মির্জাপুর গ্রামের লোকজন আমাকে ভোট দেয়নি। সেজন্য এ এলাকার মানুষকে কার্ড দেব না।
এ প্রসঙ্গে মির্জাপুর গ্রামের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার ইমরান হোসেন বলেন, মির্জাপুর, আড়পাড়া ও রুখালি এই তিনটি গ্রামের তিনি ডিলার। এখানে কার্ডধারীর সংখ্যা ৪শ ৮টি। সেখানে ৫০টি কার্ড রেখে বাকিদের বর্তমান চেয়ারম্যান কার্ড নবায়ন করতে গড়িমসি করছেন।
এ বিষয়ে বিছালী ইউপি ২নং ওয়ার্ড মেম্বর মইনুদ্দিন বলেন, সকালে কার্ডধারীদের অনলাইনে করাতে নিয়ে গেলে চেয়ারম্যান তঞ্চকতা শুরু করে। পরে প্রতিবাদ করলে চেয়ারম্যান আমাকে পা ভেঙ্গে দেবে এবং গলা কেটে ফেলবে বলে হুমকি দেয়। পরে ইউএনও স্যারের কাছে আসলে তিনি (ইউএনও) ইউপি চেয়ারম্যানকে জানিয়েছেন, বিশেষ কোনো কারণ ছাড়া কাওকে বাদ দিতে নিষেধ করেছেন।
এ ব্যাপারে বিছালী ইউপি চেয়ারম্যান হিমায়েত হুসাইন ফকিরকে এ নিউজ লেখার সময় কয়েকবার ফোন করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এ ব্যাপারে সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক পলাশ চন্দ্র মুখার্জ্জী বলেন, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় হতদরিদ্র মানুষ বছরে ৫মাস কেজি প্রতি ১০টাকা করে চাল পায়। প্রতি কার্ডধারী ৩০ কেজি করে চাল পায়। সরকারি ভাবে স্বচ্ছতা আনতে এবং আপডেট করতে ১ আগস্ট থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় কার্ড ধারীদের কার্ড নবায়ন করার কথা। বিছালী ইউনিয়নের কার্ডধারীদের ব্যাপারে ইউএনও মহোদয় বলেছেন বিধি মোতাবেক ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া ইসলাম জানান, ভূক্তভোগিরা এসেছিলেন, তাদের জানিয়েছি কার্ডধারীরা বিধি মোতাবেক সবাই থাকবেন।