নরসিংদীতে ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে নিহত-৪,আহত-৩০

0
612
নরসিংদীতে ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে নিহত-৪,আহত-৩০
ছবি সংগৃহীত

আমার সিলেট ডেস্কঃ নরসিংদীতে ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ৪ জন নিহতের সংবাদ পাওয়া গেছে । এ ঘটনায় ১০ জন গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৩০ জন। গতকাল সকালে সদর উপজেলার আলোকবালী ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের নেকজানপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তাহের নামের একজনকে আটক করেছে পুলিশ। নিহতরা হলেন,নেকজানপুর গ্রামের কটুমিয়ার ছেলে আমির হোসেন (৫০) একই গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে আশরাফুল (২০), আব্দুল হক মিয়ার স্ত্রী খোরশেদা বেগম খুসু (৫৫) ও খায়রুল ইসলাম (৩০)।

আহতরা হলেন, খায়রুল (২৮), বাদশা মিয়া (৩২), আবুল খায়ের (৪০), হানিফ (৪৫), আনিস মিয়া (৪২), আব্দুল লতিফ (৪৫), আহসানুল্লাহ (২৬), শওকত মিয়া (২৪), আরিফ (২২), সোনিয়া (১৭), মমিন আলী (৫৫), মাসুমা (২০), মকবুল হোসেন, আকাশ (১৪), জিয়াউর (৩৭), হাসেম (৪৮), মিজান ও বুলু (৫৫)। তাদের ঢাকাসহ নরসিংদীর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আলোকবালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দীপুর সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে ইউপি আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আসাদুল্লাহর দ্বন্দ্ব চলে আসছিলো। ১১ই নভেম্বর আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এই বিরোধ আরও চরমে পৌঁছায়।
এডভোকেট আসাদুল্লাহ স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েও দলীয় নির্দেশে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন।
গত সোমবার ১ নভেম্বর নির্বাচনী মিছিলে অংশ নেয়াকে কেন্দ্র করে ওই এলাকায় একজনকে মারধর করা হয়। এনিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এরই জেরে গতকাল সকালে ৫নং ওয়ার্ডের দুই মেম্বর প্রার্থী আবুল খায়ের ও রিপন মোল্লার সমর্থকরা সংঘর্ষে জড়ায়। উভয়পক্ষ টেঁটা, বল্লম ও অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এ সময় ঘটনাস্থলে গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনজন ও ঢাকায় নেয়ার পর আরও একজন মারা যান। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধসহ কমপক্ষে আরও ৩০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিলে তন্মধ্যে গুলি ও টেঁটাবিদ্ধ ৬ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে। আলোকবালী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মামুন হাসান বলেন, ঘটনার ভয়াবহতা দেখে তাৎক্ষণিক পুলিশকে জানানো হয়। কিন্তু পুলিশ সঠিক সময়ে আসেনি। উল্টো পুলিশ আসাদুল্লাহর বাড়ি পাহারা দেয়। কিন্তু আমাদের বাঁচাতে আসেনি। সংঘর্ষে আহত মমিন আলী বলেন, সকালে গুলির শব্দ শুনে বাসা থেকে বের হয়ে দেখি কাইয়ুম ও রিপনের নেতৃত্বে শত শত লোক অস্ত্র নিয়ে বিভিন্ন বাড়িতে হামলা চালাচ্ছে। এ সময় অনেক বাড়িঘর ভাঙচুর ও আগুন দেন তারা। আলোকবালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দীপু বলেন, নির্বাচনে আমাকে সমর্থন জানিয়ে মনোনয়ন তুলে নিয়েছিলেন আসাদুল্লাহ। ভেবেছিলাম তারা আমার সঙ্গে মিলে গেছে। কিন্তু তারা নানা অজুহাতে আমার সমর্থকদের ওপর হামলা চালায়। সর্বশেষ চারজনকে গুলি করে হত্যা করে।

এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আসাদুল্লাহ বলেন, সংঘর্ষে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। আমি দীপুকে সমর্থন জানিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছি। কিন্তু দুই মেম্বার সমর্থকরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে আমির হোসেন নামের আমার এক আত্মীয়ও মারা গেছেন। নরসিংদী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান গনমাধ্যমকে বলেন, “ঘটনাস্থলে তিনজন ও ঢাকায় নেয়ার পথে একজনের মৃত্যু হয়েছে। মরদেহ নরসিংদী হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে।“