দেশের তথ্যপ্রাপ্তি মানুষের অন্যতম অধিকার গুলোর মধ্যে একটি:প্রধান তথ্য কমিশনার

0
641
দেশের তথ্যপ্রাপ্তি মানুষের অন্যতম অধিকার গুলোর মধ্যে একটি:প্রধান তথ্য কমিশনার

আলী হোসেন রাজন,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:  তথ্য কমিশনের প্রধান তথ্য কমিশনার মরতুজা আহমদ বলেন,কোন কর্মকর্তার অফিসে পাবলিক মানি খরচের ক্ষেত্রে কোন দুর্নীতি হচ্ছে কিনা, সেই জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য এবং দুর্নীতি করে পাবলিকের টাকা লুটপাট হচ্ছে কিনা সেটি দেখার জন্য, এককথায় ‘সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য’ তথ্য অধিকার আইন ২০০৯ আইনটি করা হয়েছে। সেবা নিতে জনগণ আপনার কাছে আসবেনা, আপনাকেই জনগণের দোরগোড়ায় সহজে, দ্রুত ও স্বল্প ব্যয়ে সরকারি সেবা পৌঁছে দিতে হবে।

মৌলভীবাজার পৌর কমিউনিটি সেন্টারে জেলা প্রশাসন ও বাংলাদেশ তথ্য কমিশন আয়োজিত তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ বিষয়ক জনঅবহিতকরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ফুলেল শুভেচ্ছা গ্রহণ করছেন প্রধান তথ্য কমিশনার মরতুজা আহমদ।

তিনি বলেন,দেশের তথ্যপ্রাপ্তি মানুষের অন্যতম অধিকার গুলোর মধ্যে একটি। প্রায় অনেক দেশেই বতর্মানে তথ্য অধিকার আইন আছে। আমাদের দেশেও ২০০৯ সালের ২৯ মার্চ মহান জাতীয় সংসদে এ ‘তথ্য অধিকার আইন’ পাস হয়। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় হচ্ছে আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষই এই আইনটি সম্পর্কে জানে না আর জানলেও এটার প্রয়োগ জানে না। আইনের প্রয়োগ না জেনেই এর সমালোচনা করে। সরকারি, বেসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে কিছু নিদির্ষ্ট তথ্য অবশ্যই প্রকাশ করতে হয়। জন্ম, মৃত্যু, গ্রেপ্তার, মুক্তি এগুলোর বিষয়ে কেউ কোনো তথ্য চাইলে দায়িত্ব প্রাপ্ত কমর্কর্তা তা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দিতে বাধ্য থাকবেনতবে কোনো ফৌজদারি মামলা চলাকালে সে বিষয়ে কোনো তথ্য দেয়া যাবে নাপুলিশ, র‌্যাব, গোয়েন্দা সংস্থা, এনএসআই, এসএসএফ, এনবিআর এই সংস্থাগুলোর বিষয়ে কোনো তথ্য চাওয়া যাবে নাজাতীয় নিরাপত্তার বিষয়, ব্যক্তির উদ্ভাবন এগুলো সম্পর্কেও তথ্য চাওয়া যাবে নাকিন্তু  প্রকাশিত কোনো রিপোর্ট, প্রকাশনা, নিজস্ব কাজ বা বিভিন্ন নিয়মনীতি সম্পর্কে তথ্য চাওয়া যাবেএ ক্ষেত্রে প্রথমে লিখিত আকারে উপজেলার সংশ্লিষ্ট দায়িত¦প্রাপ্ত কমর্কতার কাছে তথ্য চাইতে হবে আবেদনের ২০ কাযির্দবসের মধ্যে ঐ কমর্কতা তথ্য প্রদান করতে বাধ্য থাকবেনযদি তিনি তা প্রদান না করেন তবে আপিল করতে হবে, আপিলেও সুবিধা না পেলে তথ্য কমিশন বরাবর অভিযোগ দায়ের করা যাবেএক্ষেত্রে প্রতিটি ধাপ অবশ্যই লিখিত হতে হবেসঠিকভাবে আইন সম্পর্কে জেনে এর সঠিক প্রক্রিয়া মেনে কাজ করলে এর সুফল জনগণই ভোগ করবে বলে তিনি উল্লেখ করেন

এসময় তিনি প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে বলেন, দেশের কোনো আইনই জনগণকে বিড়ম্বনার জন্য করা হয় না। সরকার জনগণের কল্যাণের স্বার্থে আইন করে। তথ্য আইনটি জনগণের দোরগোড়ায় না নিয়ে গেলে জনগণ এর সুফল বুঝবেনা। তথ্য অধিকার আইন সর্ম্পকে জনগণকে অবহিত করে তাঁদের ক্ষমতায়নে সংশ্লিষ্ট করতে হবে,তা নাহলে এর সুফল পাওয়া যাবে না।

দেশের তথ্যপ্রাপ্তি মানুষের অন্যতম অধিকার গুলোর মধ্যে একটি:প্রধান তথ্য কমিশনার
জেলা প্রশাসন ও বাংলাদেশ তথ্য কমিশন আয়োজিত তথ্য অধিকার আইন-২০০৯ বিষয়ক জনঅবহিতকরণ সভায় উপস্থিতবৃন্দের একাংশ।

জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান এর সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, তথ্য কমিশনের পরিচালক (প্রশাসন) জে.আর. শাহরিয়ার, জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খুদেজা খাতুন। সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) তানিয়া সুলতানা। অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক ব্যাক্তিবর্গ,জনপ্রতিনিধি, মুক্তিযোদ্ধা,সাংবাদিক ও সূধীজন উপস্থিত ছিলেন।

জনঅবহিতকরণ সভা শেষে মৌলভীবাজার সার্কিট হাউজের মুনহলে, জেলা পর্যায়ে তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়। প্রশিক্ষণটি উদ্বোধন করেন প্রধান তথ্য কমিশনার মরতুজা আহমদ। জেলা প্রশাসকের সভাপত্বিতে প্রশিক্ষণটি পরিচালনা করেন তথ্য কমিশনের পরিচালক (প্রশাসন) জে.আর. শাহরিয়ার। প্রশিক্ষণে জেলার বিভিন্ন দপ্তরের প্রধানগণ ও সাংবাদিকসহ মোট ৬০ জন অংশগ্রহণ করেন।