“ঢাকার পতন কে দায়ী” পাকিস্তানের বিশিষ্টজনরা

    0
    193

    আমারসিলেট24ডটকম,২১ডিসেম্বরঃ ১৯৭১’এর গণহত্যায় পাকিস্তানের ভূমিকাকে অমানবিক এবং বৈষম্য বলে উল্লেখ করে বাংলাদেশের কাছে পাকিস্তানের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত বলে মনে করেছেন পাকিস্তানের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। রাজাকার শিরোমণি কাদের মোল্লার ফাঁসি নিয়ে বাংলাদেশ-পাকিস্তানের রাজনীতি ও কূটনীতি যখন উত্তপ্ত, তখন একটি আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তারা। পাকিস্তানের দি এক্সপ্রেস ট্রিবিউন এর বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এ খবর প্রকাশিত হয়।
    গতকাল শুক্রবার লাহোরে সাউথ এশিয়ান ফ্রি মিডিয়া এসোসিয়েশনের (সাফমা) “ঢাকার পতনঃকে দায়ী” শিরোনামের এক আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে আলোচকরা ১৯৭১ এর ভূমিকা নিয়ে স্পষ্টভাবে পাকিস্তানকেই দায়ী করেছেন তারা।সাফমা’র সাংবাদিক খালিদ চৌধুরী মনে করেন, ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিদের ওপর পশ্চিম পাকিস্তান যে নির্যাতন ও বৈষম্যের খড়গ চালিয়েছিল, তা খুবই অমানবিক এবং অবর্ণনীয়।
    আলোচনার সময় খালিদ চৌধুরী আরও বলেন, ১৯৪৮ সালে কায়দে আযম জিন্নাহ যখন পূর্ব পাকিস্তানে ঘোষণা দেন, উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্র ভাষা, তখন বাংলা ছিল উর্দুর চেয়ে প্রাচীন ভাষা। বিশ্বের খুব কম দেশই ধর্মের ওপর ভিত্তি করে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আর ঠিক এ কারণে বাংলাদেশ যে নির্মম বৈষম্যের শিকার হয়েছে, তার জন্য পাকিস্তানের ক্ষমা চাওয়া উচিত।
    সাফমার মহাসচিব ইমতিয়াজ আলম দাবি করেন, হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশনের রিপোর্ট প্রকাশ করা উচিত এবং পাঠ্যভুক্ত করে জানানো উচিত। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশিরা বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। উদাহরণ দিতে গিয়ে তিনি বলেন, পূর্ব পাকিস্তানের একজন বাঙালিও সে সময় মুখ্য সচিব ছিলেন না।
    ইমতিয়াজ আলম আরও বলেন, জামায়াতে ইসলামী ছিল ইয়াহিয়া খানের দোসর। বাঙালিদের ওপর সামরিক অভিযানের জন্য তারাই দায়ী। তিনি বলেন, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক, পাকিস্তান ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয়নি। পশ্চিম পাকিস্তানি জনগণের হাতে বাংলাদেশিরা যে নির্যাতনের শিকার হয়েছে, তার জন্য আমাদের ক্ষমা চাওয়া উচিত।
    এদিকে সাফমার ওই আলোচনায় কনফারেন্স কলের মাধ্যমে অংশ নেন বাংলাদেশি সাংবাদিক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের প্রধান ইমরান খানের বক্তব্যে বিব্রত বাংলাদেশ। পাকিস্তানের প্রতি অনুগত থাকায় কাদের মোল্লার মৃত্যুদন্ড কার্যকর হয়েছে বলে ইমরান খান যে মন্তব্য করেছেন, তার জন্য তাকে ক্ষমা চাইতে হবে। এমনটাই দাবি বাংলাদেশের।পাকিস্তানের আওয়ামী ন্যাশনাল পার্টির (এএনপি) কেন্দ্রীয় মহাসচিব ইহসান উইনি বাংলাদেশিদের সহনশীল জাতি উল্লেখ করে বলেন, সেনাবাহিনী ও বুর্জুয়ারা তৎকালীন পাকিস্তানে একনায়কতন্ত্র চেয়েছিল। কিন্তু বাঙালিদের দাবি ছিল গণতন্ত্র। তিনি আরও বলেন, ১৯৭০সালে বাঙালিদের ওপর সেনা অভিযানের দায় তৎকালীন পাকিস্তানের রাজনৈতিক নেতাদের।
    পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের জনগণের মধ্যে মিল খুবই সামান্য। কিন্তু দেশভাগের জন্য পূর্ব পাকিস্তানকে দায়ী করা হয়। এটি কোনোমতেই ঠিক নয় বলে আমরা মনে করি ।সুত্র,ইন্টারনেট।