জৈন্তাপুরের রাংপানি নদী হতে ইজারা বিহীন পাথর ও বালু উত্তোলন !

0
255

নদী ভাঙ্গন রোধ ও মা-বোনদের ইজ্জ্বত রক্ষায় বিপাকে স্থানীয়রা !

রেজওয়ান করিম সাব্বির, জৈন্তাপুর (সিলেট) প্রতিনিধিঃ সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার রাংপানি নদী হতে অবৈধ ভাবে বালু পাথর আহরণ করছে ৪নং বাংলা বাজার বালু পাথর ব্যবসায়ী সমিতি। আসামপাড়া গ্রামবাসীর অভিযোগ অবৈধ ভাবে বালু পাথর উত্তোলনের ফলে নদীর তীরবর্তী ফসলী জমি নদী গর্ভে বিলীন হচ্ছে। এছাড়া আসামপাড়া গ্রামের ২সহস্রাধিক ছোট-বড়, নারী-পুরুষ নদীর পানিতে গোসল করে। কিন্তু বালু-পাথর উত্তোলনের কারনে ইজ্জ্বত রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। অপরদিকে সরকার হারাচ্ছে মোটা অংকের রাজস্ব।

সরজমিনে রাংপানি নদীর চার নম্বর বাংলা বাজার ব্রীজ সংলগান স্থান হতে প্রায় দেড় কিলোমিটার পর্যন্ত নদীর ভিতর হতে অবৈধ ভাবে সরকারি ইজারা বিহীন অবস্থায় নদী হতে বালু পাথর আহরণ করছে প্রায় সহ¯্রাধীক বারকী নৌকা। ভোর হতে সন্ধ্যা পর্যন্ত এই নদী হতে বালু পাথর আহরন করছে ৪নং বাংলা বাজার বালু পাথর ব্যবসায়ী সমিতি সদস্যরা। অপরিকল্পিত ভাবে নদী হতে বালু পাথর উত্তোলনের ফলে নদীর পাড়ের বাসিন্ধাদের ফসলী জমি নদী গর্ভে বিলীন হচ্ছে।

তীর ভেঙ্গে ফসলি জমির ক্ষতিগ্রস্তের সমূহ সম্ভাবনা।

এছাড়া নদীর তীরবর্তী পারের বাসিন্ধাদের একমাত্র পানির উৎস রাংপানি নদী। নদীর পানি ব্যবহার করে আসামপাড়া এলাকার প্রায় দুই সহস্রাধীক বাসিন্ধারা গোসলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজে পানি ব্যবহার করে আসছেন। তার চেয়ে বড় সমস্যা হল এলাকার মা-বেনেরা নদীতে গোসল করতে গেলে ইজ্জত রক্ষা নিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে। মা-বোনেরা নদীতে গোসল করতে গেলে বালু-পাথর উত্তোলনকারীরা নানা অঙ্গ-ভঙ্গীতে গানসহ অশ্লিল ভাষা ব্যবহার করতে শুনা যায়। যার ফলে উঠতি বয়সী তরুনী ও মা-বোনেরা ইজ্জ্বত রক্ষায় বিপাকে পড়েছেন। এনিয়ে পুরুষেরা বাঁধা দিলেও কোন ভাবে নিজেদের ফসলী জমি কিংবা মা-বোনদের উজ্জ্বত রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না।

আসামপাড়া গ্রামের বাসিন্ধা আব্দুল লতিফ (৬৩), আব্দুর রহিম (৫৩), মো. আলা উদ্দিন (৪০), রুহুল আমিন (২৮), মিনারা বেগম (৫৫) সহ ২৫/৩০ জন গ্রামবাসী বিষয়টি তুলে ধরেন। তারা বলেন সম্পূর্ণ অবৈধ ভাবে ইজারা বিহীন অবস্থায় রাংপানি নদী হতে বালু পাথর উত্তোলন করছে ৪নং বাংলা বাজার বালু পাথর ব্যবসায়ী সমিতি। তাদের দৌরাত্বের কারনে আমরা অসহায় হয়ে পড়েছি। অবৈধ পন্থায় বালু পাথর উত্তোলনের ফলে আমাদের ফসলী জমি নদী গর্ভে বিনীল হচ্ছে এবং সরকার বাহাদুর রাজস্ব হারাচ্ছে। এভাবে অবৈধ কার্যক্রম চলতে থাকলে আগত বন্যায় আমাদের ফসলী জমি চিরতরে নদীগর্ভে বিলীন হবে। নদীর পানি ব্যবহারে আমাদের মা-বোনদের ইজ্জ্বত বিসর্জন দিতে হচ্ছে। সরকারের উদ্বর্তন কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপে নিলে আমাদের ফসলী জমি রক্ষা হবে এবং নিরাপদে মা-বোনেরা নদীর পানি নিত্য প্রয়োজনীয় কাজে ব্যবহার করতে পারবে।

৪নং বাংলা বাজার বালু পাথর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. রফিক আহমদ উরফে আইনজীবি রফিক প্রতিবেদকে জানান, ইউপি চেয়ারম্যান ইজারা দেওয়ার কারনে আমরা নদী হতে শ্রমিকরা বালু পাথর আহরণ করছে। তবে গ্রামবাসী তাদের সমস্যা বিষয়টি আমাদের জানালে শ্রমিকদের সর্তক করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান নিজের লোক দিয়ে ফি আদায় করতে আপনারা সরেজমিন পেয়েছেন এবং কথা বলেছেন। যদি অবৈধ হয় তাহলে তিনি কিভাবে ফি আদায় করছেন।

এবিষয়ে জৈন্তাপুর ইউপি’র চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম প্রতিবেদকে জানান, রাংপানি নদী তিনি ইজারা দেওয়ার কোন এখতিয়ার তার ইউপির নেই বা তিনি ইজারা দেননি। ৪নং বাংলা বাজার এলাকায় বালু পাথর পরিবহন হওয়ার কারনে ইউনিয়ন পরিষদ বৈধ ভাসমান ট্যাক্স আদায় করছে। গ্রামবাসীর অভিযোগ পেয়ে একটি শ্রমিক ও গ্রামবাসীর সমন্বয় করে দিয়েছি। শ্রমিকরা যদি সমন্বয় না মানেন তাহলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রয়োজন।

সহকারি কমিশনার (এসিল্যান্ড) রিপামনি দেবী বলেন, আমার জানামতে রাংপানি নদী সহ ঐ অংশের কোন নদীতে ইজারানেই। এবিষয়ে আমার দপ্তরে কোন অভিযোগ আসেনি। তারপর বিষয়টি খোঁজ নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।