জুড়ীতে ২ রাতে ১০ দোকান চুরির ঘটনায় জনতার রোশানলে নবাগত ওসি

0
304

জুড়ী (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায় ২ রাতে ১০ দোকানে চুরির ঘটনা ঘটেছে।
এতে উপজেলার ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। শুক্রবার (২১ অক্টোবর)   গভীর রাতে উপজেলার পূর্বজুড়ী ইউনিয়নের  নয়া বাজার, বড়ধামাই, পশ্চিম বড়ধামাই এলাকার ৫ টি দোকানে চুরি হয়েছে।
এ চুরির ঘটনায় খোদ ব্যাবসায়ীকে আটকের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে ওসির বিরুদ্ধে।

স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সূত্রে জানা যায়, গতরাতে উপজেলার পূর্বজুড়ী ইউনিয়নের নয়া বাজার, বড়ধামাই, পশ্চিম বড়ধামাই এলাকার  ৫ টি দোকানে চুরি হয়েছে। দোকান গুলো হলো হীরা ভেরাইটিজ স্টোর, আলিম ট্রেডার্স, ফখরুল ভেরাইটিজ স্টোর, ইনসাফ ভেরাইটিস স্টোর, কয়েস স্টোরসহ শাপলা কমিউনিটি সেন্টারে চুরির ঘটনা ঘটে।

ব্যবসায়ী হীরা দাস বলেন, “আমার দোকানে চুরি হয়েছে। ওসি উল্টো আমি রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল ও আইনশৃঙ্খলার অবনতির জন্য এসব করছি অভিযোগ এনে আমাকে আটক করে গাড়িতে নিয়ে তোলেন।”

নয়াবাজারের শাপলা কমিউনিটি সেন্টারের মালিক কাজল আহমদ বলেন, “আমাদের বাজারে চুরি হয়েছে আমরা সবাই মর্মাহত । ওসি তদন্তে এসে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী হীরা দাসকে ষড়যন্ত্রকারী উল্লেখ করে আটক করে নিয়ে যাচ্ছিলেন। পরে স্থানীয় চেয়ারম্যানসহ আমাদের সকলের হস্তক্ষেপে তিনি হীরা দাসকে ছাড়তে বাধ্য হন।”
এছাড়া ওসি স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সাথে খারাপ ব্যবহার করেছেন, অনেককে গালিগালাজ করেছেন,  যা জুড়ী উপজেলার পুলিশের সর্বোচ্চ কর্মকর্তা হিসেবে তার মোটেও উচিত হয়নি।
এর আগে মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর ) রাতে উপজেলার ভবানীগন্জ বাজারের  ৫ টি দোকানসহ মসজিদের ১টি দানবাক্সে চুরি হয়।চুরি হওয়া দোকানগুলো হলো মেসার্স বিসমিল্লাহ ভেরাইটিজ স্টৌর, লাভলী স্টৌর,শামীম ট্রাভেলস, সুভাষ মিষ্টি ঘর, এমএ নূর রড সিমেন্টের দোকান ও ভবানীগন্জ বাজার জামে মসজিদের দানবক্স।

এম এ নূর টেডার্স স্বত্বাধিকারী ও ভবানীগন্জ বাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির আহবায়ক এম এ মহসিন মুহিন জানান,”রাতে দোকানের তালা ভেঙ্গে ক্যাশের প্রায় ৫০ হাজার টাকা নিয়ে গেছে। এ ধরনের চুরির ঘটনায় ব্যবসায়ীরা আতঙ্কে আছেন।”

পূর্বজুড়ী ইউনিয়ন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রুয়েল আহমদ বলেন,
চুরির বিষয়টিকে রাজনৈতিক আখ্যা দিয়ে ওসি দায় এড়াতে পারেন না। ভিডিও ফুটেজ থাকার পরও জুড়ী শহরে চুরির ঘটনায় এখনো পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। আর আজকে চুরির ঘটনায় ভিডিও ফুটেজ দেখার পরও তিনি এটাকে ব্যবসায়ীদের ষড়যন্ত্র দাবি করে তাদেরকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাচ্ছিলেন। এটা সত্যিই দুখজনক। পরে আমার হস্তক্ষেপে তিনি ব্যবসায়ীকে ছেড়ে দেন এবং দুজন কর্মচারী ও চৌকিদারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যান।

চেয়ারম্যান আরো বলেন, ওসি সিভিল ড্রেসে চুরির ঘটনা তদন্তে এসে খোদ ব্যবসায়ীদেরকে আটক করার চেষ্টা করলে জনতার রুষানলে পড়েন। আমি না থাকলে অপ্রীতিকর কিছু একটা ঘটে যেতো।

জুড়ী থানার ওসি মোশাররফ হোসেন বলেন, চুরির ঘটনার খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। আসলে এখানে তেমন কোন চুরির  ঘটনা ঘটেনি। তবে তিনি দোকানের তালা ভাঙ্গার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ব্যবসায়ীকে উঠিয়ে আনার বিষয়ে বিষয়ে তিনি বলেন, ব্যাবসায়ী কে নয়, জিজ্ঞাসাবার জন্য দোকান কর্মচারী ও চৌকিদারকে থানায় আনা হয়েছে‌।

এ ব্যাপারে মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ সুপার মোঃ জাকারিয়া বলেন, জুড়ীতে বেশ কিছু চুরির ঘটনার বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখছি। তবে নয়াবাজারের চুরির ঘটনায় ব্যবসায়ী কে ওসি কতৃক উঠিয়ে আনার বিষয়টি খোঁজ নিবেন বলে জানান তিনি।