জনপ্রিয় অভিনয়শিল্পী সিলেটের সালমান শাহ’র মৃত্যুবার্ষিকী আগামীকাল

    0
    249

    আমারসিলেটটোয়েন্টিফোর.কম ০৫ সেপ্টেম্বর  : আগামীকাল শুক্রবার, জনপ্রিয় চলচ্চিত্রশিল্পী সালমান শাহ’র মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৯৬ সালের এই দিনে তিনি পাড়ি জমান মৃত্যুলোকে। এরপর ১৭ বছর পার হলেও তাকে ভোলেনি চলচ্চিত্রপ্রেমী মানুষ। ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সালমান শাহ বাংলাদেশের সিনেমা দর্শকদের ছেড়ে অনন্তলোকে চলে গেছেন। দিন গুনতে গুনতে ১৭ বছর পার হয়ে গেল। তাকে নিয়ে অনেক স্মৃতি ক্ষয়ে ক্ষয়ে ধূসর হয়ে গেছে। তবু বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের একসময়ের রোমান্টিক যুবরাজ আজও বেঁচে আছেন দর্শকের মনোজগতে। জেগে আছেন তরুণ-তরুণীর তর্কে, স্মৃতিচারণায় অনেকেই বলেন, সালমান শাহ’র মতো আর কেউ এল না।
    কী এমন রসসম্ভার ছিল সালমান শাহর অভিনয়কলায়? কী এমন বৈচিত্র্য ও আকর্ষণ ছিল তার দেহসজ্জায়, যার সামগ্রিক আবেদন কিশোর-কিশোরীদের নরম মনে টানটান অনুভূতির প্লাবন বইয়ে দিয়েছিল? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে সালমান শাহ অভিনীত ২৬টি চলচ্চিত্রই যথেষ্ট। ১৯৯৩ থেকে ১৯৯৬- মাত্র চার বছর ছিল তার অভিনয়জীবন। ওই স্বল্প সময়ে সালমান শাহর প্রাপ্তি ছিল আকাশচুম্বী। এত সাফল্যের পরও তার জীবন কেমন ছিল, যা সালমান দীর্ঘায়িত করতে চাননি। নিজ যুক্তিতে স্বমুক্তি খুঁজেছেন? আনন্দ চুরি হওয়া জীবন থেকে বিদায় নিতে আত্মধ্বংসের পথ বেছে নিয়েছেন, যা আজও সবার কাছে অজানা সংবাদ হয়েই রইল।
    সালমান শাহ, যার আসল নাম- শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন; ১৯৭০ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর তিনি সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন। সোহানুর রহমান সোহানের পরিচালনায় কেয়ামত থেকে কেয়ামত চলচ্চিত্রের মাধ্যমে ১৯৯৩ সালের ২৫ মার্চ তিনি চলচ্চিত্রের দর্শকদের সামনে আসেন। চার বছরের অভিনয়জীবনে তার উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হচ্ছে- কেয়ামত থেকে কেয়ামত, অন্তরে অন্তরে, বিক্ষোভ, স্বপ্নের ঠিকানা, দেনমোহর, তোমাকে চাই, সত্যের মৃত্যু নেই, মায়ের অধিকার, আনন্দ অশ্রু প্রভৃতি।
    সালমান শাহ অভিনীত সর্বাধিক চলচ্চিত্রের পরিচালক ছিলেন শিবলি সাদিক। মৌসুমীর সঙ্গে ছিল সালমান শাহর প্রথম জুটি। চরম সাফল্যের সম্ভাবনা থাকলেও এ জুটির চলচ্চিত্র মাত্র চারটি। শাবনূরের সঙ্গে সালমানের চলচ্চিত্রের সংখ্যা ১৪। মজার বিষয় হলো- সালমানের আবিষ্কারক সোহানুর রহমান সোহান কেয়ামত থেকে কেয়ামত নির্মাণের পর আর দ্বিতীয় কোনো চলচ্চিত্রে তাকে নিয়ে কাজ করার সুযোগ পাননি। একই ব্যর্থতা প্রযোজক সিরাজুল ইসলাম ও সুকুমার রঞ্জন ঘোষের। তাদের প্রযোজিত কেয়ামত থেকে কেয়ামত ছিল সালমানের প্রথম চলচ্চিত্র।
    প্রথম সুযোগে চুক্তিতে পাঁচ বছর আনন্দ মেলা সিনেমায় থাকার কথা থাকলেও চুক্তিভঙ্গের অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। তবু সালমান শাহ ছিলেন যৌবন বাউলশিল্পী। নিজের সত্তাকে স্বেচ্ছায় পরিবর্তন করা শিল্পী। সামগ্রিক অর্থে দ্যুতিময় এক শিল্পীর নাম সালমান শাহ। নিজের সঙ্গে বোঝাপড়া করতে, মনের অতলে নিজেকে খুঁজতে, ভুলগুলো ভুল ভাবতেই সালমান হারিয়ে গেছেন। প্রায়ই ভুলে থাকা দর্শকদের কাছে আজ সম্পূর্ণ অতীত এই জনপ্রিয় চলচ্চিত্রশিল্পী সালমান শাহ ।