চেয়ারম্যানকে ৫০হাজার টাকা দিয়ে ঘর না পেয়ে আত্মহত্যা

    0
    601

    “৩নং ওয়ার্ড মেম্বার আব্দুর রশিদের মাধ্যমে গজারিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু তালেবকে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন নাজমা। এ বিষয়ে গজারিয়ার প্রশাসনের সবার কাছে অভিযোগ দিয়েও কোনো বিচার পাননি তিনি। এমনকি ঘরও পাননি এবং তার দেয়া ৫০ হাজার টাকাও ফেরত পাননি। এই দু:খ-কষ্টে, রাগে-ক্ষোভে নি:স্ব আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন তিনি”

    দীর্ঘ চার বছর যাবত চেয়ারম্যানের কাছে ঘুরেও ঘর জুটলো না নাজমা ওরফে নাজমা পাগলীর (৫৫)। দেড় বছর ধরে ৫০ হাজার টাকা দিয়েও সরকারি বরাদ্দকৃত ঘর না পেয়ে চেয়ারম্যানকে আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছিলেন ওই নাজমা। মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারি) সেটাই সত্যি হলো। ঘটনার দিন বিকেল ৫টায় আত্মহত্যা করলেন গুচ্ছগ্রামের রজবের স্ত্রী এবং নুরে আলমের মা নাজমা। বিষ খাওয়ার পর গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ঢাকা মিটফোর্ড হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

    জানা যায়, ৩নং ওয়ার্ড মেম্বার আব্দুর রশিদের মাধ্যমে গজারিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু তালেবকে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন নাজমা। এ বিষয়ে গজারিয়ার প্রশাসনের সবার কাছে অভিযোগ দিয়েও কোনো বিচার পাননি তিনি। এমনকি ঘরও পাননি এবং তার দেয়া ৫০ হাজার টাকাও ফেরত পাননি। এই দু:খ-কষ্টে, রাগে-ক্ষোভে নি:স্ব আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন তিনি।

    ইতোপূর্বে ৯নং ওয়ার্ড সদস্য দানেশের মাধ্যমেও প্রতিবন্ধী ভানু বেগমের কাছ থেকে ৬০ হাজার টাকা নিয়ে সরকারি ঘর বরাদ্দ দিয়েছিলেন গজারিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু তালেব। এ বিষয়ে পত্রপত্রিকায় সংবাদ প্রকাশসহ এলাকায় বেশ সমালোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে ইউপি সদস্য আব্দুর রশিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। গজারিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আবু তালেব জানান, আমি ওই নারীর কাছ থেকে কোনো টাকা নেইনি। শুনেছি মা-ছেলে ঝগড়া করে আত্মহত্যা করেছে। তবে গত সোমবার আমার কাছে এসেছিল। আমার সঙ্গে ঘরের জন্য ঝগড়াও করে গেছে নাজমা।

    গুচ্ছগ্রামের মোজাম্মেল জানান, শুনেছি ঘরের জন্য নুরে আলমের মা নাজমা ওরফে পাগলী ৫০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন গজারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু তালেবকে। ৩নং ওয়ার্ড মেম্বার রশিদের মাধ্যমে দেড় বছর পূর্বে চেয়ারম্যান আবু তালেবের কাছে এই ৫০ হাজার টাকা প্রদান করেন তিনি। উপজেলা পিআইও তাজুল ইসলাম জানান, নাজমা একাধিকবার এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এসএম ইমাম রাজী টুলু ও আমার কাছে সরকারি বরাদ্দকৃত ঘর পাওয়ার জন্য আসেন। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এসএম ইমাম রাজী টুলু জানান, বিষয়টি খুবই মর্মান্তিক। এ বিষয়টি নিয়ে আমার কাছে একাধিকবার এসেছেন কিন্তু আমি কিছুই করতে পারিনি।
    এ বিষয়ে বিআরডিবির চেয়ারম্যান বাবুল আখতার জানান, আবু তালেব প্রধানমন্ত্রীর সরকারি ঘর দেয়ার কথা বলে নাজমা পাগলীর কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা নিতে বলেন ইউপি সদস্য রশিদকে। সেই কথা অনুযায়ী রশিদ মেম্বার ৫০ হাজার টাকা নেন নাজমার কাছ থেকে।
    উপজেলা নির্বাহী অফিসার জিয়াউল হক চৌধুরী জানান, মহিলার বিষয়টি জেনেছি। বিষয়টি তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
    এ বিষয়ে গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ রইছ উদ্দিনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।