গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য ‘হাওয়াই মিঠাই’ বিক্রি করেই জীবন চালান ৮০ বছরের বৃদ্ধ

0
744
গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য 'হাওয়াই মিঠাই' বিক্রি করেই জীবন চালান ৮০ বছরের বৃদ্ধ
জীবন সংগ্রামে হার না মানা যোদ্ধা আব্দুর রহমান।

মিজানুর রহমান, চুনারুঘাট থেকেঃ হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার ৮০ বছরের বৃদ্ধ আঃ রহমান। জীবনের শেষ বয়সে ভিক্ষার ঝুলি হাতে না নিয়ে কর্ম করে জীবন পরিচালনা করেন জীবন সংগ্রামে হার না মানা যোদ্ধা আব্দুর রহমান। এই পরন্ত বয়সে তাঁর ভাগ্যে এখনো জুটেনি বয়স্ক ভাতা।

এ বয়সে সমাজের অন্যরা ভিক্ষাবৃত্তি করলেও তিনি পায়ে হেঁটে এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় বিক্রি করেন গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য ‘হাওয়াই মিঠাই’। এতেই দুঃখ কষ্টের সংসার চলে তাঁর। মানুষের কাছে হাত পাতার চেয়ে পরিশ্রম করে চলাই তাঁর কাছে সম্মান ও ইজ্জতের বলে জানান আঃ রহমান।
আশি বছরের বৃদ্ধ আব্দুর রহমান চুনারুঘাট উপজেলার ৭ নং উবাহাটা ইউনিয়নের উড়ারকুল গ্রামের মৃত রুছমত উল্লাহর ছেলে। ‘হাওয়াই মিঠাই’ ছাড়াও মাঝে মাঝে তিনি কৃষি কাজ ও করেন বেঁচে থাকার তাগিদে। প্রতিদিন সকালে ‘হাওয়াই মিঠাই’র বাক্স কাঁধে নিয়ে বের হন। বাক্সের সব মিঠাই বিক্রি হলে সদাই-পাতি করে বাড়ি ফিরেন। বিক্রি না হলে বাজার-সদাই ঠিকমতো করা হয় না। এদিকে পণ্য-দ্রব্যের মূল্য উর্ধ্বগতির কারণে আব্দুর রহমানের মতো লোকের হিমসিম খেয়ে কোন রকম বেঁচে থাকতে হয়।

‘হাওয়াই মিঠাই’ বিক্রেতা আব্দুর রহমান বলেন, “আমার বয়স ৮০ বছর। আমার এক ছেলে সন্তান আছে। সে টমটম চালায়। তার আয়ে সংসার চলে না। তাই এই বয়সেও গাঁও-গ্রামে ‘হাওয়াই মিঠাই’ বিক্রি করি।”

তিনি জানান, প্রতিদিন বাক্সে ছয়শত পিছ মিঠাই নিয়ে বের হন তিনি। যদি সবগুলো বিক্রি হয় তবে দুইশ’ থেকে আড়াইশ’ টাকা আয় হয় তাঁর। বিক্রি না হলেও তিনি সৃষ্টিকর্তার কাছে শুকরিয়া আদায় করে পরের দিনের জন্য প্রস্তুতি নেন।

আবহমান গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য ‘হাওয়াই মিঠাই’ নিয়ে গ্রাম-গঞ্জে ফেরিওয়ালাদের বর্তমানে খুব কমই দেখা যায়। অসহায় ও বয়স্ক আব্দুর রহমানকে সরকারি ভাতার ব্যবস্থা করে দিলে হয়তো তাঁর জীবন-যাপন অনেকটাই সহজ হবে।