কেন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন এরশাদ প্রশ্ন এখন সবার

    0
    217

    আমারসিলেট24ডটকম,০ডিসেম্বরঃ আওয়ামী লীগের সঙ্গে টানা পাঁচ বছর মহাজোটে থেকে এবং নির্বাচনকালীন সরকারে সাতজন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপদেষ্টা পেয়েও কেন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদএ প্রশ্ন এখন দেশের সবার কাছে।জানা যায়, দলের ভেতরে কোন্দল, আওয়ামী লীগের কাছে আরো বেশি প্রত্যাশা এবং সারা দেশে ৬৮টি আসনে জাপার প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র দাখিল করতে না পারাসহ কয়েকটি কারণে শেষ মুহূর্তে নির্বাচন থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এরশাদ।
    এরশাদের একসময়ের সবচেয়ে বিশ্বস্ত ব্যক্তি সাবেক প্রধানমন্ত্রী কাজী জাফর আহমদ মাত্র কয়েক দিন আগে বহিষ্কৃত হয়েছেন দল থেকে। তাঁর সঙ্গে দলের বিএনপিপন্থী নেতারা গোপনে একজোট হয়েও নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। কিন্তু নানা অজুহাতে তাঁরা মনোনয়নপত্র দাখিল করেননি। অনেকে শেষ মুহূর্তে মনোনয়ন পেয়েও সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র জোগাড় করতে না পেরে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে পারেননি। এ বিষয়টি এরশাদকে চিন্তায় ফেলেছে।
    আওয়ামী লীগের সঙ্গে এরশাদের ৮৫টি আসনে রফা হলেও আওয়ামী লীগ সারা দেশে ২৯৭ আসনে প্রার্থী দেয়। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ হন এরশাদ। সারা দেশ থেকে জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা এরশাদের কাছে জানতে চান, আসলে কোন কোন আসনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতা হচ্ছে। অনেক স্থানে মনোনয়ন পেয়েও জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা নির্বাচনী দৌড়ে পিছিয়ে পড়েন। তাঁরা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে এরশাদকে অনুরোধ করেন। চাঁদপুরসহ বিভিন্ন স্থানে জাতীয় পার্টির প্রার্থীদের বাড়িঘরে হামলার ঘটনাও ঘটেছে। এসব বিষয়   ভীত করছে এরশাদকে।আরও জানা যায়,৪০ থেকে ৪৫টি আসজায়,এরসাদের প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র দাখিল করতে পারেননি। বিভিন্ন স্থানে এরশাদের  প্রার্থী ও নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা হয়েছে। এ অবস্থায় নির্বাচন না করে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
    বারবার দলীয় প্রার্থী পরিবর্তন, লাগাতার অবরোধে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পারা এবং নির্বাচনে কত আসনে জয়লাভ সম্ভব হবে সেসব বিষয় ভাবিত করেছে এরশাদকে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ ২৯৭ আসনে প্রার্থী দেওয়ায় এরশাদ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
    অন্যদিকে,বহিষ্কৃত কাজী জাফর ইতিমধ্যে আরেকটি জাতীয় পার্টি করার ঘোষণা দিয়েছেন। এরশাদের মনোনয়ন পেয়েছেন, এমন অনেকেই জাফরের ভক্ত। জাফর চাননি এরশাদ নির্বাচনে যান। সে জন্য তিনি তাঁর সমর্থক নেতাদের মনোনয়নপত্র জমা না দেওয়ার জন্য প্ররোচিত করেন। যাঁরা মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেননি, তাঁদের অনেকেই কাজী জাফরের লোক বলে জানা গেছে। এক-তৃতীয়াংশ আসনে প্রার্থী না থাকার কারণেই এরশাদ সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
    জাপার আরেক সূত্র জানায়, দেশ-বিদেশের চাপে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়ে থাকতে পারেন এরশাদ। তিনি আগেই বলেছেন, যদি নির্বাচন সবার কাছে গ্রহণযোগ্য না হয়, তবে তাঁর দল নির্বাচনে যাবে না। সময় বুঝে সেই সুযোগটি নিয়েছেন এরশাদ।
    সোহেল রানা বলেন, ‘আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে মাত্র ১০ দিন সময় বাড়ানোর অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু তারা সে কথা রাখেনি। এ জন্য স্যার (এরশাদ) অনেক ক্ষুব্ধ হয়েছেন। আমরা আশা করি, জাপার প্রার্থীরা আজকালের মধ্যেই প্রার্থিতা প্রত্যাহার করবেন। মনোনয়নপত্র তুলে নিবে কি না সন্দেহ রয়েছে বলে অনেকের ধারনা।