কৃষকের পাকা ধান কেটে দিলো কমলগঞ্জের যুবলীগ নেতাকর্মীরা

0
796
কৃষকের পাকা ধান কেটে দিলো কমলগঞ্জের যুবলীগ নেতাকর্মীরা
কৃষকের পাকা ধান কেটে দিলো কমলগঞ্জের যুবলীগ নেতাকর্মীরা


শাব্বির এলাহী,কমলগঞ্জঃ কেন্দ্রীয় যুবলীগের দেশব্যাপী কৃষকের ধান কাটার কর্মসূচির অংশ হিসাবে জেলার কমলগঞ্জে তিন কৃষকের পাঁকা ধান কেটে বাড়িতে পৌছে দিলেন উপজেলা যুবলীগের নেতাকর্মীরা।
ঘড়ির কাঁটায় সকাল দশ টা। পবিত্র রামাদান মাস, সেই সঙ্গে করোনার সংক্রমণ মোকাবিলায় চলছে লকডাউন। চারদিক ফাঁকা। এ সময় একটি পাকা ধানের খেতে হাজির টি-শার্ট ও প্যান্ট পরা শতাধিক মানুষ। তাঁরা আর কেউ নন, কমলগঞ্জ উপজেলা যুবলীগ আহ্বায়ক ও পৌরসভার মেয়র মো. জুয়েল আহমেদসহ জেলা ও উপজেলার শতাধিক যুবলীগ নেতাকর্মীরা। তাঁরা একসঙ্গে ধানি জমিতে নেমে বর্গাচাষি সৈয়দ আজাদ আলী, শহীদ মিয়া ও ফারুক মিয়ার ৯০ শতাংশ জমির পাকা বোরো ধান কেটে তাদের বাড়িতে পৌছে দিলেন।
শুক্রবার (২৩এপ্রিল) সকালে পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব কুশালপুর এলাকায় উপজেলা যুবলীগের এমন সহমর্মিতায় আবেগাপ্লুত কৃষকরা। যেখানে শ্রমিকের অভাবে জমির পাঁকা ধান কাটা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভুগছিলেন তারা, সেখানে দেড় ঘণ্টার মধ্যে জমির সব ধান কেটে বাড়িতে পৌছে দেয়া হয়েছে । সৈয়দ আজাদ আলী বলেন, মাঠের প্রায় জমির ধানই পেকে গেছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে বাইরে থেকে শ্রমিক আসা বন্ধ। এ কারণে এলাকায় শ্রমিকের তীব্র সংকট। টাকার অভাবে খুব দুশ্চিন্তায় ছিলেন জমির ধান কাটা নিয়ে। তবে ভাবতেও পারেননি পৌরসভার মেয়রসহ জেলা ও উপজেলার এত লোক এভাবে এসে তাদের জমির পাঁকা ধান কেটে দেবেন। তাদের এই মহানুভবতায় মজুরির প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা ঋণ করা থেকে রক্ষা পেয়েছেন।
কমলগঞ্জের যুবলীগের এই উদ্যোগে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে কৃষকের জমির ধান কেটে দেওয়ার এই কাজে যুক্ত ছিলেন জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ রেজাউর রহমান সুমন, জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কয়ছর আহমদ,উপজেলা যুবলীগের যুগ্ন আহ্বায়ক আব্দুল মালিক বাবুল, সায়েক আহমেদ, সদস্য আলাল মিয়া, জহিরুল ইসলাম নান্নু, সাইফুল ইসলামসহ শতাধিক যুবলীগ নেতা কর্মীরা। জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ রেজাউর রহমান সুমন বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের দেশব্যাপী ধান কেটে দেয়ার অংশ হিসাবে প্রথম কমলগঞ্জ উপজেলার কৃষকের ধান কেটে বাড়িতে পৌছে দেয়া হয়েছে। এতে একজন কৃষকের সময় ও টাকা দুটোই বাঁচলো। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ কে বাস্তবায়ন করতে উপজেলা যুবলীগের আয়োজনে স্বেচ্ছাশ্রমে অসহায় কৃষকদের ধান কেটে দিয়েছেন, যারা টাকা ও শ্রমিকের অভাবে জমির পাঁকা ধান কেটে ঘরে তুলতে পারছিলেন না।

কমলগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মোঃ জুয়েল আহমেদ বলেন, সময়-সুযোগ পেলে এ ধরনের কর্মকান্ড তাঁরা অব্যাহত রাখবেন। এখন কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া অনেক শিক্ষার্থী গ্রামে অবস্থান করছেন। তাঁরা ইচ্ছা করলে অসহায় কৃষকের জমির ধান কেটে দিতে পারেন। এতে সমাজে একে অপরের প্রতি সহমর্মিতা যেমন প্রতিষ্ঠিত হবে, তেমনি কৃষকেরা কৃষি উৎপাদনে আরও বেশি আগ্রহী হবেন।