করোনা সংক্রমণের শীর্ষে মৌলভীবাজারঃসতর্ক না হলে কমিউনিটি সংক্রমন বেড়ে যাবে

0
844
করোনা সংক্রমণের শীর্ষে মৌলভীবাজারঃসতর্ক না হলে কমিউনিটি সংক্রমন বেড়ে যাবে
করোনা সংক্রমণের শীর্ষে মৌলভীবাজারঃসতর্ক না হলে কমিউনিটি সংক্রমন বেড়ে যাবে


আলী হোসেন রাজন,মৌলভীবাজারঃ প্রাণঘাতী কোভিড-১৯ করোনার দ্বিতীয় দাপে বেড়েছে সংক্রমনের হার। প্রবাসী ও পর্যটন অধ্যুষিত মৌলভীবাজার জেলা দেশের মধ্যে করোনা সংক্রমণের পরিসংখ্যানে শীর্ষে রয়েছে। সারা দেশের ন্যায় মৌলভীবাজার জেলায়ও চলছে সরকার ঘোষিত এক সপ্তাহের লকডাউন। লকডাউন চললেও প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য বিধিনিষেধ মানছেননা সাধারন মানুষ। আর লকডাউন নিশ্চিত করতে ছিলনা প্রশাসনেরও তেমন কোন জোরালো অবস্থান।
করোনাভাইরাস সংক্রমনের দ্বিতীয় ধাপে আক্রান্তের শীর্যে রয়েছে মৌলভীবাজারসহ দেশের ৩১টি জেলা। এ অবস্থায় এ ভাইরাসটির বিস্তার রোধকল্পে শর্তসাপেক্ষে সার্বিক চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে সারা দেশে এক সপ্তাহের লকডাউন ঘোষনা করে সরকার। গত সোমবার (৫ এপ্রিল ভোর ৬টা থেকে আগামী ১১ এপ্রিল) রাত ১২টা পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা থাকবে বলে মন্ত্রিপরিষদ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। সামাজিক দূরত্ব সহ করোনা ভাইরাস সংক্রমণ এড়াতে লকডাউন ঘোষণা করা হলেও প্রয়োজনীয় বিধিনিষেধ মানছেননা সাধারন মানুষ। নিয়মের তোয়াক্কা না করে অন্যান্য সময়ের মতোই বিশেষ প্রয়োজন ছাড়াও ঘর থেকে বের হচ্ছেন অনেকে, লকডাউন মানাতে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা ব্যাতিত ছিলনা প্রশাসনেরও তেমন কোন তৎপরতা।

জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সুএ বলছে মৌলভীবাজার জেলায় প্রতিদিনই নতুন করে করোনা আক্রান্তের পরিসংখ্যান বাড়ছে। সর্বশেষ প্রাপ্ত নমুনার ফলাফল অনুযায়ী জেলায় এখন সংক্রমণের হার বেড়ে দাড়িয়েছে ২৮ শতাংশ। জেলায় আক্রান্ত রয়েছেন ২ হাজার ৮৯ জন, সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১ হাজার ২৪ জন। সরকারি হিসেব অনুযায়ি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২৪ জন। এমন পরিস্থিতে জেলায় লকডাউন নিশ্চিত করতে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তেমন কোন কঠোরতা কিংবা জোরালো অবস্থান দেখা যায়নি।

সরেজমিনে শহরের চৌমুহনা, পশ্চিমবাজার, কুসুমবাগ, শহরের কাঁচা বাজার ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ঘুরে দেখা গেছে এসব চিত্র। এসব স্থানে শপিংমল- বড় দোকানপাট অর্ধেকবন্ধ থাকলেও স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে সাধারনের মধ্যে ছিল উদাসীনতা। নানা পরিবহনে অবাধেই যাতায়াত করছেন অনেকে। শহরের বাজার গুলোতে সাধারন মানুষের ছিল উপচে পড়া ভীড়, সরকারি নিয়ম ও স্বাস্থ্যবিধীর নির্দেশনাকে তোয়াক্কা না করে করোনা ভাইরাস সংক্রমনের ঝুঁকি নিয়ে যাবতীয় কাজ করছেন সাধারন মানুষ। দূরপাল্লার বাস না চললেও, সড়কে চলছে রিক্সা, অটোরিক্সা ও প্রাইভেট যানবাহন, আর মোটরসাইকেলে দুজন আরোহী নিয়ে মানুষের চলাচল ছিল তুলনামূলক বেশি। পাড়া- মহল্লা অলিগলির ভিতরের চিত্র আরও ভয়াবহ , মানুষের ঝটলা পাশাপাশি বসে অনেকের আড্ডা আর অর্ধেক সাটার বন্ধ রেখে চলছে ব্যবসা। ফার্মেসি এবং নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দোকানে, নির্দিষ্ট সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে সাইনবোর্ডে লিখা ঝুলছে দোকানের সামনে, কেউ এসব দেখেও যেন দেখছেননা, লকডাউনে সবকিছুই চলছে স্বাভাবিক গতিতে। এদিকে লকডাউন ঘোষণার পর থেকে বিভিন্ন জায়গায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে সচেতনতামূলক মাইকিং এবং জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে নিয়মিত পরিচালিত হচ্ছে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত, স্বাস্থ্যবিধি না মানায় দেয়া হচ্ছে অর্থদন্ড। কিন্তু ভ্রাম্যমাণ আদালতের স্থান ত্যাগের পর আবারও দেখা মেলে সেই একই চিএ, সাধারন মাঝে স্বাস্থ্যবিধি মানতে দেখা দেয় অনীহা।
সচেতন মহলের অনেকে বলছেন এখনো যারা অসচেতন হয়ে স্বাস্থ্যবিধী না মেনে বাহিরে ঘুরাফেরা করছেন তাদেরকে নিয়ন্ত্রন করতে সর্বোচ্চ কঠোর হয়ে মাঠে নামতে হবে প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের। আর জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে লোকজন সতর্ক না হলে এ জেলায় কমিউনিটি সংক্রমন রোধ করা সম্ভব হবে না।