কমলগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধার সম্মানী ভাতা আত্মসাতের অভিযোগ

    0
    260

    আমার সিলেট টুয়েন্টি ফোর ডটকম,১০এপ্রিল,কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধিঃ মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় জালিয়াতির মাধ্যমে দুই মুক্তিযোদ্ধার সম্মানি ভাতা ব্যাংক থেকে তুলে আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের ডবলছড়া খাসিয়া পুঞ্জির মুক্তিযোদ্ধা বিজয় চন্দ্র অধিকারীর সম্মানী ভাতা এবং শমশেরনগর ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামের প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আব্দুস সাত্তার এর নামীয় সম্মানী ভাতা আত্মসাৎ করা হচ্ছে বলে সম্প্রতি কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। এতে কষ্ট ও হতাশায় দিন কাটাচ্ছে এসব মুক্তিযোদ্ধার পরিবার।
    অভিযোগে জানা যায়,ছেলের চাকুরীর সুবাদে দীর্ঘদিন ধরে আমি এলাকার বাইরে অবস্থান করার ফলে তার নামীয় মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা সম্পর্কে অবগত ছিলেন না। ফলে  শমশেরনগর ইউনিয়নের কানিহাটি চা বাগানের শিবচরন সাহার ছেলে নরসিং সাহা তার মুক্তিযুদ্ধকালীন বিভিন্ন কাগজপত্রাদি সংগ্রহ করে জালিয়াতির মাধ্যমে বিজয় চন্দ্র অধিকারী সেজে ২০১০ সাল থেকে মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা আত্মসাৎ করে আসছে।

    খবর পাওয়ার পর তৎকালীন কমলগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার প্রয়াত মখলিছুর রহমান এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি ২০১৫ সনের জুলাই মাসে আমার কাগজপত্র যাচাই বাছাই করে আমাকে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে সম্মানী পাওয়ার ব্যবস্থা করে দেন। এরপর থেকে আমি নিয়মিত মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা পেয়ে আসছি। তবে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মখলিছুর রহমান এর মৃত্যুর পর থেকে ঐ জালিয়াতি চক্র পুনরায় আমার ভাতা আত্মসাতের অশুভ উদ্দেশ্যে বিভিন্ন অপ-তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। অভিযোগ বিষয়ে জানতে চেয়ে নরসিংহ সাহার সাথে কয়েক দফা যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
    অপর একটি অভিযোগে জানা যায়, শমশেরনগর ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামের প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আব্দুস সাত্তার মারা যাওয়ার পর তাঁর উত্তরাধীকারী স্ত্রী মেহেরজান বিবি পাঁচ বছরের মধ্যে একই গ্রামের ইয়াকুব আলীর ছেলে তাহির মিয়া উরপে শুকর মিয়ার সাথে দ্বিতীয় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। মেহেরজান বিবির দ্বিতীয় বিয়ের পর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার এর একমাত্র কন্যা লাকি বেগম উত্তরাধীকারী সূত্রে মুক্তিযোদ্ধার সম্মানী ভাতা প্রাপ্তির আবেদন করেন।

    এই আবেদনের পরও পূর্বের ন্যায় মেহেরজান বিবি ভাতা উত্তোলন করছেন। দুই বছর পূর্বে লাকি বেগমের মৃত্যুর পর তাঁর ছেলে আসাদুল হক নানার নামীয় মুক্তিযোদ্ধার সম্মানী ভাতা প্রাপ্তির দাবি করে গত ৪ এপ্রিল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত আবেদন করেন। আসাদুল হক একরাম বলেন, মেহেরজান বিবি দ্বিতীয় বিয়ের পর জালিয়াতির মাধ্যমে ভাতা আত্মসাৎ করছেন। মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আব্দুস সাত্তার এর নাতি ও একমাত্র উত্তরাধীকারী হিসাবে আমি ভাতা প্রাপ্তির মালিক হিসাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে আবেদন করেছি।
    এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মাহমুদুল হক বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্তের জন্য উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)-কে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।