কমলগঞ্জে অসময়ে হলুদ তরমুজ চাষে কৃষক আব্দুল মতিনের অভাবনীয় সাফল্য

0
695
কমলগঞ্জে অসময়ে হলুদ তরমুজ চাষে কৃষক আব্দুল মতিনের অভাবনীয় সাফল্য

শাব্বির এলাহী,কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার): মৌলভীবাজার জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে এবং লাল তীরের সার্বিক সহযোগিতায় গ্রীষ্ম মৌসুমে তিন জাতের হাইব্রিড তরমুজ চাষ করে অভাবনীয় সাফল্য পেয়েছেন কৃষক আব্দুর মতিন। কমলগঞ্জ উপজেলার পাত্রখোলা চা বাগান সংলগ্ন দুই বিঘা জমিতে তরমুজ চাষে তার সাফল্য দেখে খোদ কৃষি বিভাগই বিষ্মিত। এলাকার অনান্য কৃষকদের মধ্যেও একটি সাড়া জাগিয়েছেন। আব্দুল মতিনের এ বাম্পার ফলনে কৃষি বিভাগ এই উচ্চ ফলনশীল বীজ অনান্য উপজেলায়ও বিস্তার ঘটাবে। তার চাষ করা জাতগুলো হলো ব্ল্যাকবেবি, মধুমালা ও হলুদ রঙ্গের লালতীর এর ল্যান্ড ফি (খধহফঋবর) জাতের হলুদ তরমুজ।শনিবার বিকেলে সরেজমিনে আব্দুল মতিনের তরমুজ ক্ষেতের ফলাফল পরিদর্শনে আসেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মৌলভীবাজার এর উপ-পরিচালক সহ এলাকার অনান্য কৃষকগণ।

হলুদ তরমুজ চাষে কৃষক আব্দুল মতিনের অভাবনীয় সাফল্য।ছবি প্রতিনিধি

সরেজমিনে আজ রোববার ২৫ জুলাই ২০২১ ঘুরে দেখা যায়, ইতিমধ্যে আব্দুল মতিন ফল বিক্রি করা শুরু করেছেন। তিনি জানান, তিন জাতের মধ্যে হলুদ রঙের লালতীরের হাইব্রিড, ল্যান্ড ফি জাতটি সর্বাধিক ফলন হয়েছে। ফলের ওজন এবং আকারে সবাইকে আকর্ষণ করেছে। শুধু আকার নয় এর স্বাদ অসাধারণ। মধুর মতো মিষ্টি। বাজারে এরদরও ভালো পাচ্ছেন।এই তিনজাতের তরমুজ চাষ করতে এখন পর্যন্ত খরচ হয়েছে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা। আর বিক্রি করেছেন প্রায় দেড় লাখ টাকা। মাঠে যে পরিমাণ ফলন রয়েছে এতে তিনি আরও দেড় থেকে দুই লাখ টাকা বিক্রি করতে পারবেন বলে আশাবাদী।ল্যান্ড ফি জাতটির ফলন অন্যান্যদের চেয়ে প্রায় তিনগুণ বেশি এবং ফলের ওজন এক একটি ৩ থেকে ৪কেজি এবং ফলে মিষ্টির পরিমাণও অন্যান্য জাতের চেয়ে অনেক গুণ বেশী। তাই আগামিতে তিনি ব্যাপকভাবে এই জাতের তরমুজ চাষ করবেন বলে আশা প্রকাশ করেন। ফলন দেখতে তার জমি পরিদর্শন করেন স্থানীয় আশপাশের কৃষকরা। তারাও আগামীতে বিস্তৃতভাবে এজাতের চাষ করবেন বলে আগ্রহ প্রকাশ করেন

এই প্রদর্শনীর বীজ এর উৎস প্রতিষ্ঠান লালতীর সীড এর লিমিটেড এর বিভাগীয় ব্যবস্থাপক তাপস চক্রবর্তী জানান, হাইব্রিড, ল্যান্ড ফি জাতটি সবুজ ডোরাকাটাও ভিতরে হলুদ রঙ্গের শাসযুক্ত, অধিক মিষ্টি। উত্তম পরিচর্যায় একেকটির তরমুজ এর ওজন হয় ৫ থেকে ৬ কেজি। সারা বছরব্যাপী মাচায় ও মাঠে চাষ করা যায়। এফলের পরিপক্বতার সময় আসে ৬৫ থেকে ৭০দিনে।
জাতটি চাষ করতে প্রতি শতকে বীজের পরিমাণ লাগে মাত্র ১ গ্রাম। উত্তম পরিচর্যাতে একরে ফলন উৎপাদন হয় ৩০ থেকে ৩৫টন। কৃষকরা উপযুক্ত দাম পেলে এই জাতগুলো চাষে দিন দিন আগ্রহ বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এ প্রসঙ্গে মৌলভীবাজার জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কাজী লুৎফুল জানান, এ প্রদর্শনীতে তিন জাতের বীজ লাগানো হয়েছে । এর মধ্যে অধিক ফলনও ফলের মিষ্টতার পরিমানেও সবদিক থেকে এগিয়ে কৃষকের মন জয় করেছে হাইব্রিড, ল্যনফাই জাতটি। তিনি বলেন, জেলার অন্যান্য উপজেলাতেও এমনি কৃষকদের মাঝে এই জাতগুলোর চাষ ছড়িয়ে দিতে চান। যেন, কৃষকরা উচ্চমূল্যের ফল এবং সবজি চাষ করে অধিক লাভবান হয়।