কমলগঞ্জের সম্ভাব্য প্রার্থীদের দলীয় সমর্থন আদায়ে তৎপরতা

    0
    259

    আমারসিলেট24ডটকম,ফেব্রুয়ারী,শাব্বির এলাহীঃ আগামী ২৩ মার্চ মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। চতুর্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ঘোষিত তফশিল অনুযায়ী মনোনয়ন দাখিলের শেষ তারিখ ২৩ ফেব্রুয়ারি, বাছাই ২৬ ফেব্রুয়ারি। প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ৬ মার্চ, প্রতিদ্বন্দি প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ ৭ মার্চ। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর গণসংযোগের পাশাপাশি কমলগঞ্জের সম্ভাব্য প্রার্থীরা দলীয় সমর্থন আদায়ে দৌড়ঝাঁপ শুরু করছেন। আর স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে দোয়া-আশীর্্বাদ কামনা করছেন।

    কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুই ডজনের অধিক আগ্রহী প্রার্থীদের নিয়ে শুরু হয়েছে বিভিন্ন আলোচনা-সমালোচনা। তফসিল ঘোষণার পর কমলগঞ্জে নির্বাচনী হাওয়া পুরোদমে শুরু হয়ে গেছে। নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের চোখে এখন ঘুম নেই। তারা ভোটারদের মন জয় করতে তাদের সাথে যোগাযোগ বৃদ্ধি করার পাশাপাশি দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পাওয়ার জন্য লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন। নির্বাচনের প্রার্থীদের নিয়ে এখন চায়ের দোকান থেকে শুরু করে হাটে-মাঠে সর্বত্রই সরগরম হয়ে উঠেছে। অপরদিকে নির্বাচনে ‘দলীয় সমর্থন পাওয়া না পাওয়া’এ নিয়ে মাথা ব্যাথা নেই কোন প্রার্থীর। সবারই টার্গেট ভোটারদের মন জয় করা নিয়ে। সম্ভাব্য প্রার্থীদের ধারণা দলের সমর্থন নয়, ভোটারদের মন জয় করতে পারলেই বাজিমাত করা সম্ভব। দীর্ঘদিন মাঠে থাকা সম্ভাব্য প্রার্থীর পাশাপাশি দলীয় হাই কমান্ডের গ্রিন সিগন্যাল পেয়ে অনেক প্রার্থী নির্বাচনী মাঠে নামায় বিপদে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। স্ব-স্ব দল নির্বাচনে একক প্রার্থী দেয়ার চিন্তা-ভাবনা করলেও দলের মধ্যে একাধিক নেতা নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা আছে। নির্বাচনে প্রার্থী তালিকায় আওয়ামীলীগ ও বিএনপির রয়েছে একাধিক প্রার্থী। এর বিপরীতে জাতীয় পার্টি রয়েছে সুবিধাজনক অবস্থানে। ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে পাড়া-মহল্লা আর চা বাগানে কুশল বিনিময় আর গণ-সংযোগ। গত উপজেলা নির্বাচনে দলীয় একাধিক প্রার্থী মাঠে থাকায় বিএনপি মনোনীত প্রার্থীদের কাছে আওয়ামী লীগের বাঘা বাঘা প্রার্থীরা পরাজিত হন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান তিনটিতেই জয়লাভ করেছিল বিএনপি। এই নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন কমলগঞ্জ উপজেলা বিএনপির তৎকালীন সভাপতি আলহাজ্ব শামীম আহমদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন সিনিয়র সহ-সভাপতি খন্দকার মোহাম্মদ হোসেন কুটি ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন পারভীন আক্তার লিলি। গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের পরাজয়ের নেপথ্যে কাজ করে ছিল দলীয় কোন্দল। তাই এবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মরণ কামড় দিতে আওয়ামী লীগ একক প্রার্থী দেয়ার চিন্তা ভাবনা করলেও আওয়ামীলীগের প্রথম সারির একাধিক নেতা দলীয় মনোনয়ন লাভে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। একই সঙ্গে তারা তৃনমূল নেতাকর্মীদের সমর্থন লাভের জন্যও কাজ করছেন। আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার বিকাল ৩টায় ভানুগাছ বাজারের চাঁদনী কমিউনিটি সেন্টারে উপজেলা আওয়ামীলীগের উদ্যোগে তৃণমুল নেতাকর্মীদের মতবিনিময় সভায় দলীয় একক প্রার্থী নির্ধারণ করা হবে বলে বিশ্বস্থ সূত্রে জানা গেছে। দলীয় মনোনয়ন না পেলেও বিদ্রোহী প্রার্থী হতে পারেন আওয়ামীলীগের একাধিক নেতা।

    আগামী ২৩ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে সম্ভাব্য প্রার্থীরা হচ্ছেন-কমলগঞ্জ উপজেলা বিএনপি সাবেক সভাপতি বর্তমান চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শামীম আহমদ চৌধুরী, উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ৫নং কমলগঞ্জ সদর ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া শফি ও বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা খন্দকার মোহাম্মদ হোসেন কুটি, আওয়ামীলীগের প্রার্থী হিসেবে চেয়াম্যান পদে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন কমলগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এম, মোসাদ্দেক আহমেদ মানিক, সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যাপক রফিকুর রহমান, এডভোকেট এ এস এম আজাদুর রহমান আজাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক হারুন-অর রশীদ ভূঁইয়া, উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অশোক বিজয় দেব কাজল, সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি কমলগঞ্জ ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক অধ্যক্ষ হেলাল উদ্দিন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মো: আব্দুল মছব্বির, এছাড়াও উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি দুরুদ আলী, জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সম্পাদক আব্দুল আহাদ মিনার। ভাইস চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন কমলগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক ছিদ্দেক আলী, উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক জুয়েল আহমদ, উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মো: সানোয়ার হোসেন, উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক আব্দুল মুয়ীন ফারুক, বিএনপি নেতা এড: আব্দুল আহাদ, কমলগঞ্জ পৌর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এড. তোফাজ্জেল হোসেন টিটু, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সরওয়ার শোকরানা নান্না, শমশেরনগর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য বিএনপি নেতা আব্দুল মুহিত, উপজেলা যুবদলের সাবেক আহবায়ক আবুল হোসেন, বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রামভজন কৈরী, উপজেলা জাতীয় পার্টির সহ সভাপতি মো: আব্দুল মতিন, উপজেলা সিপিবি’র সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান, লেখক-সাংবাদিক ও সংস্কৃতিকর্মী শাব্বির এলাহী, আল ইসলাহ নেতা হাফেজ এম, এ, ওহাব, ডা: এম, এ, মোহাইমিন, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বিএনপি নেত্রী পারভীন আক্তার লিলি, জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদিকা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক বিলকিস বেগম, আওয়ামীলীগ নেত্রী রুজি বেগম, মুন্না রায়, রুহিয়া আহমদ (মনি), জাতীয় পার্টির মহিলা সম্পাদিকা সুফিয়া খানম প্রমুখ। শমশেরনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেত্রী প্রমুখ। নির্বাচনের তফসিল ঘোষনার পর থেকে সম্ভাব্য এসব প্রার্থীরা উপজেলার সর্বত্র মায়মুরব্বিয়ান, দলীয় নেতাকর্মীরা ছাড়াও সাধারণ জনগণের সহযোগীতা ও সমর্থন লাভে কাজ করছেন। ভোটারদের সঙ্গে নিয়মিত কুশল বিনিময়ের পাশাপাশি শুভাকাঙ্খীদের নিয়ে সিরিজ উঠান বৈঠক অব্যাহত রেখেছেন।