ঋণের বোঝা রয়েই গেলো ! লাশ হয়ে ফিরলেন ৫ সন্তানের জননী স্বপ্না

0
743
ঋণের বোঝা রয়েই গেলো ! লাশ হয়ে ফিরলেন নবীগঞ্জের স্বপ্না

নূরুজ্জামান ফারুকী,বিশেষ প্রতিনিধিঃ জীবিকার তাগিদে মাত্র ৬ মাস আগে স্বপ্নের ঘর সাজাতে নারায়ণগঞ্জে ৫ মেয়ে শিশু কন্যা ও দিনমজুর স্বামীকে নিয়ে কাজ করতে গিয়েছিলেন নবীগঞ্জের স্বপ্না রাণী। ঘটনার সময় বিশ্ব খাঁ রাণী ছিল নীচ তলায়।

লোকজনের চিৎকার শোনে দৌড়ে বের হয়ে যায়।কিন্তু গত ৮ জুলাই ২০২১ নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতায় উপস্থিত সজীব গ্রুপের প্রতিষ্ঠান সেজান জুস কোম্পানির মর্মান্তিক অগ্নিকান্ডে নিভে গেল স্বপ্না রাণীর সেই স্বপ্ন। নিহত স্বপ্না রাণী (৩৮), নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের গোলডুবা আদর্শ (ভূমিহীন) গ্রামের জতি নমের স্ত্রী।

এদিকে মায়ের সাথে একই কোম্পানিতে কাজে থাকা বিশ্ব খাঁ রাণী (১৩), বছরের শিশু প্রাণে ফিরে বেঁচে এসেছে বাবার কোলে। তার চোখে মুখে এখনো ভয়ানক সেইদিনের অগ্নিকান্ডর দৃশ্য ভেসে উঠছে। চোখের সামনে মায়ের মৃত্যু যেন কিছুতেই মানতে পারছে না। গর্ভধারণী মা হারিয়ে ৫ বোনের অার্তনাদে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

শোকে কাতর পুরো গ্রামবাসী। স্বপ্না রাণীর মেয়ে বিশ্ব খাঁ রাণী জানায়, গত ৮ জুলাই ২০২১ অগ্নিকান্ডের সময় তার মা জীবন বাঁচাতে এই কোম্পানির ৩য় তলার জানালার কাছ থেকে লাফ দিয়ে মাটিতে লুটে পড়েন। ওই সময় তার পুরো শরীর রক্তমাখা ছিল। সেখানকার লোকজন তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে সেখানকার স্থানীয়দের সহযোগীতায় ৯ জুলাই স্বপ্না রাণীর মৃতদেহ নবীগঞ্জ নিয়ে আসা হয়।

স্বপ্ন রাণীর স্বামী জতি নম জানান, পরিবারের অভাব অনটন এবং ঋণের বোঝা দূর করতে স্বপরিবারে ৬ মাস পুর্বে নারায়ণগঞ্জের ভাড়া বাসায় উঠেন তারা। বড় মেয়ে ভাসনা রাণী (১৭),কাজ করতেন চায়না ব্যাগ কোম্পানিতে। দ্বিতীয় মেয়ে বিশ্ব খাঁ রাণী (১৩), মায়ের সাথে একই কোম্পানিতে কাজ করতেন।

এছাড়াও স্বপ্না রাণীর আরো তিন মেয়ে রয়েছে। তারা হলো, মিনতি রাণী (১০), মৌসুমী রাণী (৮),জবা রাণী (৩),। জতি নম এ প্রতিবেদককে আরো বলেন, আমরা গরীব মানুষ দিনমজুরী করে খাই। স্ত্রীকে হারিয়ে আজ আমার মেয়েরা দিশেহারা। ঘরে কোনো টাকাও নেই। কাকে বলবো আমাদের সাহায্য করতে?