উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর ছড়াছড়ি

    0
    227

    আমারসিলেট24ডটকম,০৩ফেব্রুয়ারীঃ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের আওয়ামী লীগে বিদ্রোহী প্রার্থীর ছড়াছড়ি। নির্বাচনকে ঘিরে কেন্দ্রীয়ভাবে দলটির সাত বিভাগে সাতটি টিম করে দিলেও সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।ফলে বিরোধী দলবিহীন জাতীয় নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় পেলেও উপজেলা নির্বাচন নিয়ে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে ক্ষমতাসীনরা।

    আওয়ামী লীগের একটি সূত্র জানায়, নির্বাচনে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী দিতে দলীয় প্রধান ও সাধারণ সম্পাদক সব জেলা ও উপজেলায় চিঠি দেন। দলের কেউ বিদ্রোহী হলে তার বহিষ্কারসহ কঠোর ব্যবস্থার হুঁশিয়ারিও দেয়া হয় ওই চিঠিতে। বিদ্রোহী প্রার্থীরা এতেও ভ্রুক্ষেপ না করায় কেন্দ্রীয়ভাবে সাত বিভাগে সাতটি টিম পাঠানো হয়। কিন্তু তাতেও কোনো কাজ হচ্ছে না। বিদ্রোহী ঠেকাতে দলটির সব চেষ্টাই ব্যর্থ হচ্ছে।

    উপজেলায় চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থীতে কাবু হয়ে পড়েছে শাসক দল। নির্বাচন ঘিরে দলটির তৃণমূলে নতুন করে দলাদলিও শুরু হয়েছে। স্থানীয় এমপিদের চেয়ারম্যান পদে নাক গলাতে কেন্দ্র থেকে মানা করে দেয়া হলেও কোথাও কোথাও তারা নিজের পছন্দের প্রার্থী দেয়ার চেষ্টা করছেন।

    প্রথম দফায় দেশের যে ৪০ জেলার ৯৭ উপজেলায় নির্বাচন হতে যাচ্ছে, তাতে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনে ২৬৯ জন নেতা শুধু চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন। অন্য দুটি পদেও একই চিত্র। কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ। ৯৭টি উপজেলার মধ্যে মাত্র ২১টিতে একক প্রার্থী দিতে সক্ষম হয়েছে দলটি। বাকিগুলোতে গড়ে তিন-চারজন করে প্রার্থী নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন।

    খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, নরসিংদী জেলার পলাশ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের সর্বোচ্চ নয়জন প্রার্থী রয়েছেন। আর নড়াইলের কালিয়া উপজেলায়ও দলটির আট প্রার্থী নির্বাচনে মনোনয়ন জমা দিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন। খুলনার দীঘলিয়া উপজেলায় দুজন এবং কয়রা উপজেলায় আওয়ামী লীগের পাঁচজন দলীয় প্রার্থী রয়েছেন। সিলেট জেলার ছয়টি উপজেলার চারটিতেই আওয়ামী লীগের দুজন করে প্রার্থী রয়েছেন। মাত্র দুটি উপজেলায় একক প্রার্থী। একই চিত্র রয়েছে অধিকাংশ উপজেলায়। এগুলোতে গড়ে তিন থেকে চার জন প্রার্থী রয়েছেন বলেও দলীয় সূত্রে জানা গেছে। আর ৯৭টি উপজেলার মধ্যে ২১টি উপজেলায় রয়েছে একক প্রার্থী।

    দলীয় সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার রাজধানীর ধানমন্ডিস্থ দলীয় সভাপতির কার্যালয়ে ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, বরিশাল ও রংপুর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাতটি টিম আলাদা বৈঠক করেছে। এসব বৈঠকে প্রতিটি পদে একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন কেউ কেউ। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতারা বিদ্রোহী প্রার্থীদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার অনুরোধ জানান। কিন্তু তাতেও কোনো ফল দেখা্ যায়নি।

    এ বিষয় রংপুর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী নতুন বার্তাকে বলেন, “একক প্রার্থী দেয়ার জন্য দলের পক্ষ থেকে যে চিঠি দেয়া হয়েছে তা একটু দেরিতে হওয়ায় হয়তো অনেকে প্রার্থী হয়েছেন। কিন্তু দলীয় সিদ্ধান্তের কারণে অনেকেই মনোনয়ন প্রত্যাহার করবেন। আর যারা প্রাত্যাহার করবে না তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।”

    আজ (সোমবার) প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন। প্রথম ধাপে দেশের ৪০ জেলার ৯৭টি উপজেলায় ভোট হবে আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি।

    নির্বাচন কমিশন সূত্র মতে, কয়েক ধাপে এবার উপজেলা নির্বাচন করতে যাচ্ছে কমিশন। তারই ধারাবাহিকতায় এরই মধ্যে দুই দফায় ২১৪টি উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। প্রথম দফায় ৯৭টি উপজেলায় ১৯ ফেব্রুয়ারি এবং দ্বিতীয় দফায় ১১৭টি উপজেলায় ২৭ ফেব্রুয়ারি ভোট হবে।খবরনতুনবার্তা