উত্তর কোরিয়া তার কারিগরি সক্ষমতা দেখিয়েছে। এখন তাকে অন্যের প্রতি কর্তব্যের বিষয়টি মনে রাখতে হবে : ফিদেল ক্যাস্ত্রো

    0
    427

    Fidel castroকিউবার সাবেক প্রেসিডেন্ট ফিদেল ক্যাস্ত্রো গতকাল শুক্রবার উত্তর কোরিয়াকে যুদ্ধে না জড়াতে হুঁশিয়ার করেছেন। ১৯৬২ সালে কিউবায় দেখা দেওয়া ক্ষেপণাস্ত্র সংকটের পর কোরীয় উপদ্বীপে বিদ্যমান উত্তেজনাকে পারমাণবিক ধ্বংসযজ্ঞের জন্য সবচেয়ে ‘ভয়াবহ ঝুঁকি’ বলে মনে করছেন তিনি।
    কিউবার এক সরকারি পত্রিকায় লেখা কলামে ফিদেল উত্তর কোরিয়াকে ‘মিত্র’ সম্বোধন করে লিখেছেন, উত্তর কোরিয়া তার কারিগরি সক্ষমতা দেখিয়েছে। এখন তাকে অন্যের প্রতি কর্তব্যের বিষয়টি মনে রাখতে হবে।
    বর্তমান বিশ্বে এখনো টিকে থাকা কয়েকটি কমিউনিস্ট রাষ্ট্রের মধ্যে রয়েছে কিউবা ও উত্তর কোরিয়া। এ জন্য দেশ দুটির মধ্যে এক ধরনের মিত্রতাও আছে।
    কেউ কেউ ধারণা করছেন, উত্তর কোরিয়া সত্যিই অন্য কোনো রাষ্ট্রে হামলা চালাতে পারে। তবে ফিদেল কাস্ত্রো কয়েক দশক ধরে পারমাণবিক শক্তির ব্যবহারের বিরুদ্ধে সোচ্চার।
    রয়টার্স বলছে, পিতৃসুলভ ভঙ্গিতে ফিদেল লিখেছেন: ‘কিউবা যেমন সব সময়ই গণপ্রজাতন্ত্রী কোরিয়ার মিত্র ছিল ও থাকবে, তেমনি দেশটি সব সময়ই কিউবার মিত্র ছিল। দেশটি তার প্রযুক্তিগত ও বৈজ্ঞানিক অগ্রগতির সাফল্য প্রদর্শন করেছে। এখন আমরা তাকে বন্ধুভাবাপন্ন রাষ্ট্রগুলোর প্রতি তার দায়িত্বের কথা মনে করিয়ে দিতে চাই। এটা ভুলে যাওয়া উচিত নয় যে, এ ধরনের একটি যুদ্ধ বিশ্বের ৭০ শতাংশের বেশি মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।’
    কোরীয় উপদ্বীপের বর্তমান সংকটকে ফিদেল ‘অযৌক্তিক ও উদ্ভট’ বলে অভিহিত করেছেন। তবে তিনি বলেন, ‘৫০ বছর আগে কিউবান ক্ষেপণাস্ত্র সংকট বা অক্টোবর সংকটের পর এবার আবার পারমাণবিক যুদ্ধের ঝুঁকি দেখা দিয়েছে।’
    ১৯৬২ সালের অক্টোবর মাসে শীতল যুদ্ধের সময় কিউবাকে খাদ্যসাহায্য দেওয়ার বিনিময়ে সোভিয়েত ইউনিয়ন কিউবার একটি দ্বীপে পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন করে। এ খবর প্রকাশিত হলে যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা তৈরি হয়। এর মধ্যে ফিদেল সোভিয়েত ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নিকিতা ক্রুশ্চেভকে চিঠি মারফত আহ্বান জানান, যুক্তরাষ্ট্রের ওপর পারমাণবিক হামলা চালাতে।
    কিন্তু ক্রুশ্চেভের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি শান্তিচুক্তি করলে সে সংকট থেকে বিশ্ব মুক্তি পায় এবং শর্তানুযায়ী সোভিয়েত ইউনিয়ন কিউবা থেকে সব ক্ষেপণাস্ত্র সরিয়ে নেয়।
    এর প্রায় দুই দশক পর বিশ্বজুড়ে পারমাণবিক গবেষণা বন্ধের ব্যাপারে জনমত তৈরি হলে ফিদেল ও তার দেশ কিউবা ক্রমে পারমাণবিক অস্ত্র বন্ধের বিষয়ে সরব হয়। এ জন্য কিউবা জাতিসংঘে কয়েক দফায় প্রস্তাব এনেছে। তবে পঞ্চশক্তির চাপে সে চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে গেছে।
    ফিদেল তাঁর কলামে লিখেছেন, যুদ্ধ প্রতিরোধের দায়িত্ব জাতিসংঘের। তবে যদি সত্যিই যুদ্ধ শুরু হয়, তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ‘ইতিহাসে সবচেয়ে অশুভ ব্যক্তি হিসেবে বিবেচিত হবেন’।