আত্রাইয়ে প্রায় বিলুপ্ত ঐতিহ্যবাহী লাঠি ও ঢেঁকি খেলা অনুষ্ঠিত

0
1870

গ্রাম বাংলার এ খেলাগুলো বেশি করে আয়োজনে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার দাবি

নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁয় আত্রাইয়ের প্রত্যন্ত এলাকায় মারিয়া গ্রামের গ্রাম বাংলা থেকে প্রায় বিলুপ্তি খেলা লাঠি, ঢেঁকিসহ বিভিন্ন খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে মারিয়া গ্রামের খেলার মাঠ না থাকায় একটি জমিতে এ খেলার আয়োজন করা হয়। খেলা দেখতে এলাকার বিভিন্ন গ্রাম থেকে শিশু, নারী, পুরুষ, বৃদ্ধসহ হাজারো দর্শক আসেন। প্রায় বিলুপ্ত গ্রাম বাংলার এ খেলাগুলো বেশি করে আয়োজনে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার দাবি জানানো হয়েছে।

এতে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন হেলাল। আত্রাই উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এবাদুর রহমানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইখতেখারুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নৃপেন্দ্রনাথ দত্ত দুলাল, সাধারণ সম্পাদক আক্কাস আলী প্রমূখ।

জানা গেছে, আত্রাই উপজেলার মারিয়ে গ্রামে স্থানীয় একটি এনজিও’র আয়োজনে গত ৮ বছর থেকে গ্রাম বাংলা থেকে প্রায় বিলুপ্তি খেলা লাঠি, ঢেঁকি, শরীরের উপর একাধিক ব্যক্তি উঠে দাঁড়ানো, খেঁজুর গাছে উঠা, কলসি ভর্তি পানি দাঁত দিয়ে তোলাসহ বিভিন্ন খেলার আয়োজন করা হয়। গ্রামে খেলার মাঠ না থাকায় গ্রামের গ্রামের একটি জমিতে এর আয়োজন করা হয়। স্থানীয় লাঠিয়ালরা লাঠি খেলায় অংশগ্রহণ করতে দুপূরে আসেন গ্রামে। এ সময় বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে খেলোয়ারা শারীরিক কসরত দেখাতে শুরু করেন লাঠিয়ালরা। তাদের লাঠি খেলাসহ অন্যান্য খেলা দেখতে মারিয়া গ্রামে আসেন হাজারো দর্শক। শিশু, নারী, পুরুষ, বৃদ্ধ, পরিবার-পরিজন নিয়ে গোল হয়ে উপভোগ করেন গ্রাম বাংলার এই খেলাগুলো। দর্শক মরিয়ম বেগম জানান, আমরা এই খেলাগুলো ভুলে গিয়েছিলাম। খুব ভালো লেগেছে।
খেলায় অংশ নেওয়া লাঠিয়াল আমজাদ হোসেন, কবির শেখসসহ অন্যরা জানান, বংশ পরম্পায় এই ঐহিত্যবাহী খেলাগুলো শিখেছেন। এই খেলাগুলো ধরে রাখতে তাদের নতুন প্রজন্মেদের শিখিয়েছেন।
স্থানীয় প্রবীন শিক্ষক সিদ্দিকুর রহমান জানান, আগে এই খেলাগুলো প্রতি বছর বিভিন্ন গ্রামে অনুষ্ঠিত হতো। গ্রাম বাংলা থেকে প্রায় বিলুপ্তি এই খেলাগুলো আরো বেশি করে আয়োজন করা হলে সমাজে বিভিন্ন ধরনের অপরাধ প্রবণতা কমার পাশাপাশি বাঙ্গালিদের মধ্যে জাতীয় ঐক্য গড়ে উঠার আশা ব্যক্ত করে সচেতন মহল।
সচেতন মহল মনে করছেন, দেশে মাদক, দূর্নীতি, সন্ত্রাস, বাল্য বিবাহ, কুসংষ্কার মুক্ত সমাজ গড়ে তুলতে প্রায় বিলুপ্ত গ্রাম বাংলার এ খেলাগুলো বেশি করে আয়োজনে সরকারি ও বে-সরকারি ভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করা প্রয়োজন।
মারিয়া গ্রামে পূর্ণিমা পল্লী উন্নয়ন সংস্থার পরিচালক এস এম হাসান সেন্টু জানান, সমাজের বৃত্তবানরা এগিয়ে এলে গ্রাম বাংলার প্রায় বিলুপ্ত হওয়া এই খেলাগুলো আরো বেশি করে আয়োজন সম্ভব।
সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন হেলাল জানান, গ্রামীণ খেলায় সরকারি ভাবে সহযোগিতা অব্যাহত রয়েছে। আগামিতেও এই গ্রামীণ খেলাগুলো ধরে রাখতে সকল সহযোগিতা অব্যাহত রাখা হবে।