৮ এপ্রিল সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হেফাজতের হরতাল

    0
    429

    আগামী ৮ এপ্রিল সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম। রাজধানীর মতিঝিলে শাপলা চত্বরে মহাসমাবেশ থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

    দাবি না মানলে আগামী ৫ মে ঢাকা অবরোধের ঘোষণাও দিয়েছে দলটি।
    আজ শনিবার বিকেল পাঁচটার দিকে মহাসমাবেশ শেষে হেফাজতের মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরী হরতালের ঘোষণা দেন।  
    হেফাজতের মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরী আরও ঘোষণা দেন, আগামী ১১ এপ্রিল সিলেট, ১২ এপ্রিল ব্রাক্ষণবাড়িয়া, ১৩ এপ্রিল ময়মনসিংহ, ১৮ এপ্রিল বরিশাল, ১৯ এপ্রিল ফরিদপুর, ২০ এপ্রিল খুলনা, ২৬ এপ্রিল চট্টগ্রাম, ২৯ এপ্রিল রাজশাহী ও ৩০ এপ্রিল বগুড়ায় শানে রেসালাত মহাসমাবেশ করবে হেফাজত। এই সময়ের মধ্যে দাবি মানা না হলে আগামী ৫ মে ঢাকা অবরোধ করবে হেফাজত। আটক নেতাকর্মীদের আজ রাত ১০টার মধ্যে মুক্তি দেওয়ারও দাবি জানিয়েছে হেফাজত।
    আজ সকাল ১০টার দিকে হেফাজতের ডাকা মহাসমাবেশ শুরু হয়। সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করেন, বর্তমান সরকার ‘নাস্তিকদের’ পক্ষে অবস্থান নিয়ে প্রমাণ করেছে তারা মুসলমানদের সরকার নয়। তারা ‘নাস্তিকদের’ সরকার। বক্তারা তাঁদের শাস্তি দাবি করেন।

    হেফাজতেইসলামের১৩দফাদাবি :
    ১. সংবিধানে ‘আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস’ পুনঃস্থাপন এবং কোরআন-সুন্নাহবিরোধী সব আইন বাতিল করা।
    ২. আল্লাহ, রাসুল (দ:) ও ইসলাম ধর্মের অবমাননা এবং মুসলমানদের বিরুদ্ধে কুত্সা রোধে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে জাতীয় সংসদে আইন পাস।
    ৩. কথিত শাহবাগি আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী স্বঘোষিত নাস্তিক-মুরতাদ এবং প্রিয় নবী (দ:)-এর শানে জঘন্য কুত্সা রটনাকারী ব্লগার ও ইসলামবিদ্বেষীদের সব অপপ্রচার বন্ধসহ কঠোর শাস্তিদানের ব্যবস্থা করা।
    ৪. ব্যক্তি ও বাকস্বাধীনতার নামে সব বেহায়াপনা, অনাচার, ব্যভিচার, প্রকাশ্যে নারী-পুরুষের অবাধ বিচরণ, মোমবাতি প্রজ্বালনসহ সব বিজাতীয় সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ বন্ধ করা।
    ৫. ইসলামবিরোধী নারীনীতি, ধর্মহীন শিক্ষানীতি বাতিল করে শিক্ষার প্রাথমিক স্তর থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত ইসলাম ধর্মীয় শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করা।
    ৬. সরকারিভাবে কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণা এবং তাদের প্রচারণা ও ষড়যন্ত্রমূলক সব অপতত্পরতা বন্ধ করা।
    ৭. মসজিদের নগর ঢাকাকে মূর্তির নগরে রূপান্তর এবং দেশব্যাপী রাস্তার মোড়ে ও কলেজ-ভার্সিটিতে ভাস্কর্যের নামে মূর্তি স্থাপন বন্ধ করা।
    ৮. জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ দেশের সব মসজিদে মুসল্লিদের নির্বিঘ্নে নামাজ আদায়ে বাধাবিপত্তি ও প্রতিবন্ধকতা অপসারণ এবং ওয়াজ-নসিহত ও ধর্মীয় কার্যকলাপে বাধাদান বন্ধ করা।
    ৯. রেডিও-টেলিভিশনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে দাড়ি-টুপি ও ইসলামি কৃষ্টি-কালচার নিয়ে হাসিঠাট্টা এবং নাটক-সিনেমায় নেতিবাচক চরিত্রে ধর্মীয় লেবাস-পোশাক পরিয়ে অভিনয়ের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের মনে ইসলামের প্রতি বিদ্বেষমূলক মনোভাব সৃষ্টির অপপ্রয়াস বন্ধ করা।
    ১০. পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশব্যাপী ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত এনজিও এবং খ্রিষ্টান মিশনারিগুলোর ধর্মান্তকরণসহ সব অপতত্পরতা বন্ধ করা।
    ১১. রাসুলপ্রেমিক প্রতিবাদী আলেম-ওলামা, মাদ্রাসার ছাত্র ও তৌহিদি জনতার ওপর হামলা, দমন-পীড়ন, নির্বিচার গুলিবর্ষণ এবং গণহত্যা বন্ধ করা।
    ১২. সারাদেশের কওমি মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষক, ওলামা-মাশায়েখ ও মসজিদের ইমাম-খতিবকে হুমকি-ধমকি, ভয়ভীতি দানসহ তাঁদের বিরুদ্ধে সব ষড়যন্ত্র বন্ধ করা।
    ১৩. অবিলম্বে গ্রেপ্তারকৃত সব আলেম-ওলামা, মাদ্রাসাছাত্র ও তৌহিদি জনতাকে মুক্তিদান, দায়ের করা সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং আহত ও নিহত ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণসহ দুষ্কৃতকারীদের বিচারের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দিতে হবে।