৬ টুকরা লাশের গল্পে শেষপর্যন্ত পরকীয়া জুটি ইমাম ও নিহতের স্ত্রী আসমার স্বীকারোক্তি

0
857
৬ টুকরা লাশের গল্পে শেষপর্যন্ত পরকীয়া জুটি ইমাম ও নিহতের স্ত্রী আসমার স্বীকারোক্তি
৬ টুকরা লাশের গল্পে শেষপর্যন্ত পরকীয়া জুটি ইমাম ও নিহতের স্ত্রী আসমার স্বীকারোক্তি

হত্যাকারী ইমাম মাওলানা আব্দুর রহমান ৩৩ বছর ধরে একই মসজিদে ইমামের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। নিহত আজহারুলের ৪ বছরের শিশু সন্তান ও ধর্মীয় শিক্ষা নিতেন তার কাছে এমন কি আজহারুল নিজেও ওই ইমামের কাছে ধর্মিয় শিক্ষা নিতেন।

নুরুজ্জামান ফারুকীঃ পরকীয়া প্রকাশের জের ধরে রাজধানী ঢাকার দক্ষিণখানে খুন হওয়া আজহারুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির ৬ টুকরো লাশ মসজিদের সেপটিক ট্যাংকি থেকে উদ্ধারের মামলায় আদালতে দোষ স্বীকার করেছেন নিহত আজহারুল (৪০) এর স্ত্রী খুনের প্রধান পরিকল্পনাকারী আসমা আক্তার ও তার পরকীয়া প্রেমিক মসজিদের ইমাম হত্যাকারী মাওলানা আব্দুর রহমান। রোববার (৩০মে) পৃথক আদালতে হাজির করলে তারা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার পূর্ণ বিবরণ প্রদান করেন। ঢাকা মহানগর হাকিম বিমান চন্দ্র মন্ডল নিহতের স্ত্রী আসমার জবানবন্দি রেকর্ড করেন এবং হত্যাকাণ্ডে জড়িত আসমার পরকীয়া প্রেমিক মসজিদের ইমাম আবদুর রহমানের জবান বন্দী রেকর্ড করেন ঢাকা মহানগর হাকিম আবু সুফিয়ান মোহাম্মদ নোমান পরে তাদের কারাগারে প্রেরণ করা হয়।

উপ-পরিদর্শক অনুজ কুমার সর্কার আসামিদের আদালতে হাজির করে স্বীকারোক্তি রেকর্ডের আবেদন করেন এর আগে গত বুধবার 1 তারিখে আদালত 2 আসামির 5 দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন মামলার বিবরণে জানা যায় নিহত আজহারুল পেশায় একজন গার্মেন্টস কর্মী ছিলেন তিনি রাজধানীর মধুবাগ এলাকার ইউসুফ গাজীর নম্বর বাসায় ভাড়া থাকতেন নিকটস্থ সরদার বাড়ী জামে মসজিদের ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মাওলানা আব্দুর রহমান এক পর্যায়ে নিহত আজহারুল ছেলে আরিয়ান লেখাপড়া করতেন হাজারো আব্দুর রহমানের কুরআন শিক্ষা নিয়েছেন সেই পরিচয়ের সুবাদে আজহার বাসায় যাতায়াত করতেন আব্দুর রহমান আব্দুর রহমান আজহারী স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়লে বিষয়টি জেনে নিন পরে গত ২০মে রাত নয়টার দিকে হত্যার উদ্দেশ্যে কৌশলে দক্ষিনখান থানা সরকার বাড়ী জামে মসজিদের দ্বিতীয় তলার কর্নারে রাত দশটার দিকে আব্দুর রহমান তাঁর কক্ষে ডেকে নিয়ে যান এ সময় তাদের মধ্যে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে হাতাহাতির সময়ে আজহারুল পড়ে গেলে ইমাম আব্দুর রহমান আজহারের গলার ডান পাশে দাঁড়ালে অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে।আঘাত এর পরে ঘটনাস্থলে আজহারুল মৃত্যুবরণ করেন।

পরবর্তীতে এ নির্মম হত্যাকাণ্ডের আলামত গোপন করার উদ্দেশ্যে আজহারুলের মৃতদেহ ইমাম আব্দুর রহমান পরে মসজিদের গেট সংলগ্ন একটি সেপটিক ট্যাংকের ভেতর ৬ টুকরো করে লুকিয়ে রাখেন।যখন দুর্গন্ধ বের হতে থাকে এর উপর সিমেন্ট দিয়ে প্লাস্টার করে দুর্গন্ধ বন্ধ করে দেন।আসামিদের গ্রেপ্তারের পর পূর্বপরিকল্পনায় কাণ্ড ঘটিয়েছে বলে আব্দুর রহমান আদালতে স্বীকার করেন তাদের সহায়তায় দোকান থানা পুলিশ গত ২৫ মে সকাল সাড়ে নয়টার দিকে আজহারুলের খন্ডিত ৬ টুকরো লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় আজহারুলের ছোট ভাই মোঃ হাসান স্থানীয় থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

প্রসঙ্গত,মঙ্গলবার বিকালে ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলন করে র‍্যাব। এসময় তারা জানায়, সোমবার মসজিদের সিঁড়িতে রক্তের দাগ ও সেপটিক ট্যাংক থেকে দুর্গন্ধ বের হচ্ছিল। এছাড়া আজহার ১৯ তারিখ থেকে নিখোঁজ ছিল। এমন ঘটনায় অনুসন্ধান শুরু করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পরে র‍্যাব ইমামকে আটক করে এবং জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার ঘটনা জানতে পারে। এ সময় অভিযুক্তের কাছ থেকে হত্যায় ব্যবহৃত তিনটি চাকু ও মোবাইল উদ্ধার করা হয়।জানা যায় ইমাম মাওলানা আব্দুর রহমান ৩৩ বছর ধরে একই মসজিদে ইমামের দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
তাছাড়া নিহত আজহারুলের ৪ বছরের শিশু সন্তান ধর্মীয় শিক্ষা নিতেন এমন কি আজহারুল নিজেও ওই ইমামের কাছে ধর্মিয় শিক্ষা নিতেন।