সেনাবাহিনীর বিষয়ে খালেদা জিয়ার মন্তব্যে সরকারের ভেতরে বিরূপ প্রতিক্রিয়া

    0
    430

    ॥ মকবুল হাসান ইমরান ॥  Khaleda

    গত রোববার বগুড়া সদরের মাটিডালি মোড়ে এক সমাবেশে খালেদা জিয়া বলেন, ‘সেনাবাহিনীরও দেশের প্রতি কর্তব্য আছে। তারা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করবে না। মানুষ খুন করবে আর তারা চেয়ে চেয়ে দেখবে? কাজেই সেনাবাহিনী সময়মতোই তাদের দায়িত্ব পালন করবে।’

    সেনাবাহিনীর বিষয়ে বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়ার মন্তব্যে সরকারের ভেতরে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হয়েছে। সরকার মনে করে, বেগম জিয়া সশস্ত্র বাহিনীকে সরকারের বিরুদ্ধে উসকে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। এ জন্য তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।

    সরকারের ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, সরকারের উচ্চপর্যায়ে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। কয়েকজন মন্ত্রীও খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ এনে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছেন। আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর।

    এ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তিনি তাঁর স্বভাব অনুযায়ী দেশের সশস্ত্র বাহিনীকে সরকারের বিরুদ্ধে উত্তেজিত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। এ ধরনের আচরণ দায়িত্বহীন, অধিকন্তু দণ্ডনীয় অপরাধ। ১৯৮৬ সালে সিপাহি জনতাকে তৎকালীন সরকারের বিরুদ্ধে একইভাবে আহ্বান করা হয়েছিল। যিনি বা যাঁরা স্বৈরতন্ত্রের সমর্থক ও গণতন্ত্রের প্রতি অবিশ্বাসী, যাঁরা নিজেদের স্বার্থের কথা চিন্তা করেন, তাঁরাই এমন অপরাধ করতে পারেন।

    আইনগত ব্যবস্থা বলতে কী বোঝাতে চাইছেন, জানতে চাইলে মহীউদ্দীন খান আলমগীর বলেন, খালেদা জিয়া সেনাবাহিনী বিষয়ে যেসব কথা বলেছেন, তা রাষ্ট্রদ্রোহের শামিল। দেশের প্রচলিত আইনে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মতো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার এ অবস্থান দেশদ্রোহের নামান্তর। আশা করি, দেশবাসী গণতন্ত্রের প্রতি অবিচল আস্থা রেখে এ ধরনের দায়িত্বহীন ও রাষ্ট্রবিরোধী বক্তব্য দেওয়ার জন্য খালেদা জিয়ার যথার্থ বিচার করবে।’

    এদিকে মন্ত্রিসভার বৈঠক সূত্র জানায়, মন্ত্রিসভার সদস্যরা খালেদা জিয়ার বক্তব্যকে ‘রাষ্ট্রদ্রোহী ও অগণতান্ত্রিক’ মন্তব্য করে সরকারকে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। গতকাল সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় মন্ত্রীরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ করে বলেন, রাষ্ট্রদ্রোহী না হলে দেশ ও দেশের স্বার্থবিরোধী বিভ্রান্তিকর এ ধরনের বক্তব্য তিনি দিতে পারতেন না। বিভিন্ন জনসভা ও পথসভায় তাঁর সাম্প্রতিক বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের পক্ষ থেকে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।

    জানা গেছে, মন্ত্রীদের বক্তব্যের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।