সরকারী মালিকানাধীন চা বাগানে ধর্মঘট

    0
    223

    আমার সিলেট  24 ডটকম,অক্টোবর,শাব্বির এলাহীঃ শ্রমিকের বসত ঘরের সৃজিত গাছ কাটা ও উৎসব বোনাস কম দেওয়া নিয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে সৃষ্ট বিরোধে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার ত্রিপুরা সীমান্তবর্তী সরকারী মালিকানাধীন দু’টি চা বাগানের ৩ হাজার চা শ্রমিক কাজে যোগ না দিয়ে ধর্মঘট শুরু করে। বুধবার কুরমা চা বাগানে এক শ্রমিক ঘরের আঙ্গিনায় সৃজিত একটি কাঁঠাল গাছ কেটে নিলে উপ-মহা ব্যবস্থাপকের সাথে বিরোধ দেখা দিলে আজ শুক্রবার সকাল ৭ টায় দু’টি চা বাগানের শ্রমিকরা কাজে যোগ না দিয়ে কারখানার সামনে অবস্থান ধর্মঘট শুরু করে। ৩ ঘন্টা পর স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপে চা শ্রমিকরা কাজে যোগ দেয়।সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ন্যাশনাল টি কোম্পানী(এনটিসি)-র মালিকানাধীন কুরমা চা বাগানের শ্রমিক যোগেশ রজব তার ঘরের আঙ্গিনায় সৃজিত একটি কাঁঠাল গাছ কেটে বিক্রির জন্য নিয়ে যাচ্ছিল। বুধবার এনটিসির উপ-মহা ব্যবস্থাপক(ডিজিএম) এস এম শাহজাহান এ গাছটি জব্দ করেন। এ ঘটনায় চা শ্রমিকরা কুরমা চা বাগান ব্যবস্থাপক ও কোম্পানীর উপ-মহাব্যবস্থাপকের সাথে সমঝোতা করতে চাইলে গত দুই দিনে কোন সমাধান হয়নি। ঘটনার জন্য চা শ্রমিক যোগেশ ক্ষমা প্রার্থনা করলেও উপ-মহাব্যবস্থাপক এস এম শাহাজাহান ৮ কিঃমিঃ দূরের পাত্রখোলা চা বাগানে তাঁর অফিসে গিয়ে ক্ষমা চাইতে বলায় সাধারন শ্রমিকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

    চা শ্রমিক যোগেশ রজব অভিযোগ করে বলেন, শ্রমিকরা নিজের বসত ঘরের আঙ্গিনায় ফলজ গাছ লাগিয়ে ভোগ করে ও এক সময় পারিবারিক প্রয়োজনে গাছ বিক্রি করে। এতে শ্রমিকদের দোষ হয়ে যায়। আর চা বাগানের অসাধু ব্যবস্থাপকরা প্লান্টেশন এলাকার ছায়াদানকারী গাছ কেটে বিক্রি করে। তাতে কোন সমস্যা হয়না। বিক্ষোব্ধ অনেক চা শ্রমিক জানান, অতি সম্প্রতি শেষ হওয়া শারদীয় দুর্গোৎসবে কুরমা ও চাম্পারায় চা বাগানে নির্ধারিত উৎসব বোনাসের টাকা থেকে কম দেওয়া হয়েছে। তাই গাছ কাটা ও উৎসব বোনাসের বিষয় নিয়ে প্রতিবাদে শুক্রবার সকাল থেকে কুরমা ও চাম্পারায় চা বাগানের শ্রমিকরা কাজে যোগ না দিয়ে অবস্থান ধর্মঘট শুরু করে।বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদক রাম ভজন কৈরী বলেন, চলতি উৎসব বোনাস ৮৯৭ টাকা হারে প্রদান করা হয়েছে। তবে চা বাগানে বিগত ৩টি বোনাস ৮০৬ টাকার স্থলে ৬২৪ টাকা করে প্রদান করা হয়েছিল এ দু’টি চা বাগানে। শ্রমিকরা বিগত এই তিনটি বোনাসের বকেয়া টাকাও দাবী করছে। তিনি আরও বলেন, চা শ্রমিকদের বসত ঘরের গাছ গাছালি ভোগ দখলের একটা অধিকার আছে। এনটিসির এ কর্মকর্তা চা শ্রমিকের এ অধিকারের উপর হাত দিয়েছেন বলেই আজ ধর্মঘট শুরু হয়েছে। দু’টি চা বাগানে শ্রমিক ধর্মঘট শুরু হলে স্থানীয় ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ নেতা মোঃ সুলেমান মিয়া ও এনটিসির অবসারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক আইয়ূব খানের হস্তক্ষেপে তাৎক্ষনিক বৈঠকে সমস্যার সুষ্ঠু সমাধানের আশ্বাসে ধর্মঘট প্রত্যাহার করে প্রায় ৩ ঘন্টা পর বেলা ১১টায় কুরমা চা বাগানের শ্রমিকরা কাজে যোগ দেয়। অন্যদিকে একই আশ্বাসে দিলে বেলা ১২টায় চাম্পারায় চা বাগানের শ্রমিকরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে কাজে যোগ দেয়। ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ সুলেমান মিয়া বলেন, আগামী ৭ দিনের মধ্যে আবারও একটি বড় বৈঠক করে শ্রমিকদের ন্যায্য দাবীগুলো বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে। এনটিসির উপ-মহাব্যবস্থাপক এস এম শাহজাহান বলেন, আপাতত সমস্যার সমাধান হয়েছে। পরবর্তী বৈঠকে এ সমস্যার পুরো সমাধান হয়ে যাবে।