শ্রীমঙ্গলে আনারসের ভরা মৌসুমঃহিমাগার জরুরী

0
192

নূর মোহাম্মদ সাগর,শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধিঃ মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে চায়ের পরেই রয়েছে আনারসের খ্যাতি সারা দেশে। জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সারাবছরই কমবেশি আনারস পৌছে যায়। আর এবার দেশজোড়া খ্যাতি সেই আনারসের বাম্পার ফলন হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষক ও কৃষি বিভাগ। তবে এই বিশাল এলাকার আনারস পচন থেকে বাঁচাতে হিমাগার জরুরি বলে চাষীরা জানিয়েছে

আনারস একটি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর ফল। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থকরী ফসলও। আমাদের দেশে মূলত সিলেট, মৌলভীবাজার, টাঙ্গাইল, চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামে ব্যাপক আকারে আনারস চাষ হয়ে থাকে।
তবে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে উৎপাদিত আনারস দেশখ্যাত। রসে ভরপুর শ্রীমঙ্গলের আনারসের জুড়ি মিলা ভার।আনারস ফল হিসেবে খাবারের পাশাপাশি জেম, জুস কিংবা জেলী হিসেবে খাওয়া যায়।
উপজেলা কৃষি অফিস সুত্র জানায়,পাহাড়ি উঁচু-নিচু টিলায় ষাটের দশক থেকে আনারস চাষ শুরু হয়।এখানকার উষ্ণ ও আদ্র জলবায়ু আনারস চাষের জন্য খুবই উপযোগী।উপজেলার মোহাজেরাবাদ, বিষামণি,হোসনাবাদ, বালিশিরা, ডলুছড়া,সাতগাঁও, নন্দরানী ও মাইজদীহির পাহাড়ি এলাকার প্রায় ৩১০ হেক্টর জমিতে আনারসের চাষ হয়েছে।

উপজেলার বিষামণি এলাকার আনারস বাগান মালিক বিল্লাল মিয়া জানান,এবার তার ফলন ভালো হওয়ায় একটু আগেই আনারস গুলো উত্তোলন করে বিক্রি করেছেন তিনি। নানা প্রতিকূলতার কারণে দিন দিন আনারস চাষ কমে যাচ্ছে। আনারসের পরিবর্তে চাষিরা এখন লেবু চাষের দিকে বেশি ঝুঁকে পড়ছে।শ্রীমঙ্গলের মাটি,আবহাওয়া ও জলবায়ু আনারস চাষের বিশেষ উপযোগী হওয়ায় এখানে উঁচুনিচু পাহাড়ি টিলায় প্রচুর আনারসের চাষ হয়।

বেগুন বাড়ী আনারস বাগান মালিক ইরেশ পাল বলেন,বৃষ্টি হওয়াতে এবার আনারসের ফলন খুব ভালো হয়েছে।ঈশ্বর আমাদের দিকে এবার চেয়েছেন তাই বৃষ্টি অনেক আগে দিয়েছেন ।আগে বৃষ্টি হওয়ায় আমাদের ফলন ও ভালো হয়েছে।ফলন ভালো হওয়ায় আমরা অনেক খুশি।তবে অভিযোক করে বলেন, সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় পঁচনশীল এ ফল যখন একসঙ্গে পাকতে শুরুকরে তখন কৃষকদের নামমাত্র মূল্যে অনেক সময় ফল বিক্রি করে দিতে হয়। এছাড়াও অনেক আনারস পঁেচ নষ্ট হয়। আনারস সংরক্ষণের জন্য শ্রীমঙ্গলে একটি হিমাগার স্থাপন জরুরী।
জমির উব্রতা হ্রাস, সার ও চারার দাম বৃদ্ধি, শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি- সব মিলিয়ে আনারসের উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। তবুও তারা শ্রীমঙ্গলের ঐতিহ্যবাহী আনারসের আবাদ ধরে রাখার চেষ্টা করছেন। সুস্বাদু ফল আনারস প্রক্রিয়াজাতকরণের কোনো ব্যবস্থা এখানে নেই। প্রক্রিয়াজাত করে বিদেশে রপ্তানি করলে এ ফল থেকে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা উজ্জল সূত্রধর বলেন,শ্রীমঙ্গলে এবার ৩১০ হেক্টর জমিতে হানি কুইন ও জায়ান্ট কিউ দুই ধরনের আনারসের চাষ বেশি হয়েছে। আমরা এর উৎপাদন লক্ষমাত্রা নির্ধারন করেছি। তিনি আরো জানান আনারসের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য চাষিদের বিভিন্ন ধরনের সহযোগীতা ও প্রশিক্ষণ কৃষি অফিস থেকে দেওয়া হয়েছে।এছাড়াও অনেক কৃষক আমাদের কাছে অভিযোক করেছেন যে আনারস পঁেচ নষ্ট হয়। আনারস সংরক্ষণের জন্য শ্রীমঙ্গলে একটি হিমাগার স্থাপন জরুরী।কৃষকদের আমরা বলেছি শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর থেকে মন্ত্রনালয়ে চিঠি পাঠিয়েছি শ্রীমঙ্গলে একটি হিমাগার স্থাপনের জন্য।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here