যশোরের চৌগাছায় সৌর বিদ্যুৎচালিত সেচ কার্যক্রমের উদ্বোধন

    0
    224

    আমারসিলেট24ডটকম,০৫ফেব্রুয়ারীঃ যশোরের চৌগাছায় সৌর বিদ্যুৎচালিত সেচ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার সাঞ্চাডাঙ্গা গ্রামের মাঠে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোস্তাফিজুর রহমান।
    উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুষমা সুলতানা, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মতিয়ার রহমান, স্থানীয় স্বরুপদাহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল কদর, উপকার ভোগী কৃষক আবু সামা, রফিকুল ইসলাম মাস্টার, ইলেকট্রো সোলার পাওয়ার লিমিটেডের সিনিয়র ম্যানেজার প্রকৌশলী মুশফিকুর রহমান ও রহিমা আফরোজ কোম্পানীর নির্বাহী প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার আরিফ হোসেন প্রমুখ।
    এ ছাড়া যশোরস্থ আইএফআইসি ব্যাংকের ম্যানেজার ফজলুর রহমান, এবি ব্যাংকের ম্যানেজার মাহমুদুল কুদ্দুস, এনসিসি ব্যাংকের ম্যানেজার ফজলে মাহমুদ, প্রফেসর আব্দুল মান্নানসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও কয়েকশ’ কৃষক ওই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আর্স বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক সামছুল আলম।
    ইনফ্রাস্টাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানী লিমিটেড-এর অর্থায়নে ও রহিমা আফরোজ রিনিউএবল এনার্জী লিমিটেড-এর কারিগরি সহায়তায় আর্স বাংলাদেশ যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও ঝিনাইদহ জেলায় সৌরবিদ্যুৎকে কাজে লাগিয়ে সোলার ইরগেশন প্রকল্পের আওতায় সেচ কার্যক্রম শুরু করেছে। এরই অংশ হিসেবে মঙ্গলবার জেলার সাঞ্চডাঙ্গা গ্রামের মাঠে ১০ হর্স পাওয়ারের ৭টি সেচ পাম্পের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোস্তাফিজুর রহমান।
    উদ্বোধনী বক্তৃতায় জেলা প্রশাসক বলেন, দেশের কৃষি ক্ষেত্রে নতুন যুগের সুচনা হলো আজকের এই উদ্বোধনী কার্যক্রমের মাধ্যমে। আর্স বাংলাদেশের এই সাহসী উদ্যোগ এ দেশের কৃষিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। ডিজেলের ব্যবহার রোধ ও পানির অপচয় রোধকল্পে এই সৌরশক্তি ব্যবহারের কোন বিকল্প নেই। কিন্তু কাজটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। একই সাথে ব্যয়বহুল। আর্স বাংলাদেশ এই ঝুঁকিপূর্ণ কাজটি হাতে নিয়ে একটি মডেল স্থাপন করেছে।
    প্রকল্পের নির্বাহী পরিচালক ও আর্স বাংলাদেশে নির্বাহী সামছুল আলম তার বক্তৃতায় বলেন, স্বনির্ভর বাংলাদেশ গড়তে হলে প্রযুক্তিনির্ভর বাংলাদেশের বিকল্প নেই। আর্স বাংলাদেশ সেই লক্ষ্যে কাজ করছে। কৃষিনির্ভর এই দেশে কৃষি ক্ষেত্রের উন্নয়ন ঘটাতে পারলে দেশ এগিয়ে যাবে। কৃষকরা নিজেদের ভাগ্য নিজেরা গড়তে পারবে। সেই লক্ষ্য নিয়ে নতুন এই প্রযুক্তি নিয়ে কৃষকদের মধ্যে হাজির হয়েছে আর্স বাংলাদেশ। এর ফলে ডিজেলের ব্যবহার কমবে। জমির অপচয় রোধ হবে। জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত হবে। পানি সেচের যন্ত্রণা থেকে কৃষকরা রক্ষা পাবে। বাড়তি খরচের হাত থেকে প্রান্তিক চাষীরা বাঁচবে। তিনি বলেন, বর্তমানে ডিজেল ইঞ্জিনচালিত স্যালো ইঞ্জিনে প্রতি বিঘা জমিতে বোরো ও আমন ধানের ক্ষেতে পানি সেচ দিতে ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা খরচ হয়। কিন্তু সৌর শক্তি চালিত সেচ পাম্পে এই খরচ হবে বছরে মাত্র সাড়ে ৩ থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকার মতো। এতে করে কৃষকরা সারাবছর জমিতে প্রয়োজন মতো পানি সেচ দিতে পারবে। বছরে তারা জমিতে ৩টি ফসল করতে পারবে। ফলে অর্থেক খরচে কৃষকরা এখন থেকে তাদের জমিতে সেচ দিতে পারবে। তিনি ভবিষ্যতে এই প্রকল্পের প্রসরতা বৃদ্ধির আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
    উদ্যোক্তারা জানান, ১১ দশমিক ৮৪ কিলোওয়াট শক্তিসম্পন্ন একটি সোলার প্যানেল ও সাবমারসিবল এসি পাম্প স্থাপনে মোট খরচ হচ্ছে ২৯ থেকে ৩০ লাখ টাকা। প্রতিটি সেচ পাম্প থেকে সূর্য ওা থেকে সূর্য অস্ত যাওয়া পর্যন্ত ৭ থেকে ৯ লাখ লিটার পানি উত্তোলন করা সম্ভব। যা দিয়ে বোরো মৌসুমে ৮০ থেকে ৯০ বিঘা এবং আমন মৌসুমে ৯০ থেকে ১২০ বিঘা পর্যন্ত জমিতে নিরবিচ্ছিন্ন সেচ দেয়া সম্ভব।খবর বাসস।