মাধবপুরে ইউপি সদস্যসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে গনধর্ষণের অভিযোগ

0
456
মাধবপুরে ইউপি সদস্যসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে গনধর্ষণের অভিযোগ
মাধবপুরে ইউপি সদস্যসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে গনধর্ষণের অভিযোগ

নূরুজ্জামান ফারুকী,বিশেষ প্রতিনিধিঃ মাধবপুরে এক তরুণী গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন। ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক থেকে তুলে নিয়ে একটি ঘরে আটকে টানা দুই দিন ধরে তাকে ধর্ষণ করা হয়। এতে ওই তরুণী অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে হাত-পা বেঁধে তাকে মহাসড়কের পাশে রাস্তায় ফেলে রাখা হয়।

গুরুতর অবস্থায় পথচারীদের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করে সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চট্টগ্রাম থেকে কোম্পানিতে চাকরির সন্ধানে এসে তিনি এ ধর্ষণের শিকার হন।

ধর্ষিতার অভিযোগ স্থানীয় ইউপি মেম্বারসহ ৪ জন তাকে ধর্ষণ করেছে। নির্যাতন, মারপিটও করেছে।

ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতরা এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে বলে জানিয়েছেন বাঘাসুরা ইউনিয়নের মেম্বার (সাধারণ সদস্য) নূর ধন। তিনি বলেন, আমরা শুনেছি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রফিক মিয়া নামে একজনকে আটক করেছে। তিনি একজন সাধারণ কৃষক। তাজপুর গ্রামের মধু মিয়ার ছেলে। প্রকৃতপক্ষে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত রফিক রিয়াজনগর গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবার নাম দুধ মিয়া। তার অপর সহযোগীরা হচ্ছে- বিল্লাল, গিয়াস ও নজরুল। তারাও একই গ্রামের বাসিন্দা। তাদের বিরুদ্ধে মাদক, চুরিসহ বিভিন্ন অভিযোগে থানায় মামলাও রয়েছে।

ইউপি মেম্বার নূর ধন বলেন, শুনেছি যাকে আটক করা হয়েছে সে চেয়ারম্যান, মেম্বারসহ সবার নামই বলে যাচ্ছে।

বাঘাসুরা ইউপি চেয়ারম্যান সাহাব উদ্দিন আহমেদও একই কথা জানান। তিনি বলেন, আমি চিকিৎসা করাতে ঢাকায় অবস্থান করছি। ঘটনাটি শুনেছি। আমি এখান থেকে মোবাইল ফোনে বিষয়টি সম্পর্কে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি। যারা ঘটনাটি ঘটিয়েছে তারা বখাটে। মাজারে মাজারে ঘুরে বেড়ায়।

মাধবপুর থানার ওসি মুহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক জানান, ঘটনাটি শুনার পর তরুণীকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেছে। তরুণীর কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ এখনো পাওয়া যায়নি। পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে এ বিষয়ে কাউকে এখনো আটক করা হয়নি।

র‌্যাব-৯ সিপিসি-১ হবিগঞ্জের লে. কমান্ডার মোহাম্মদ নাহিদ হাসান জানান, তারা অভিযান শুরু করেছেন। তবে এ ঘটনায় কাউকে এখনো আটক করেননি। অভিযান চলমান রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনেক সংস্থা কাজ করছে।

ধর্ষিতা জানান, বিল্লাল মিয়ার ঘরে নিয়ে তাকে দুই দিন আটকে রাখা হয়। বিল্লাল, রফিক ও নূর ধনসহ (ইউপি মেম্বার) আরও একজন তাকে নির্যাতন করে। মারপিট করে। সদর হাসপাতালে সোমবার পরীক্ষার জন্য দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার রিপোর্ট দেওয়ার কথা রয়েছে।

তিনি বলেন, আমি প্রথমেই বিষয়টি থানায় অবহিত করেছি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ইতোমধ্যে আমার সঙ্গে কথা বলেছেন।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম থেকে কোম্পানিতে কাজের সন্ধানে আসা এক তরুণীকে হবিগঞ্জের মাধবপুরে দুই দিন ঘরে আটকে রেখে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। অসুস্থ অবস্থায় ওই তরুণী হবিগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। গত ২৫ মার্চ সন্ধ্যায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে দরগা গেট এলাকায় একটি কোম্পানিতে যেতে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন ওই তরুণী।

এ সময় সিএনজি অটোরিকশাযোগে আসা ৩ যুবক ওই তরুণীকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে রিয়াজনগর গ্রামে যায়। সেখানে একটি ঘরে দুই দিন আটকে রেখে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে। পরে তরুণীকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে হাত-পা বেঁধে ফেলে রাখে। পথচারীদের সহযোগিতায় ওই তরুণীকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হয়। পরে তাকে সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।