মাথা গোঁজার ঠাঁই ছিলনা যাদের তাদের সন্তানরা দৃষ্টিনন্দন শিশুপার্ক পেয়ে মহাখুশি

0
169

আত্রাই (নওগাঁ) প্রতিনিধি: এক সময় যাদের আপন ঠিকানায় মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু হয়নি, নওগাঁর আত্রাইয়ে এখন আবাসনের সঙ্গে অবহেলিত সেই শিশুরা বিনোদনের কেন্দ্র হিসেবে পেয়েছে শিশুপার্ক। সেইসাথে নির্মল বাতাস আহরণের জন্য আশ্রয়ন কেন্দ্রের চারপাশে ফলজ ও বনজ বৃক্ষ রোপন করে তৈরী করা হয়েছে সবুজ বেষ্টনি।

প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়েছেন তাদের বাবা-মা। ভ’মিহীন ও গৃহহীন এসব পরিবারের শিশুদের খেলাধুলার সুযোগ সৃষ্টি ও মানসিক বিকাশের জন্য প্রশাসনের উদ্যোগে আবাসন এলাকাতেই নির্মাণ করা হয়েছে দৃষ্টিনন্দোন শিশুপার্ক।

সম্প্রতি আত্রাই উপজেলার শাহাগোলা ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের আবাসন এলাকায় শিশুদের জন্য এ শিশুপার্কটি গড়ে উঠেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, মুজিববর্ষে কেহ গৃহহীন থাকবেনা প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণার প্রেক্ষিতে আত্রাই উপজেলায় দুই ধাপে পাঁচ স্থানে ১৮৫ টি বাড়ী নির্মাণ করা হয়েছে। নির্মিতব্য বাড়ীগুলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর সুফলভোগীদের মাঝে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। বাড়ীপেয়ে সেখানে মনের আনন্দে বসবাস করছেন উপজেলার ভূমি ও গৃহহীন পরিবারগুলো। বর্তমান বছরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইকতেখারুল ইসলাম এর পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে রসুলপুর আশ্রয়ন কেন্দ্রে শিশুদের স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে শিশুপার্ক নির্মাণ করেন। একইসাথে রাস্তার দুইধার ও আশ্রয়ন কেন্দ্রের চারিধারে পাঁচ’শ ফলজ ও বনজ বৃক্ষ রোপন করেন। অপরদিকে মধুগুড়নই আশ্রয়ন কেন্দ্রে নদীরধারে গাইড ওয়াল তৈরী করে তাতে মাটি ভরাট দিয়ে সেখানেও শিশুদের বিনোদন দিতে দোলনা এবং নদীর নির্মল বাতাস আহরণের জন্য স্থায়ী বসবার যাইগা নির্মাণ করেন। এই কেন্দ্রেরও চারিধারে পাঁচ’শ ফলজ ও বনজ বৃক্ষ লাগিয়ে সেখানে সবুজ বেষ্টনি তৈরী করা হয়েছে।

সরেজমিনে মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারী) জানা যায়, আত্রাই-নওগাঁ আঞ্চলিক সড়কের রসুলপুর নামক স্থানে ১ নং খতিয়ানভুক্ত দুই দশমিক নব্বই একর উঁচু জমিতে দুই ধাপে আশ্রয়ন প্রকল্পের ৭৩ টি বাড়ী নির্মান করা রয়েছে। তাতে আনুমানিক তিন’শ মানুষ মনের আনন্দে স্বাচ্ছন্দে বসবাস করছেন। কেন্দ্রের পাশের্^ মাদ্রাসা, মসজিদ, কমিউনিটি ক্লিনিক, খোলা মাঠ রয়েছে। আশ্রয়ন কেন্দ্রের রাস্তায় ও চারিধারে পাঁচশত ফলজ ও বনজ বৃক্ষ রোপন করা রয়েছে। সেখানের শিশুপার্কে শিশুদের বসবার যাইগা, দোল খাবার দোলনা, স্লিপার, গোল চত্তর এবং ফুলের বাগান রয়েছে। এছারা কেন্দ্রের প্রবেশদ্বারে প্রকল্প সম্পর্কিত বিলবোর্ড দেয়া আছে।

অপরদিকে আত্রাই গোড় নদীর বুকচিরে গড়েওঠা মধুগুড়নই গ্রাম সংলগ্ন ১ নং খতিয়ানভুক্ত তিন দশমিক বিশ একর উঁচু জমিতে আশ্রয়ন প্রকল্পের ৮৪ টি বাড়ী নির্মান করা রয়েছে। তাতে আনুমানিক সারে তিন’শ মানুষ মনের আনন্দে বসবাস করছেন। কেন্দ্রের পাশের্^ মসজিদ,নদীর খোলা নির্মল হাওয়া গায়ে লাগানোর ব্যবস্থা আছে। আশ্রয়ন কেন্দ্রের রাস্তায় ও চারিধারে পাঁচশত ফলজ ও বনজ বৃক্ষ রোপন করা রয়েছে। সেখানের শিশুদের দোল খাবার দোলনা, নদীর নির্মল বাতাস আহরনের জন্য স্থায়ী আসন তৈরি রয়েছে। এছারা কেন্দ্রের প্রবেশদ্বারে প্রকল্পের তথ্য সম্বলিত বিলবোর্ড দেয়া আছে।

প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পাওয়া এক সুবিধাভোগী জানান, ‘ছেলে-মেয়েদের খেলাধুলা তো দূরে থাক, এক সময় তারা অন্যের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। এখানে জমি ও ঘর পেয়েছেন। সেই সাথে তার ছেলে-মেয়েরাও খেলাধূলার সুযোগ পেয়েছেন।’ এখানে শিশুপার্ক পেয়ে তারা বেজায় খুশি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইকতেখারুল ইসলাম বলেন, মুজিববর্ষে কেহ গৃহহীন থাকবেনা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষনা অনুযায়ী উপজেলার পাঁচ স্থানে একশত পঁচাশি বাড়ী নির্মাণ করে সুফলভোগী মানুষের নিকট বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। শিশুদের স্বাস্থ্য নিশ্চিত ও নির্মল বাতাস আহরনের জন্য রসুলপুর ও মধুগুরনই আশ্রয়ন কেন্দ্রে শিশুপার্ক এবং এক হাজার ফলজ ও বনজ বৃক্ষ রোপন করে প্রকল্প সম্পর্কিত বিলবোর্ড স্থাপন করা হয়েছে। আশ্রয়ন কেন্দ্রের সকল মানুষকে সরকারের দেওয়া বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার আওতায় আনা হয়েছে। এছাড়া পর্যায়ক্রমে গৃহ ও ভূমিহীন সকল মানুষকে এই সুবিধার আওতায় আনতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।