বানিয়াচংয়ে তালার চাবিকে কেন্দ্র করে মাদ্রাসা ছাত্র আকরাম হত্যার রহস্য উম্মোচন

0
116

নূরুজ্জামান ফারুকী,বিশেষ প্রতিনিধিঃ হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচংয়ে একটি চাবিকে কেন্দ্র করে মাদ্রাসা ছাত্র শিশু আকরাম খান (৯) হত্যাকান্ডের রহস্য উম্মোচন করলো বানিয়াচং থানা পুলিশ।
এই নৃশংস ঘটনায় একই মাদ্রাসার ৩ ছাত্রকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
নিহত শিশু আকরাম খান উপজেলার মক্রমপুর মরহুম সামায়ুন কবির হাফিজিয়া এতিমখানার ছাত্র এবং একই গ্রামের মৃত দৌলত খানের পুত্র।
আজ শনিবার (১৯ নভেম্বর) বিকেল ৪টায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন বানিয়াচং থানার (ওসি) অজয় চন্দ্র দেব।
তিনি জানান, গত ১৬ নভেম্বর মরহুম সামায়ুন কবির হাফিজিয়া এতিমখানার পার্শ্ববর্তী একটি পুকুরে ডুবন্ত নৌকার তলদেশ থেকে হাত-পা বাধা অবস্থায় আকরাম খানের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এর পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে তদন্তের নামে পুলিশ। তদন্তের এক পর্যায়ে পুলিশ জানতে পারে নিহত আকরাম খানের নিকট একটি চাবি ছিল। যেই চাবি দিয়ে এতিমখানার অনেক ছাত্রদের ট্রাংকের তালা খোলা যেত।
এছাড়াও মাদ্রাসার যে কারো কিছু চুরি হলেই সকলে আকরামকে সন্দেহ করতো। সেই সুত্রধরেই এগিয়ে যেতে থাকে স্থানীয় পুলিশ।

তদন্তের এক পর্যায়ে একই মাদ্রাসার ছাত্র এবং একই গ্রামের বাসিন্দা মস্তু মিয়ার পুত্র ফখরুল মিয়া (১৬), জুলহাস মিয়ার পুত্র ফয়েজ উদ্দিন (১৩) ও মহিবুর রহমানের পুত্র জাহেদ মিয়া (১৫) কে আটক করে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদের মুখে উল্লেখিতরা হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।
হত্যাকান্ডে জড়িত মাদ্রাসা ছাত্রদের বরাত দিয়ে (ওসি) জানান, হত্যাকান্ডের কিছুদিন পূর্বে ফখরুল মিয়ার ট্রাংক থেকে প্রথমে ৬০ টাকা ও পরে ৫০ টাকা চুরি হয়। সেই টাকা খোঁজাখুজি করে না পেয়ে ফখরুল মিয়া, জাহেদ মিয়া ও ফয়েজ উদ্দিন জানতে পারে আকরাম খানের নিকট একটি তালা খোলার চাবি রয়েছে যা দিয়ে অধিকাংশ ছাত্রের ট্রাংকের তালা খোলা যায়। এর পর থেকেই তাদের সন্দেহ হয় আকরাম খান তাদের টাকা চুরি করেছে। সন্দেহ থেকেই তাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে আকরামকে সুযোগ পেলে উপযুক্ত শিক্ষা দেয়া হবে বলে তারা পরিকল্পনা করে।
পরিকল্পান অনুযায়ী গত ১৬ নভেম্বর সকালে তারা কৌশলে সুযোগ বুঝে আকরাম খানকে মাদ্রাসার পেছনের একটি পুকুরের পাড়ে নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে তারা হত্যার উদ্দেশ্যে রশি দিয়ে তার হাত-পা বেঁধে ফেলে। এক পর্যায়ে আকরাম চিৎকার শুরু করলে তার মুখ চেপে ধরা হয়। এর পর ইট দিয়ে তার মাথায় একাধিক আঘাত করে। এতেও মৃত্যু নিশ্চিত না হওয়ায় আকরামকে ধরাধরি করে পুকুরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে পানিতে চুবিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে তারা। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর মরদেহ পানিতে ফেলে মাদ্রাসায় এসে ঘুমিয়ে পড়ে তারা। পরবর্তীতে বিকেলে আকরামকে খুজে পাওয়া না গেলে উল্লেখিতরা ভিকটিমকে খোঁজে বের করার অজুহাতে নৌকা সেচ করার জন্য সেই স্থানে যায় এবং ভিকটিমের হাত-পা বাঁধা অবস্থায় লাশ তারা ৩ জন মিলেই উদ্ধার করে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here