ফেঞ্চুগঞ্জ গ্যাসক্ষেত্রের ২নং কুপ থেকে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সঞ্চালন শুরু : প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকার তেল পাচার

    0
    355
    ফেঞ্চুগঞ্জ গ্যাসক্ষেত্রের ২নং কুপ থেকে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সঞ্চালন শুরু : প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকার তেল পাচার
    ফেঞ্চুগঞ্জ গ্যাসক্ষেত্রের ২নং কুপ থেকে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সঞ্চালন শুরু : প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকার তেল পাচার

    কুলাউড়া, ১৮ মে : মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায় অবস্থিত ফেঞ্চুগঞ্জ গ্যাসক্ষেত্রের দুই নং কুপ বন্ধ থাকার পর আবার গ্যাস উত্তোলন শুরু করেছে দেশীয় গ্যাস উত্তোলনকারী প্রতিষ্ঠান বাপেক্স। তবে অসাধু কর্মকর্তারা পাচার করছে লক্ষ লক্ষ টাকার তেল প্রতিদিন।
    গত বুধবার থেকে পরীক্ষা মূলক গ্যাস উত্তোলন শেষে আজ শুক্রবার দুপুর ফেঞ্চুগঞ্জ গ্যাসক্ষেত্রের দুই নং কুপ থেকে শুরু হয়েছে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সঞ্চালন। গ্যাস ক্ষেত্রের ডিলিং ইনচার্য রেজাউল করিম জানিয়েছেন দিনে গড়ে ১৫ মিলিয়ন ঘন ফুট গ্যাস  জাতীয় গ্রিডে সংযুক্ত হবে। পর্যায়ক্রমে তা ২০ মিলিয়ন ঘন ফুটে রূপান্তিরিত হবে। নতুন এ সঞ্চালনের মাধ্যমে  ফেঞ্চুগঞ্জ গ্যাস ক্ষেত্র থেকে প্রতিদিন প্রায় ৫৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে।
    ফেঞ্চুগঞ্জ গ্যাস ক্ষেত্রে বাপেক্স ২০০৪ সালে ফেঞ্চুগঞ্জ গ্যাস ফিল্ড ড্রিলিং করার পর ২০০৫ এবং ২০১১ সালে থেকে এই গ্যাস ফিল্ডের ৩নং কুপ থেকে ৩৬ এবং ৪নং কুপ থেকে ৪৭ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করে আসছে জাতীয় গ্রীডে। ১নং কুপে গ্যাস পাওয়া যায়নি। দুই নং কুপ থেকে কিছুদিন উত্তোলনের পর বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় দেড় বছর বন্ধ থাকার পর গত তিন মাস ধরে ২নং কুপে পুনরায় কাজ শুরু করে বাপেক্স। এসময় আনন্দের বন্যা বয়ে যাচ্ছে গ্যাস ফিল্ড  এলাকায়। করা হচ্ছে মিষ্টি বিতরন। বাপেক্স কর্মকর্তা রেজাউল করিম জানান, এই গ্যাস সংযোগের মধ্য দিয়ে দেশে গ্যাসের অনেক চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাপেক্সের এক কর্মচারী বলেন, এই গ্যাস কুপ থেকে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকার তেল পাচার করছে এক শ্রেণীর কর্মকর্তারা।

    কমলগঞ্জে কৃষকদের মধ্যে সার বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ

    কমলগঞ্জ, ১৮  মে : কমলগঞ্জে সারা দেশের মত বিনামূল্যে কৃষকদের নামে সার, বীজ ও নগদ অর্থ বিতরণ করা হলেও প্রকৃত অনেক কৃষকই সার পাননি বলে লিখিত অভিযোগ করেন বঞ্চিত কৃষকরা। গত ৫ মে আনুষ্ঠানিকভাবে কৃষকদের মাঝে সার, বীজ বিতরণ করেন জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ এম এ শহীদ।
    কৃষকদের অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শমশেরনগর ইউনিয়নের রঘুনাথপুর, নিত্যানন্দপুর, ভরতপুর ও হরিপুর গ্রামের প্রকৃত অনেক কৃষকের নামে কৃষি কার্ড করা হয়নি। অথচ প্রবাসে অবস্থান করেন এমন প্রবাসীদের নামে কৃষক কার্ড করে সম্প্রতি সরকারী বরাদ্দকৃত সার, বীজ প্রদান করা হয়েছে। এবং কৃষক কার্ড দেখানোর পর স্থানীয় ব্যাংকসমূহ থেকে তাদের নামে নগদ তিন শ টাকা হারেও প্রদান করা হয়। রঘুনাথপুর গ্রামের কৃষক মো. শাহানুর মিয়া, মো. মসুদ মিয়া, ভরতপুর গ্রামের কৃষক মো. রফিক মিয়া, রঘুনাথপুর গ্রামের হাজী মো. তওয়াহিদ মিয়া অভিযোগ করে বলেন, তারা নিজেরা ক্ষুদ্র কৃষক। সরকারের বিধি অনুযায়ী আমাদের নামে কৃষক কার্ড ইস্যু করে বিনা মূল্যে সারসহ কৃষি উপকরণ ও নগদ অর্থ বিতরণ করার কথা থাকলেও স্থানীয় ইউপি সদস্য তাজুদ আলী আমাদের নামে কৃষক কার্ড করেননি। খতিয়ে দেখা যায় ইউপি সদস্য কৃষক কার্ড ইস্যু করেছেন ভরতপুর গ্রামের দুবাই প্রবাসী সত্তার মিয়া ওরফে ছতই মিয়া, ওমান প্রবাসী ছমরু মিয়া, দুবাই প্রবাসী সজ্জাদ মিয়া, রঘুনাথপুর গ্রামের যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী মন্নান মিয়া ও দুবাই প্রবাসী শহীদ মিয়ার নামে। এসব প্রবাসীরা বিদেশে অবস্থান করলেও দেশে তাদের নামে কৃষক কার্ড ইস্যু করা হয়। অথচ তারা নিজেদের জমি থাকলেও বর্গা চাষীরা জমি চাষ করেন বলে আরও অভিযোগ করেন বঞ্চিত কৃষকরা।
    কৃষকরা আরও জানান, প্রকৃত কৃষক বিনা মূল্যের সার পায়নি কিন্তু অকৃষক সার পেয়ে বাজারের দোকানগুলোতে বিক্রি করেছেন। তাই সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক যথাবিহিত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগ করছেন তারা। তবে শমশেরনগর ইউপি সদস্য তাজুদ আলী বলেন, এ অভিযোগ সঠিক নয়। প্রকৃত কৃষকদের নামে কার্ড ইস্যু করা হয়েছে এবং কৃষকরাই সার পেয়েছে। ইউপি সদস্য আরও বলেন, সরকারের বরাদ্দের হারের উপর কৃষক কার্ড করতে হয়। ফলে সব কৃষককে কার্ডভুক্ত করা যায়নি।
    কমলগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ শামছুদ্দীন বলেন, বিগত ২০০৩ সনে কৃষক কার্ড করা হয়েছিল। সেই অনুসারে বিনা মূল্যের সার বিতরণ করা হয়। ইউপি সদস্যরা ওয়ার্ড ভিত্তিক কৃষকদের কার্ড তৈরী করেন। এখানে ভুল হওয়ার কথা নয়। তার পরও যেহেতু অভিযোগ হয়েছে সেহেতু তদন্ত করে বিহিত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, তিনি বর্তমানে সরকারী কাজে ঢাকা অবস্থান করছেন। কর্মস্থলে ফিরে বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে তিনি জানান।